ঘাসতোড়িয়া গ্রামের মালতী সিং। হাইস্কুলে পড়াশোনা সাকুল্যে এক বছরের। বৃন্দাবনপুরের বধূ অপর্ণা গোস্বামী অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছিলেন। ইস্কুলের সেই পড়াশোনা বিশেষ মনে পড়ে না আর। বাকি দিনগুলিতে তাঁরা শিখেছেন কী ভাবে পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে হয়। সেই মাটিতে দাঁড়াতে হয় নিজের পায়ে, মেরুদণ্ড সোজা করে। এখন মালতী, অপর্ণাদের একশো দিনের কাজের রোজগারের টাকা জমা পড়ে গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের মানবাজার থানার গোপালনগর শাখার অ্যাকাউন্টে। রবিবার তাঁরা শিখলেন নতুন একটা জিনিস— কী ভাবে নগদ ছাড়াই লেনদেন করতে পারেন তাঁদের সম্মানের রোজগার।
নাবার্ডের আর্থিক সহায়তায় গোপালনগর এলাকার কয়েকশো বাসিন্দাকে নিয়ে অর্থনৈতিক সাক্ষরতা এবং সচেতনতা শিবির হল রবিবার। বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের গোপালনগর শাখার ম্যানেজার শান্তিরঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের শাখায় ২০ হাজারেরও বেশি গ্রাহক রয়েছেন। তাঁরা সবাই ব্যাপারটা রপ্ত করে নিলে আমাদেরও কাজে গতি আসবে। তাঁদেরও আত্মবিশ্বাস বাড়বে।’’ এ দিন শিবিরে আসা গ্রাহকদের হাতে এটিএম কার্ড তুলে দেওয়া হয়। শেখানো হয় তার ব্যবহার, সতর্কতা। ডিজিটাল লেনদেনের হাতেখড়ি হয় গ্রাহকদের।
শিবিরে ব্যাঙ্কের রিজিওনাল ম্যানেজার তপন কুমার দে জানান, পুরুলিয়ায় ওই গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ৩০টি শাখা রয়েছে। সব মিলিয়ে গ্রাহক সংখ্যা এক লক্ষেরও বেশি। জানুয়ারির মধ্যে অন্তত ১৫টি শাখার গ্রাহকদের নিয়ে এই ধরণের শিবির হবে বলে তিনি জানান। ব্যাঙ্ককর্তাদের একাংশের দাবি, নোট বাতিলের পরে শহরের থেকে গ্রামের গ্রাহকেরা বেশি অসুবিধায় পড়েছেন। নগদ কারবারেই তাঁরা অভ্যস্ত। অনেকের এটিএম কার্ড নেই। প্রযুক্তির প্রসার ঘটালে সেই বাধাও পেরিয়ে যাওয়া যাবে ভেবে এই উদ্যোগ বলে তাঁরা জানান। এক ব্যাঙ্ককর্তা বলেন, ‘‘মোবাইল ফোন দিয়েই ব্যাঙ্কের অনেক কাজ সারা যায়। দু’-এক বার দেখাতেই সবাই শিখেও নিয়েছেন ব্যাপারগুলো।’’
এ দিনের শিবিরে উপস্থিত ছিলেন মানবাজার ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কবিতা মাহাতো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy