Advertisement
১১ মে ২০২৪

শীতলতম দিনে কাঁপল জেলা

মকরসংক্রান্তি বলে কথা। স্নান তো করতেই হবে। কিন্তু জলে নামতেই বুক কেঁপে যাচ্ছে সকলের!দিন তিনেক ধরে প্রবল শীতে কাবু জেলার মানুষের কাছে মকরস্নানই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। শনিবার ভোর ৫টায় দুবরাজপুরের একটি পুকুরের কনকনে জলে চোখ বন্ধ করে ঝাঁপাচ্ছিল তিন কিশোর।

সিউড়িতে শীতের আড্ডা। —তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

সিউড়িতে শীতের আড্ডা। —তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:২২
Share: Save:

মকরসংক্রান্তি বলে কথা। স্নান তো করতেই হবে। কিন্তু জলে নামতেই বুক কেঁপে যাচ্ছে সকলের!

দিন তিনেক ধরে প্রবল শীতে কাবু জেলার মানুষের কাছে মকরস্নানই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। শনিবার ভোর ৫টায় দুবরাজপুরের একটি পুকুরের কনকনে জলে চোখ বন্ধ করে ঝাঁপাচ্ছিল তিন কিশোর। স্নান সেরে উঠে কিছুতেই কাঁপুনি থামছিল না। পুকুরের পাড়ে খড়কুটো দিয়ে ‘বুড়িঘর’ তৈরি করে আগুনে নিজেদের সেঁকে তবে স্বস্তি পেল ওরা। এ দিন ভোরে জয়দেবে অজয়ে স্নানে আসা পুণ্যার্থীদের অবশ্য সেই সৌভাগ্য হয়নি। হাড় কাঁপানো ঠান্ডা জল যেন শরীর বাঁকিয়ে দিয়েছে, মত পুণ্যার্থীদের। আবহাওয়া দফতরের সূত্র অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত এ দিনই ছিল এই মরসুমে শীতলতম দিন। তাপমাত্রা নেমে এসেছিল ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। স্বস্তি একটাই, দিনভর ঠান্ডা হাওয়া চললেও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার বদলে এ দিন পরিচ্ছন্ন আকাশে সূর্যের দেখা মিলেছে।

তবে, এই মরসুমে শীতের শুরুটা হয়েছিল অনেকটা টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম সেশনের ব্যাটিংয়ের ধাঁচে। একেবারে খুচরো রান দিয়ে। সকাল সন্ধ্যা একটু শীত অনুভূত হলেও দিনভর কেমন একটা বসন্তকালীন আবহাওয়া যেন। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করেছে ১৩ ডিগ্রির আশপাশে। ব্যতিক্রম ছিল ১১-১৪ ডিসেম্বর। ওই সময় ১০-এর নীচে নেমেছিল তাপমাত্রা। কিন্তু তার পরেই শীত গায়েব। ভারী সোয়েটার, জ্যাকেট, লেপকম্বল জমিয়ে ব্যবহার করতে হবে কী হবে না— এই নিয়ে যখন বিস্তর আলোচনা, তখনই তিনি স্বমহিমায় ফিরে এলেন। গত বৃহস্পতিবার থেকেই তাপমাত্রার পারদ চড়চড় করে নেমেছে। শুক্রবার জেলার তাপমাত্রা নেমেছিল ৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। শনিবার এরও একধাপ নামল। স্বাভাবিকের থেকে যা প্রায় ৫ ডিগ্রি কম।

আরাম পেতে আগুন জ্বালিয়ে হাত সেঁকে নেওয়া, গরম চা, তেলেভাজা বা লেপ জড়িয়ে জড়োসড়ো হয়ে বিছানায় থাকার সুযোগ পেলে ছাড়ছেন না কেউ-ই। বাইরে বেরিয়ে স্বস্তি তত ক্ষণই, যখন রোদের তাপে শরীরটা সামান্য সেঁকে নেওয়ার সুযোগ থাকে। সন্ধ্যা নামার আগেই পাল্লা ভারী শীতের। তাতে অবশ্য অখুশি হওয়ার কারণ নেই। শীতকালে এমন শীতের জন্যই তো অপেক্ষা করেন সকলে। স্বাদ ফিরবে নলেন গুড়ের। আর পিঠেপুলির তো ভরা মরসুম। জমিয়ে খাওয়াদাওয়া করা যায়। অনেকেরই একটাই আক্ষেপ, ‘‘শীতটা জয়দেব মেলার আগে বা পরে পড়লে ভাল হতো।’’

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ঠান্ডা লাগা বা শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে কিছু রোগী জেলার বিভিন্ন হাসপাতালগুলিতে ভর্তি হলেও বছরের অন্যান্য সময়ের থেকে রোগ বা রোগী দুটোই এখন কম। এই শীত আরও সপ্তাহ দুয়েক থাকলে গম, পরে লাগানো সরষে এবং আলুচাষের পক্ষেও খুব ভাল হবে, বলছেন জেলা কৃষি কর্তারাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Winter Cold
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE