Advertisement
E-Paper

মাদক রুখতে তৎপর হোক পুলিশ, চায় জেলা

এ দিন সিউড়ির চাঁদমারি মাঠ  থেকে সার্কিট হাউস পর্যন্ত একটি বর্ণাঢ্য মিছিল হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৮ ০০:২২
বার্তা: আন্তর্জাতিক মাদক বিরোধী দিবসের অনুষ্ঠানে পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার সিউড়িতে। —নিজস্ব চিত্র।

বার্তা: আন্তর্জাতিক মাদক বিরোধী দিবসের অনুষ্ঠানে পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার সিউড়িতে। —নিজস্ব চিত্র।

মাদক-বিরোধী দিবসে মঙ্গলবার জেলায় নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। ‘মাদকের নেশা সর্বনাশা’— এই স্লোগান তুলেই দিনটি পালন করে জেলা পুলিশ ও আবগারি দফতর। সঙ্গী ছিল প্রশাসনও।

এ দিন সিউড়ির চাঁদমারি মাঠ থেকে সার্কিট হাউস পর্যন্ত একটি বর্ণাঢ্য মিছিল হয়। প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে তাতে সামিল হয় স্কুলপড়ুয়া, এনসিসি ক্যাডেট, রণ পা ও ছৌ শিল্পীরা। একই ভাবে মিছিল হয় দুবরাজপুরেও। দুবরাজপুর থানা থেকে পাওয়ারহাউস মোড় পর্যন্ত মাদক বিরোধী মিছিলে পুলিশ আবগারি কর্তাদের সঙ্গে ছিলেন পুরপ্রধান ও একাধিক কাউন্সিলরর। মিছিলে যোগ দিয়েছিল স্কুলের পড়ুয়ারাও। পাওয়ার হাউস মোড়ে একটি অনুষ্ঠানও হয়।

জেলাবাসীর একাংশের অভিযোগ, কয়েক বছর ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাদকের কেনাবেচা বেড়েছে। জেলাসদর সিউড়ি, দুবরাজপুরে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে তরুণ সমাজের অনেকেই। আর্থিক ভাবে শেষ হয়ে যাচ্ছে তাদের পরিবারগুলিও। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অপরাধ।

এ সবের জন্য জেলায় এক সময়ে বেআইনি পোস্ত চাষে শীর্ষে থাকা দুবরাজপুর ও খয়রাশোল ব্লকের দিকে আঙুল উঠেছে। মাদক কারবারে রমরমার নেপথ্যে ওই সব এলাকাই ছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, গত দু’বছর এলাকায় পোস্ত চাষ হয়নি ঠিকই, কিন্তু তার আগে ঢালাও হয়েছে। প্রশাসন ও পুলিশের একাংশ জানায়, এক দশক ধরে পোস্ত চাষে বিরাম হয় ২০১১, ২০১২ সালে। মাদক বিরোধী আইনে কিছু মামলা এবং প্রশাসনের নজরদারি জোরালো হয়। দু’বছর বন্ধ ছিল পোস্ত চাষ। অভিযোগ, ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ফের ঢালাও পোস্ত চাষ হয়। সে জন্যই দুবরাজপুর ও খয়রাশোল এলাকায় এখনও প্রচুর পরিমাণে পোস্তর আঠা মজুত রয়েছে বলে আশঙ্কা। পুলিশকের একাংশের সন্দেহ, বাইরে থেকে আসা ড্রাগ মাফিয়াদের কাছ থেকে সেই আঠার সঙ্গে রাসায়নিক মিশিয়ে ‘ব্রাউন সুগার’ তৈরির কৌশল রপ্ত করেছে ফেলেছেন এলাকায় পোস্ত চাষের সঙ্গে জড়িত লোকেরা। মোটা টাকা মুনাফার জন্য তরুণ সমাজকে মাদকে আসক্ত করতে বিশাল চক্র কাজ করছে।

এলাকাবাসীর বক্তব্য, এ ভাবে এক দিন সাড়ম্বরে মাদক বিরোধী দিবস পালন না করে পুলিশ ও আবগারি দফতর আরও তৎপর হলেই সমস্যা মিটতে পারে। পুলিশকর্তারা বলছেন— মাদক কারবার বন্ধের চেষ্টা চলছে। সেই কারণে মাঝেমধ্যেই পোস্তর আঠা, ব্রাউন সুগার ও খোল উদ্ধারের ঘটনা ঘটছে। তবে মাদক কারবার পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। আবগারি দফতরের বক্তব্য, তাদের শক্তি সীমিত। মূলত পুলিশের উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। তবে যখনই খবর পাওয়া যায়, তল্লাশি অভিযান চলে।

সিউডির বাসিন্দাদের একাংসের নালিশ, ৩-৪ বছর ধরে শহরে ঢালাও মাদক কারবার চলছে। স্কুল-কলেজের পড়ুয়া থেকে সমাজবিরোধী— সকলেই নেশার কবলে। মাদকের জন্য চুরি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ বাড়ছে। একই অবস্থা দুবরাজপুরেও। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, পুলিশ ইচ্ছা করলেই কারবারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে পারে। পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে জানান, দুবরাজপুরে এই মূহূর্তে মাদক আসক্তের সংখ্যা কমবেশি ৫০। মাদক রুখতে সাধারণ মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে।

বীরভূম জেলা পুলিশের পক্ষে বোলপুর ও শান্তিনিকেতন থানার উদ্যোগে মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাদক বিরোধী দিবস পালিত হল। এ দিন সকালে ‘মাদক হঠাও, সমাজ বাঁচাও’ এই বার্তা দিয়ে বোলপুর ডাকবাংলো ময়দান থেকে শান্তিনিকেতন রতনপল্লি মাঠ পর্যন্ত পদযাত্রা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বোলপুর) অম্লানকুসুম ঘোষ বোলপুর থানা, শান্তিনিকেতন থানা, বীরভূম জেলা পরিষদের কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও বোলপুর নৃত্যনিকেতন ড্যান্স গ্রুপ অ্যান্ড স্কুল, পেইন স্টেকিং ক্যারাটে গ্রুপ, ছন্নছাড়া নাট্য সংস্থা, বিভিন্ন ক্লাব ও স্কুলের পড়ুয়ারা এই পদযাত্রায় যোগ দেয়। মুখোশ নৃত্য এবং ড্রাগ বিরোধী পথ নাটক ‘মৃত্যু’ পরিবেশিত হয়।

Drugs Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy