Advertisement
E-Paper

নিজে করুন শৌচালয়, মিলবে টাকা

যে কাজের জন্য কমিশনার এই জেলাকে ছ’মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে গিয়েছেন। তবে ছ’বছরে যেখানে অর্ধেকেরও কম পথে এগোনো গিয়েছে, ছ’মাসে সেখানে কাজ সম্পূর্ণ শেষ করা যে দুরূহ তা মানছেন জেলা প্রশাসনের কর্তাদের অনেকেই।

প্রশান্ত পাল

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৭:৩০
Share
Save

শুধু স্যানিটারি মার্ট বা ঠিকাদার সংস্থাই নয়, মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পের সুবিধা প্রাপকেরা চাইলে নিজেরাই পছন্দমতো শৌচাগার তৈরি করতে পারবেন। এই প্রস্তাবকে সামনে রেখেই পুরুলিয়া জেলাকে দ্রুত নির্মল করতে চাইছে জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি জেলায় এসে এই পথ দেখান রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার।

এখনও এই প্রকল্পে পর্যন্ত রাজ্যের নিরিখে পুরুলিয়ার অগ্রগতি ঠিক অর্ধেক। কমিশনার জানিয়েছেন, রাজ্যে এই প্রকল্পে অগ্রগতির হার ৯০ শতাংশ, যেখানে পুরুলিয়ার অগ্রগতি মাত্র ৪৫ শতাংশ। ২০১২-‘১৩ আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে জেলায় কাজ শুরু হলেও, এখনও পর্যন্ত পুরুলিয়ায় ২ লক্ষ ৪০ হাজার ১৫১টি শৌচাগার তৈরি হয়েছে। জেলার ২০টি ব্লকে এখনও ২ লক্ষ ৯৮ হাজার ৮৭০টি শৌচাগার গড়তে হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

যে কাজের জন্য কমিশনার এই জেলাকে ছ’মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে গিয়েছেন। তবে ছ’বছরে যেখানে অর্ধেকেরও কম পথে এগোনো গিয়েছে, ছ’মাসে সেখানে কাজ সম্পূর্ণ শেষ করা যে দুরূহ তা মানছেন জেলা প্রশাসনের কর্তাদের অনেকেই।

এই বিষয়টি মাথায় রেখেই সম্প্রতি জেলায় এসে এই প্রকল্পের একটি অনুষ্ঠানে কমিশনার নিজেই বলেছেন, ‘‘দরজা খুলে দিন, মানুষ যেমন চাইছেন, সে ভাবেই শৌচাগার তৈরি হোক। মানুষকে এ কাজে উৎসাহীত করতে হবে।’’

পুরুলিয়াতে গ্রামে গ্রামে শৌচাগার গড়ার কাজ বেশির ভাগ জায়গাতেই ঠিকাদার সংস্থা বা স্যানিটারি মার্ট করছে।

কোন ব্লকের কী হাল

• আড়শা ৪০ শতাংশ

• বাঘমুণ্ডি ৫৮ শতাংশ

• বলরামপুর ৪৪ শতাংশ

• বরাবাজার ৩৮ শতাংশ

• হুড়া ৪৬ শতাংশ

• জয়পুর ২৯ শতাংশ

• ঝালদা ১ ৪৪ শতাংশ

• ঝালদা ২ ২৫ শতাংশ

• মানবাজার ১ ৩১ শতাংশ

• মানবাজার ২ ৪০ শতাংশ

• পুঞ্চা ৪৪ শতাংশ

• পুরুলিয়া ১ ৪২ শতাংশ

• পুরুলিয়া ২ ১৭ শতাংশ

• রঘুনাথপুর ১ ৬৬ শতাংশ

• রঘুনাথপুর ২ ৮৮ শতাংশ

• বান্দোয়ান ২১ শতাংশ

• কাশীপুর ৬৮ শতাংশ

• নিতুড়িয়া ৬২ শতাংশ

• সাঁতুড়ি ৪৫ শতাংশ

• পাড়া ৪৭ শতাংশ।

তথ্য সূত্র: জেলা পরিষদ

যদিও অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) অরিন্দম দত্ত জানিয়েছেন, এই জেলায় বিগত আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে সুবিধা প্রাপকদের দু’হাজারেরও বেশি মানুষ নিজেরা টাকা ঢেলে শৌচাগার তৈরি করেছেন। বর্তমান আর্থিক বছরে সেই সংখ্যাটা অবশ্য কম (৭৮)।

কমিশনার উল্লেখ করেন, ‘‘কোচবিহারে প্রত্যেকে নিজেদের শৌচাগার নিজেরাই বানিয়েছেন। মালদহের বড় অংশ জুড়ে এ ভাবেই কাজ হয়েছে। দিব্যেন্দুবাবু বলেন, ‘‘সরকারি সাহায্যের সঙ্গে কেউ নিজের অর্থ মিশিয়ে শৌচাগারও স্নানের ঘর করে নিতে পারেন। প্রশাসন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে প্রকল্পে যে টাকা তাঁর প্রাপ্য, সেই টাকা দিয়ে দেবে।’’

কী ভাবে একজন সুবিধা প্রাপক এই প্রকল্পে নিজের খরচে শৌচাগার বানাবেন এবং তারপরে টাকা ফেরত পাবেন?

জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘প্রকল্পের উপভোক্তা নিজেই শৌচাগার তৈরি করে প্রশাসনকে জানালে আমরা সরজমিনে কাজ দেখার পরে তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা দিয়ে দেব। এই প্রকল্পে সরকারি বরাদ্দ রয়েছে দশ হাজার টাকা।’’

অরিন্দমবাবু জানান, এই প্রকল্পে যিনি সুবিধা পাবেন, তিনি প্রথমে বিডিও-র কাছে তিনি নিজে শৌচাগার বানাতে চান বলে আবেদন করবেন। বিডিও সেই আবেদন মঞ্জুর করলে প্রশাসনের প্রতিনিধি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে জমি রয়েছে কি না তা দেখে নেবেন। কী ভাবে শৌচাগার বানাতে হবে তাও বলে দেবেন। শৌচাগার তৈরি হয়ে গেলে ওই ব্যক্তি প্রশাসনকে জানালে তা পরিদর্শন করে টাকা দেওয়া হবে।

Toilet Mission Nirmal Bangla মিশন নির্মল বাংলা District Administration

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}