বছর পাঁচেক আগে জলপ্রকল্প তৈরি হয়েছিল। সে সময় পাইপলাইন এসেছিল গ্রামে। সবাই ভেবেছিলেন জল এল বলে। কিন্তু অন্য গ্রামে জল গেলেও ভামুরিয়া পঞ্চায়েতের তিনটি গ্রামে জল আর আসেনি। পাঁচ বছরের টানা অপেক্ষাতেও না।
এ দিকে, এ বছর দাবদাহে শুকিয়েছে গ্রামের কুঁয়ো। জলস্তর নেমে যাওয়ায় নলকূপ থেকেও জল উঠছে না। নিতুড়িয়ার কয়লাখনি অঞ্চলের আসনমণি, আলকুশা, এবং কুইরিপাড়া গ্রামে সঙ্কট এখন চরমে। বাসিন্দারা সম্প্রতি স্থানীয় ব্লক প্রশাসন এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কাছে আবেদন করেছেন। তবে চলতি গ্রীষ্মে ওই তিনটি গ্রামে প্রকল্পের জল পৌঁছনোর ব্যাপারে আশার কথা শোনাতে পারেনি কেউই।
কয়লাখনি অঞ্চলে এমনিতেই সহজে জলস্তর মেলে না। তাই জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতর বিভিন্ন এলাকায় জল সরবরাহ করে। সেই জল যেখানে পৌঁছয় না, সেখানকার বাসিন্দারা প্রায় প্রতি বছর গরমের সময় সমস্যায় পড়েন। গত বছর জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী নিতুড়িয়া এলাকায় জল সঙ্কটের সমাধান করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই উদ্যোগ এখনও বিশ বাঁও জলে।
এই পরিস্থিতিতে পাইপলাইন থাকা সত্ত্বেও জল না মেলায় ক্ষোভ আরও বেড়েছে ভামুড়িয়ার ওই তিনটি গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দা তাপস চট্টোপাধ্যায়, বিশু মণ্ডল, প্রকাশ মাজিরা বলেন, ‘‘টানা প্রায় ন’মাস বৃষ্টি না হওয়ায় জলের স্তর হু হু করে নেমেছে। তিনটি গ্রামেই জলের জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দা জিতেন মাজি বলেন, ‘‘জলই যদি না এল তাহলে লোক দেখানো পাইপলাইন পেতে কী লাভ হল!’’
কিন্তু পাঁচ বছর ধরে কেন আটকে রয়েছে প্রকল্পের জল? জনস্বাস্থ্য ও কারিগরী দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্প চালু হওয়ার সময় পুরো পঞ্চায়েত এলাকাতেই জল সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ওই গ্রামগুলি প্রকল্প এলাকার এক প্রান্তে রয়েছে। উঁচুও অনেক। দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, প্রকল্পের রিজার্ভার থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ওই গ্রাম তিনটিতে যখন জল পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হল, দেখা গেল অত উঁচুতে ওঠার মতো জলের তোড় নেই। তাঁর অভিযোগ, নিয়ম ভেঙে এ দিকে আগের কয়েকটি গ্রামের কিছু বাসিন্দা পাইপলাইন থেকে বেআইনি ভাবে লুকিয়ে চুরিয়ে বাড়িতে জলের সংযোগ নিয়ে যাওয়ায় জলের তোড় আরও কমে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শুধু ওই তিনটি গ্রামের জন্য নতুন পাম্প এবং ছোট রিজার্ভার তৈরি করে জল সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই আধিকারিক জানান, ইতিমধ্যেই তিনটি গ্রামের জন্য আলাদা সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ার প্রাথমিক কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে এই গ্রীষ্ম তো দূর অস্ত্, চলতি বছরেও গ্রামে জল পৌঁছনোর সম্ভাবনা নেই বলে দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy