Advertisement
২৪ মে ২০২৪

ফাইনালে হোঁচট, কিন্তু প্রশংসা কুড়োচ্ছে পুলিশ

সেমি ফাইনাল ম্যাচ খুব ভালভাবেই জিতেছিল পুলিশ-প্রশাসন। ফাইনালে কিন্তু হোঁচট খেতেই হল। কালীপুজোর রাতে ছিল টুকটাক। বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু শব্দবাজি ফাটায় উপদ্রব বলতে যা বোঝায়, সেটা এ বার পোহাতে হয়নি পুরুলিয়ার আম জনতাকে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৬ ০২:২৭
Share: Save:

সেমি ফাইনাল ম্যাচ খুব ভালভাবেই জিতেছিল পুলিশ-প্রশাসন। ফাইনালে কিন্তু হোঁচট খেতেই হল।

কালীপুজোর রাতে ছিল টুকটাক। বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু শব্দবাজি ফাটায় উপদ্রব বলতে যা বোঝায়, সেটা এ বার পোহাতে হয়নি পুরুলিয়ার আম জনতাকে। তবে, রবিবার, দিওয়ালির রাতে কিছুটা হলেও শব্দবাজির উপদ্রবে ভুগতে হয়েছে মানুষকে। কমবেশি জেলার সব এলাকাতেই শব্দবাজি ফাটলেও তার দাপট বেশি ছিল পুরুলিয়া শহর ও আদ্রায়। তা সত্ত্বেও সামগ্রিক ভাবে গতবারের চেয়ে এ বছর কালীপুজো ও দীপাবলিতে শব্দবাজির প্রকোপ অনেকটাই কম বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দারা। এর জন্য পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকার প্রশংসা শোনা গিয়েছে তাঁদের মুখে। পুলিশ জানিয়েছে, নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানোর বিষয়ে গত দু’দিনে থানায় অভিযোগও হয়নি।

দুর্গাপুজোর সময় থেকে নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রিতে ধরপাকড় শুরু হওয়ায় এ বার কালীপুজো ও দীপাবলিতে শব্দবাজির উপদ্রব অনেকটাই কমবে বলে আশাবাদী ছিল পুলিশ। কালীপুজোর রাতে শব্দবাজি কার্যত ফাটেনি বললেই চলে। কিন্তু ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা পুরুলিয়ায় দিওয়ালির রাতে শব্দবাজি ফাটানোর চল থাকায় বাসিন্দাদের একাংশের আশঙ্কা ছিল, রবিবার রাতে কান ফাটানো আওয়াজের হাত থেকে রেহাই মিলবে না। সেই আশঙ্কা যে বড় অমূলক ছিল না, তা মালুম হয়েছে রাতের দিকে পুরুলিয়া ও আদ্রা শহর ঘুরেই। তবে শব্দবাজি ফেটেছে সেই-সব এলাকায়, যেখানে মূলত হিন্দিভাষী পরিবারের বাস। পুরুলিয়া শহরের রাঁচি রোড, বরাকর রোড এলাকায় চকলেটে বোমের মতো বিকট আওয়াজের বাজি ভালেই ফেটেছে। বাদ ছিল না বিটি সরকার রোড, পিএন ঘোষ স্ট্রিট, ওল্ড মানবাজার রোড, চাঁইবাসা রোডের মতো এলাকা। আদ্রা শহরে মূলত শব্দবাজি ফেটেছে পুরানো বাজার এলাকায়।

তবে ঘটনা হল, আগে দিওয়ালিতে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিকট শব্দে শব্দবাজি ফাটানোর চল ছিল। এ বার সেই প্রবণতাতেও কিছুটা রাশ টানা সম্ভব হয়েছে। শব্দবাজি ফাটতে দেখা শোনা গিয়েছে রাত আটটার কিছু পর থেকে। আর ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই বাজি ফাটানোর পালা শেষ হয়েছে। রাত দশটা নাগাদ পুরুলিয়া শহরের রাঁচি রোড এলাকায় গিয়ে দেখা গিছে, ভাল সংখ্যাতেই শব্দবাজি ফাটছে। তবে নিজের নিজের বাড়ির ছাদ থেকেই বাজি ফাটিয়েছেন বাসিন্দারা। আগের মতো রাস্তায় নেমে চকলেট ফাটিয়ে পথচারীদের সমস্যায় ফেলার দিকে যাননি তাঁরা। তবে, আদ্রার বড়বাজারে রাস্তার মধ্যে বাজি ফাটানোর কয়েকটি ঘটনা চোখে পড়েছে।

ঘটনা হল, নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানোর বিরুদ্ধে পুলিশ-প্রশাসনের ধারাবাহিক প্রচার, প্রয়োজনে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া, শব্দবাজি বিক্রেতাকে গ্রেফতার— এই সব কারণেই এ বার শব্দাসুরের দাপুট অনেকটা কমেছে পুরুলিয়ায়। পুরুলিয়া শহরেও যে যেখানে যেখানে চকলেট ফেটেছে, ওই এলাকায় বাজি এসেছে মূলত ঝা়ড়খণ্ড থেকে। পুরুলিয়া ও আদ্রার অনেক বাসিন্দাই জানিয়েছেন, এ বার খোলা বাজারে চকলেট, দোদমার মতো শব্দবাজি বিক্রি অনেকটাই কম থাকায় তার উপদ্রবও তেমন মালুম হয়নি।

পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা, সমাজকর্মী আবু সুফিয়ানের মতে, ‘‘পুলিশের চাপে নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রিতে কিছুটা লাগাম পড়েছে। পাশাপাশি অনেকেই ওই শব্দবাজি ফাটানোর ক্ষেত্রে সচেতনও হয়েছেন। তবে এটাও ঠিক, নিয়ম ভাঙার একটা প্রবণতা অনেকের মধ্যেই থাকে। সেই কারণেই দিওয়ালির রাতে কিছুটা হলেও শব্দদৈত্যর প্রকোপ টের পাওয়া গিয়েছে।” এই শহরের বাসিন্দা বসন্ত খেড়িয়া, মহেশ কাটারুকারাও বলছেন, ‘‘আগে দিওয়ালিতে শব্দবাজি ফাটালেও এখন আলোর বাজির দিকে ঝোঁক বাড়ছে। শব্দবাজির ফল সম্পর্কে মানুষ সচেতন হচ্ছেন। আমাদের পরিচিত অনেকেই ধীরেধীরে শব্দবাজি থেকে সরে আসছেন।’’

জেলা পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, ‘‘কালীপুজোর দিনে না ফাটলেও দীপাবলিতে অল্পবিস্তর শব্দবাজি ফেটেছে বলেছে শুনেছি। তবে কোনও অভিযোগ পাইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Diwali Sound Pollution Police Failed
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE