আবেদন: বন্ধের বিরুদ্ধে তৃণমূলের মিছিল। বোলপুরে। নিজস্ব চিত্র
বন্ধে ঝামেলা করতে পড়শি রাজ্যের কেউ লুকিয়ে নেই তো শহরে— তা খুঁজতে মঙ্গলবার সিউড়ির হোটেল, লজে হানা দিল পুলিশ। একই কাণ্ড ঘটেছে রামপুরহাট, নলহাটি, তারাপীঠেও। স্থানীয় সূত্রে খবর, পুলিশকর্মীরা খুঁটিয়ে দেখেন বিভিন্ন হোটেলের আবাসিকদের নাম-ঠিকানার রেজিস্টার। তালা খুলে দেখা হয় বন্ধ ঘরও।
বিজেপির অভিযোগ, পুলিশ অতি-তৎপর হয়েছে। বিভিন্ন হোটেল, লজে থাকা পড়শি রাজ্য, বিশেষত ঝাড়খণ্ডের পর্যটকদের রাতের মধ্যে চলে যেতে বলা হচ্ছে। শাসকদলের নির্দেশে থানার ওসি-রা ব্যবসায়ীদের হুমকি দিচ্ছেন, আগামী কাল যাতে তাঁরা ব্যবসা বন্ধ না রাখেন। বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘দু’দিন আগেই তো বামপন্থীদের ডাকা বন্ধ ছিল, তখন তো পুলিশকে এক তৎপর হতে দেখিনি। এ ভাবে বিজেপিকে দমিয়ে রাখা যাবে না। আমরা মানুষের কাছে আবেদন রেখেছি, শাসকদলের চাপের মুখে নতিস্বীকার না করতে। আশা করি সফল হব।’’
এ দিন যে হোটেলগুলিতে তল্লাশি করা হয়েছে, তাঁদের মালিকপক্ষের বক্তব্য কী? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক হোটেল মালিক বলেন, ‘‘পুলিশ মুখে বলেছিল, সামনে পুজো সে জন্য সতর্ক থাকতেই খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ওঁরা হোটেলের রেজিস্টার পরীক্ষা করেন। সিসিটিভি ফুটেজ দেখেন। কয়েকটি বন্ধ ধর খুলেও দেখাতে হয়।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘পুজোর কথা বলা হচ্ছে বটে, কিন্তু কালকের বন্ধটাই আসল কারণ!’’
জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘কোনও অবাঞ্ছিত ঘটনা না ঘটে। আমাদের সতর্ক থাকতেই হবে। সে জন্যই হোটেলে তল্লাশি চলেছে, বসেছে নাকা।’’ থানায় ডেকে ব্যবসা খুলে রাখার নির্দেশ দেওযার অভিযোগ কেন উঠছে? জেলা পুলিশের ওই কর্তার দাবি, ‘‘পুলিশ মোটেই বন্ধের বিরোধিতা করার কথা বলেনি। শুধু বলা হয়েছে, জোর করা হলে যেন কেউ মাথা নত না করেন। প্রয়োজনে পুলিশ তাঁদের পাশে থাকবে।’’
সিউড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কিসান পালের বক্তব্য, ‘‘অন্য বন্ধ নিয়ে এত চিন্তা ছিল না। আগামী কালের বন্ধ ঘিরে আমরা আশঙ্কিত। সকলের একটাই প্রশ্ন— কী করা উচিত? আমি বলেছি, যাঁর যা মনে হবে যেন তা-ই করেন।’’
তৃণমূল কি পুলিশকে বন্ধ বানচাল করার নির্দেশ দিয়েছে? জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলছেন, ‘‘কাউকে কিছু বলতে হবে না। মানুষ নিজেই এই বন্ধ বয়কট করবেন। কারণ, এত দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্ধের কুফল সম্পর্কে বাংলার মানুষকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন।’’
এ দিন বিকেলের দিকে বন্ধের বিরোধিতায় মিছিল করে তৃণমূল। নেতৃত্বে ছিলেন দলের সিউড়ি শহর সভাপতি অভিজিৎ মজুমদার। একই ভাবে বিজেপির পক্ষ থেকেও সিউড়ি, দুবরাজপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় বন্ধকে সমর্থন করার বার্তা দিতে মিছিল করা হয়।
বন্ধের বিরুদ্ধে এ দিন বিকেলে পদযাত্রা করে বোলপুর শহর তৃণমূল কংগ্রেস। ইলামবাজারেও ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটি পদযাত্রা করা হয়। একই ভাবে বন্ধ-বিরোধী মিছিল হয় রামপুরহাটে। বোলপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবকুমার দত্ত এবং সম্পাদক শ্যামসুন্দর কোঁয়ার জানান, বন্ধের জন্য অনেক সময় বাস-ট্রেনের সমস্যা থাকায় মক্কেলদের আদালতে আসতে অসুবিধা হয়। বার অ্যাসোসিয়েশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যে দলই বন্ধের ডাক দিক না কেন, তাঁরা কাজ বন্ধ রাখবেন। একমত ল’ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশনও। বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বিচারককে আর্জি জানানো হয়েছে, বুধবার কারও হাজিরা বা শুনানির তারিখ থাকলে, তা যেন পিছোন হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy