Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রক্তের ঘাটতি মেটাতে উদ্যোগী বাঁকুড়া পুলিশ

সম্প্রতি রাজ্যের নির্দেশ এসেছে। তবে বাঁকুড়ায় কাজটা শুরু হয়ে গিয়েছিল আগেই।রক্তদান শিবিরগুলি ক্যালেন্ডার ধরেই হয়— মূলত লাল রঙের তারিখগুলিতে। স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস বা সুভাষচন্দ্র বসু, স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনের মতো বিশেষ বিশেষ দিনে পাড়ায় পাড়ায় রক্তদান শিবিরের ধুম পড়ে যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৭ ০২:০২
Share: Save:

সম্প্রতি রাজ্যের নির্দেশ এসেছে। তবে বাঁকুড়ায় কাজটা শুরু হয়ে গিয়েছিল আগেই।

রক্তদান শিবিরগুলি ক্যালেন্ডার ধরেই হয়— মূলত লাল রঙের তারিখগুলিতে। স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস বা সুভাষচন্দ্র বসু, স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনের মতো বিশেষ বিশেষ দিনে পাড়ায় পাড়ায় রক্তদান শিবিরের ধুম পড়ে যায়। কিন্তু এর ফলে যেটা হয়, বছরের একটা সময়ে ব্লাজ ব্যাঙ্কের রেফ্রিজারেটর উপচে যাওয়ার জোগাড় হয়। অন্য সময়ে হাহাকার। পরিস্থিতি সবচেয়ে কঠিন হয় গরমকালে। এই সমস্ত ভেবে রক্তাদানের জন্য নির্দিষ্ট ক্যালেন্ডার তৈরির কথা ভাবনা চিন্তা শুরু করেছে রাজ্য সরকার। চলতি আর্থিক বছর থেকে এই ভাবে রক্তদান শিবির করার জন্য জেলায় জেলায় নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।

এ দিকে বাঁকুড়া পুলিশ এই কাজটাই করে আসছে গত নভেম্বর থেকে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে গঙ্গাজলঘাটি, ওন্দা, শালতোড়া, পাত্রসায়র থানায় সেই ক্যালেন্ডার ধরে বেশ কিছু রক্তদান শিবির হয়ে গিয়েছে। বাঁকুড়া মেডিক্যালের ব্লাডব্যাঙ্ক সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রতি মাসে বাঁকুড়া পুলিশের কাছ থেকে প্রায় ৩০০ ইউনিট রক্ত মিলছে। এতে ব্লাড ব্যাংকে রক্তের সংকট কেটে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক থাকছে।

আরও পড়ুন: মানুষ চাইলে গ্রানাইট হাব

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “সারা বছর বাঁকুড়ার ব্লাড ব্যাঙ্ক সচল রাখাই আমাদের লক্ষ্য। তাই জেলার ২৩টি থানাকেই ক্যালেন্ডার বানিয়ে রুটিন মাফিক রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে বলা হয়েছে।” পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে শিবিরে গ্রামবাসীও রক্তদান করছেন।

ঘটনা হল বাঁকুড়া মেডিক্যালে দৈনিক রক্তের চাহিদা কমবেশি ৭০ ইউনিট। মাসে অন্তত ৩৯২ জন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু এই হাসপাতাল থেকে রক্ত নেয়। ফলে প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হয় ওই হাসপাতালে। বিশেষ বিশেষ দিনে অনেক রক্তদান শিবির হওয়ায় প্রচুর রক্ত এসে জমে। চাহিদার তুলনায় সেটা অনেক বেশি। কিন্তু রক্তের এক একটি ইউনিট ৩৫ দিন সংরক্ষণ করে রাখা যায়। আবার গরমের সময়ে দেখা দেয় হাহাকার। এই পুরো ব্যাপারটায় ভারসাম্য আনতেই উদ্যোগী হয়েছে পুলিশ। পুলিশ সুপার বলেন, “শিবির শুরু করার আগে ব্লাড ব্যাঙ্কের সঙ্গে আমরা কথা বলে কত ইউনিট রক্ত প্রয়োজন তা জেনে নিই।”

বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, “বাঁকুড়া পুলিশ যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে হাসপাতালের অনেকটাই সুবিধা হচ্ছে। এতে রক্তের অপচয় যেমন কমছে তেমনই ব্লাড ব্যাঙ্কও রক্তের সঙ্কটে ভুগছে না।” সারা বছর রক্তের জোগান ঠিক রাখতে রুটিন মাফিক ক্যাম্প করার প্রয়োজনীয়তা বুঝেছে রক্তদানের সঙ্গে জড়িত জেলার সংগঠনগুলিও। বাঁকুড়া ভলেন্টিয়ারি ব্লাড ডোনার্স সোসাইটির সম্পাদক বিপ্রদাস মিদ্যা ও বড়জোড়া ব্লক ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কাঞ্চন বীদ বলেন, “সারা বছর রক্তের জোগান স্বাভাবিক রাখতে রুটিন করে রক্তদান শিবির করছি আমরা।”

এ বারের গরমকালে তাই ছবিটা বেশ কিছুটা বদলাতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Blood Shortage Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE