Advertisement
২১ মে ২০২৪
Corona

নিয়মের গেরোয় পড়ে শিক্ষক ঘাটতির শঙ্কা

করোনা-পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বন্ধ রাখার পরে, উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছেন সমস্ত শিক্ষক সংগঠনই।

বিষ্ণুপুরের একটি স্কুল জীবাণুমুক্ত করছেন পুরকর্মীরা। ছবি: শুভ্র মিত্র।

বিষ্ণুপুরের একটি স্কুল জীবাণুমুক্ত করছেন পুরকর্মীরা। ছবি: শুভ্র মিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:৩৫
Share: Save:

করোনা-পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বন্ধ রাখার পরে, উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছেন সমস্ত শিক্ষক সংগঠনই। সবাই এক বাক্যে জানাচ্ছেন, এ বার স্কুল খোলা প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। তবে রাজ্য শিক্ষা দফতরের বেঁধে দেওয়া কোভিড সতর্কতা বিধি স্কুলগুলির সীমিত পরিকাঠামোয় কতখানি মানা সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলি।

বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-র বাঁকুড়া জেলা সম্পাদিকা অস্মিতা দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘গত কয়েকমাস ধরে টানা স্কুল বন্ধে পড়ুয়াদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। তাই আমরা স্কুল খোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। তবে নবম থেকে দ্বাদশ এবং মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে চলা পড়ুয়া-সহ পাঁচটি ইউনিটকে কোভিড বিধি মেনে ক্লাস করানো যথেষ্ট সমস্যার।’’ তাঁর মতে, একটি বেঞ্চে দু’জন করে বসালে যে পরিমাণ ক্লাস ঘর আর শিক্ষক-শিক্ষিকার প্রয়োজন হবে, তা মানতে অনেক স্কুলকে বেগপেতে হবে।

তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রস্তাব রেখেছিলাম, দিন ভাগ করে বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাস করানো হোক। তাতে সমস্যা কম হত। নবম থেকে দ্বাদশ বিষয় ভিত্তিক শিক্ষিকা-শিক্ষকেরা পড়ান। কিন্তু বেশি ঘরে ক্লাস ভাঙলে বিষয়ভিত্তিক এত শিক্ষক-শিক্ষিকা পাওয়া যাবে কী করে? তাতে ক্লাস চালাতে হিমশিম খেতে হবে।’’ তিনি এ প্রশ্নও তুলেছেন, গ্রামাঞ্চলের বেশির ভাগ পড়ুয়া টিফিনের সময়ে বাড়িতে গিয়ে খাবার খায়। সরকারি নির্দেশ মতো, তাদের টিফিনের সময় শ্রেণ কক্ষে আটকে রাখা প্রায় অসম্ভব।

বিজেপির শিক্ষক সংগঠনের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ দে আবার বলছেন, ‘‘স্কুল খোলা প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিল ঠিকই। কিন্তু যে নির্দেশিকা রাজ্য শিক্ষা দফতর দিয়েছে, তা বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। অনেক উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে এমনিতেই পর্যাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা নেই। তার উপরে নির্দেশিকা মানতে গেলে অত ক্লাস ঘর ও অত শিক্ষক-শিক্ষিকা কোথায়? নির্দিষ্ট সময় অন্তর জীবাণুনাশ করতে গেলে যে পরিমাণ শিক্ষাকর্মী দরকার, তা সব স্কুলে আছে?’’

‘পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি’-র বাঁকুড়া জেলা সভাপতি গৌতম দাস অবশ্য দাবি করছেন, ‘‘স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত ঠিক সময়েই নেওয়া হয়েছে। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি বন্ধ। তাই বাকি ক্লাসগুলি চালাতে অসুবিধা হবে না।’’

সমস্যা রয়েছে অন্যত্রও। প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, জীবাণুনাশ করা এবং কোভিড বিধি সংক্রান্ত সব খরচ ‘কম্পোজিট স্কুল গ্রান্ট’ থেকে খরচ করতে বলা হয়েছে। কিন্ত তা থেকেই স্কুলের বিদ্যুতের খরচ-সহ আনুসঙ্গিক খরচ সামলানো হয়। সে ক্ষেত্রে পরের দিকে স্কুলগুলি চাপে পড়তে পারে।

বাঁকুড়া জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) গৌতমচন্দ্র মাল বলেন, ‘‘শিক্ষকদের চিন্তার কিছু নেই। স্কুল পরিষ্কার করা, মাস্ক কেনা ইত্যাদি বাবদ যা খরচ হবে, তা শিক্ষকেরা ‘কম্পোজিট স্কুল গ্রান্ট’ থেকে খরচ করতে পারবেন। ব্লক প্রশাসন থেকে জীবাণুনাশ করা হবে। আশা করি, স্কুলে পড়ুয়াদের পড়াতে কোনও অসুবিধা হবে না।’’ তিনি জানান, স্কুলগুলিতে নিয়মিত পরিদর্শন করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona Schools COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE