Advertisement
০৩ মে ২০২৪

পয়সা দিয়ে কে যাবে, বন্ধ সুলভ শৌচালয় 

বছর তিনেক আগে রঘুনাথপুর পুরনো মহকুমা হাসপাতালের কাছে এবং পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের পাশে ব্লক কার্যালয়ের কাছে দু’টি সুলভ শৌচালয় নির্মাণ করেছিল পূর্ত দফতর।

ঝুলছে তালা। নিজস্ব চিত্র

ঝুলছে তালা। নিজস্ব চিত্র

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৯ ০০:০৪
Share: Save:

শৌচকর্মের জন্য গ্যাঁটের কড়ি ফেলতে রাজি নন অনেকেই। তাই পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর শহরে চালু করেও বন্ধ করে দিতে হয়েছে দু’টি সুলভ শৌচালয়।

বছর তিনেক আগে রঘুনাথপুর পুরনো মহকুমা হাসপাতালের কাছে এবং পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের পাশে ব্লক কার্যালয়ের কাছে দু’টি সুলভ শৌচালয় নির্মাণ করেছিল পূর্ত দফতর। খরচ হয়েছিল প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। পরে সে দু’টি পরিচালনার ভার দেওয়া হয় এক ঠিকাদারকে। শৌচালয় দু’টি চালু ছিল মাস খানেক। প্রশাসনের নজরে আসে, ওই এলাকায় হাসপাতাল, থানা, সরকারি অফিসে দৈনন্দিন কাজে কয়েক হাজার লোকের ভিড় হলেও শৌচালয় দু’টি ব্যবহার করেন খুব কম সংখ্যক মানুষ। তাতে শৌচালয় চালানোর খরচও ওঠে না। তাই বাধ্য হয়েই সে দু’টি বন্ধ করে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।

পূর্ত দফতরের রঘুনাথপুরের সহকারী বাস্তুকার অজয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শৌচালয় কেন বন্ধ তার খোঁজ নেওয়ার জন্য ওই সংস্থার সাঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তারা জানিয়েছিল, কর্মী নিয়োগ করার পরে তাদের মজুরি দেওয়ার মত অর্থই উঠছে না শৌচালয়গুলি থেকে।” তিনি জানান, শৌচালয় দু’টি চালানোর জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। বরাত পেয়েছিল হুগলির একটি সংস্থা। তারা স্থানীয় দু’জনকে নিয়োগ করে মাস খানেক শৌচালয় দু’টি চালিয়েছিল। কিন্তু লোকজন শৌচালয় ব্যবহার করেন না বলে সংস্থাটি শৌচালয় চালাতে আগ্রহ দেখায়নি।

পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পয়সা দিয়ে শৌচালয় ব্যবহার করতে রাজি নয় কেউ। কেউ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে শৌচকর্ম করেন। কেউ একটু দূরে মাঠে চলে যান। লোকসান হচ্ছে দেখে শৌচালয় দুটি বন্ধ করে দিয়েছে ওই সংস্থা।’’

প্রশাসনের অভিজ্ঞতা, শৌচালয় নির্মাণ করে দেওয়া হলেও তা ব্যবহারে সচেতন করা যাচ্ছে না অনেককেই। রঘুনাথপুরে বন্ধ দু’টি শৌচালয় ফের সেই সত্যই তুলে এনেছে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ। পূর্ত দফতরের আর এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘রঘুনাথপুরে হাসপাতাল, থানা, সরকারি কার্যালয়গুলিতে রোজ হাজার লোক আসেন। তাঁদের কথা মাথায় রেখেই সুলভ শৌচালয় দু’টি নির্মাণ করা হয়েছিল। তাঁরাই যদি শৌচালয় ব্যবহার না করেন, তবে আমরা কী আর করব।’’

প্রশাসন সূত্রের খবর, সম্প্রতি শৌচালয় দু’টি ফের শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছিল পূর্ত দফতর। অজয়বাবু জানান, মাস খানেক আগে এ বিষয়ে মহকুমা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল। স্থানীয় পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিকে দায়িত্ব দিয়ে শৌচালয় দু’টি চালানো সম্ভব কিনা, তা দেখেছিল প্রশাসন। তার পরে আর আলোচনা এগোয়নি। অজয়বাবু বলেন, ‘‘এ নিয়ে দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Public Toilets
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE