Advertisement
E-Paper

কসবায় মেয়েদের হাইস্কুল কবে হবে

সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন বোলপুরের কসবা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান শেখ বিরাজুল। এলাকাবাসীর নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার কথা উঠে এল আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন মহেন্দ্র জেনা। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর। সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন বোলপুরের কসবা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান শেখ বিরাজুল। এলাকাবাসীর নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার কথা উঠে এল আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন মহেন্দ্র জেনা। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৫৬
পঞ্চায়েতের অফিসে এলাকাবাসীর মুখোমুখি প্রধান। —বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

পঞ্চায়েতের অফিসে এলাকাবাসীর মুখোমুখি প্রধান। —বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

• কসবা পঞ্চায়েতের ভিতর দিয়ে যাওয়া গোয়ালপাড়া থেকে ধানাই মোড়ের ১১ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশা। গোটা রাস্তা খানা খন্দে ভর্তি। পঞ্চায়েত, স্থানীয় প্রশাসন থেকে সংশ্লিষ্ট সব মহলে বাসিন্দারা একাধিক বার আর্জি জানিয়েছেন। এই রাস্তা দিয়ে নিত্য আসা যাওয়া করেন বহু মানুষ। প্রধান কি কিছু ব্যবস্থা করবেন?

অর্চনা পাল, বাঁধনবগ্রাম

প্রধান: নির্দলের দখলে থাকা এই পঞ্চায়েতে, মাস তিনেক হল তৃণমূলের হাতে এসেছে। আমার পঞ্চায়েতের সহকর্মী সদস্য, সদস্যারা আমাকে প্রধান নির্বাচিত করেছেন। রাস্তার সমস্যা নিয়ে আমরা যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। পঞ্চায়েতের সীমিত সম্বল এবং ক্ষমতার মধ্যে ১১ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের জন্য অন্যের ওপর আমরা নির্ভরশীল। ওই রাস্তায় প্রয়োজনীয় সংস্কার করার জন্য ইতিমধ্যেই আমরা পশ্চিমবঙ্গ গ্রামোন্নোয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে আলোচনা করেছি। অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। আশা রাখছি দ্রুত সংস্কার হবে ওই রাস্তায়।

• কসবায় বিশেষ করে পশ্চিমপাড়ায় একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের খুব প্রয়োজন। শতাধিক শিশু এবং মা-কে বর্তমান কেন্দ্রে যেতে গেলে অনেকটা পথ হেঁটে যেতে হয়। তাছাড়াও দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। জনসংখ্যার বিচারেও, পশ্চিমপাড়ায় একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘ দিনের। প্রধান কি সমাধানে উদ্যোগী হবেন?

মরিয়ম বিবি, পশ্চিমপাড়া

প্রধান: কসবাতে আরও একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তার কথা অস্বীকার করছি না। স্থানীয়দের আর্জি নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট সব স্তরে কথা বলব। বোলপুরের বিডিও শমিক পাণিগ্রাহী সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

• গোপালনগর গ্রামের পশ্চিমপাড়া থেকে দক্ষিণপাড়া প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তার ওপর শতাধিক আদিবাসী পরিবার নির্ভরশীল। ওই রাস্তা এতই খারাপ যে চলাফেরার অযোগ্য। ওই রাস্তা অবিলম্বে সংস্কারের জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রবিলাল সরেনের কাছে বাসিন্দারা আর্জি জানিয়েছেন। পঞ্চায়েত প্রধান কিছু ব্যবস্থা নেবেন?

কাশীনাথ হেমব্রম ও রাধিকা সরেন, পশ্চিমপাড়া, গোপালনগর

প্রধান: ওই রাস্তা সংস্কারের জন্য সম্প্রতি পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এলাকার সমাজসেবী নারায়ণ চন্দ্র ভাণ্ডারী এবং হৃদয় ঘোষের সঙ্গে আলোচনাও করেছি। প্রাথমিক ভাবে মোরাম ফেলার কাজ শুরু হচ্ছে। দ্রুত সংস্কারের কাজ শেষ হবে।

• বার্ধক্য ভাতা বা বিধবা ভাতা আমাকে দেওয়া হোক বলে আমার কোনও আর্জি নেই। কিন্তু এই পঞ্চায়েতের বহু সংসদের বিধবা এবং বার্ধক্যরা রয়েছেন যারা কোনও ভাতা পাচ্ছেন না। তাঁদের প্রাপ্য নিয়ে, প্রধান কী ভাবছেন?

বাসন্তী ভাণ্ডারী, পঞ্চায়েত অফিস পাড়া, কসবা

প্রধান: বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা নিয়ে বহু আপত্তি অভিযোগ রয়েছে। তবে বাম জমানায় যে তালিকা হয়েছিল বিশেষ করে বিপিএল পরিবারভুক্তদের নিয়ে নানা জটিলতা রয়েছে। সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব স্তরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। পঞ্চায়েতের সচিব সমীরণ বারিক এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মী নারায়ণ চন্দ্র মণ্ডলের সঙ্গে বৃহস্পতিবার আলোচনা হয়েছে। দ্রুত সমাধানের রাস্তা উঠে আসবে বলে মনে করছি।

• কসবা আংশিক বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের সীমানা পাঁচিল না থাকার কারণে, সামান্য অন্য মনস্কতায় যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা হচ্ছে। প্রধান কী একটু উদ্যোগী হবেন?

সেরিনা বিবি, মসজিদ পাড়া

প্রধান: একাধিক বিদ্যালয়ের সীমানা পাঁচিল নিয়ে বাসিন্দাদের আর্জি রয়েছে। ব্লক স্তরে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

• খিরুলি বাসস্টপ থেকে আমগোড়ে সুন্দিপুর প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা দীর্ঘদিন বেহাল হয়েছে। আর্জি জানিয়েও সেই অর্থে চোখে পড়ার মতো কোনও ব্যবস্থা নেই। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে প্রধান উদ্যোগী হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবি মিটত। প্রধান আদৌ কী সে ব্যাপারে উদ্যোগী হবেন?

ছবি মাড্ডি, বুধিন মাড্ডি, আদিবাসী পাড়া, আমগোড়ে

প্রধান: পঞ্চায়েতের আওতায় থাকা ছোট রাস্তায় সংস্কারের কাজে সবে হাত দিয়েছে পঞ্চায়েত। তালিকা ধরে ধরে আমরা এলাকায় এলাকায় রাস্তা সংস্কারের কাজ করছি। মালা মোড় থেকে বেড়গ্রাম স্কুল পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তা বেহালের বিষয়টিকে প্রাথমিক গুরুত্ব দিয়ে আমরা জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। ইতিমধ্যেই জেলা পরিষদের অনুমোদন পেয়েছি।

• বিদ্যাধরপুর, শেহলাই, বাঁধনবগ্রাম, শ্রীচন্দ্রপুর প্রভৃতি এলাকায় সেচের জল পাওয়া যাবে না এই গ্রীষ্মের মরসুমে। ঘোষণা আগেই হয়েছে। সেক্ষেত্রে ওই এলাকায় গ্রীষ্মে ধান চাষের জন্য বীজ বোনার সময় আর দেরি নেই। পঞ্চায়েত কি ব্যবস্থা নেবে?

চিত্তরঞ্জন ঘোষ, মাঝ পাড়া

প্রধান: দেবগ্রাম থেকে আলবাঁধা পর্যন্ত বিকেবিসি ৪ এবং ৫ ক্যানেলে জল সরবরাহ হবে না বলে আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রশাসন। সেই মোতাবেক ঘোষণাও হয়েছে। সাব মারসিবল পাম্পের জলে যত সামান্য সেচের কাজ করা যায় চেষ্টা করবে পঞ্চায়েত। তবে সেচের জন্য আলাদা কোনও উৎস থেকে জল সরবরাহ করা যায় কি না সে নিয়ে আলোচনা করব।

• বোলপুর থেকে ভায়া শান্তিনিকেতন হয়ে সিউড়ি যাওয়া জন্য একটি মাত্র বেসরকারি বাস নির্ধারিত হয়েছে। সকালে ৭ টা ২০ তে সিউড়ি থেকে বেরিয়ে সাড়ে আটটা নাগাদ কসবায় আসে এবং বোলপুর যায়। আবার ৯টা ৫০ নাগাদ বোলপুর থেকে বেরিয়ে সাড়ে দশটা নাগাদ কসবা হয়ে সিউড়ি যায়। সারা দিনে আর কোনও বাস চলাচল নেই। এত দীর্ঘ রাস্তা এবং এত বড় জনপদের সাধারণ মানুষ এবং স্কুল কলেজের পড়ুয়াদের যাতায়তের জন্য বাস চলাচল নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান কী উদ্যোগী হবেন?

শেখ মনিরুল, পশ্চিমপাড়া

প্রধান: একটি বাস এই রুটে চলাচলের ফলে বাসিন্দাদের সমস্যা অস্বীকার করছি না। তবে বেসরকারি বাস মালিক সমিতি সঙ্গে আলোচনা করব। বাস ছাড়াও এই রুটে চলাচল করার জন্য যাত্রীবাহী অন্য কিছু যান চলাচল করা যায় কি না সে নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব স্তরে আলোচনা করব।

• পঞ্চায়েতের বহু ছাত্রী আশেপাশের স্কুলের উপর নির্ভরশীল। তফশিলি এবং সংখ্যালঘু এলাকা হওয়ায় বহু ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবক অন্য উপায় না পেয়ে দূরে পাঠাচ্ছেন। কসবাতে একটি গার্লস হাইস্কুলের দাবি বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের। প্রধান সাহেবের মেয়াদে, আর্জি কি পূরণ হবে?

তরুণ বাগ, গোপালনগর

প্রধান: আমার ছোট বয়স থেকে এলাকার বাসিন্দাদের এই দাবি শুনে আসছি। প্রধানের পদে শপথ গ্রহণের ওই অনুষ্ঠানের পরে দফতরের সামনে অনেক অভিভাবক এই আর্জি জানিয়েছেন। সব স্তরে আলোচনা করেছি। অভিভাবকদের গার্লস স্কুলের দাবি নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

• এলাকার একাধিক সংসদে নিকাশি নালা, শৌচাগার, পানীয় জল-সহ অন্যান্য নাগরিক পরিষেবা আরও উন্নত মানের যাতে হয়, তার জন্য প্রধান কি কোনও ব্যবস্থা নেবেন?

পদ্মা সর্দার, কল্যাণী সর্দার, রাধাকৃষ্ণপুর

প্রধান: পঞ্চায়েতের ১২টি সংসদে নিকাশি নালা নিয়ে সার্ভে হয়েছে। পানীয় জলের জন্য পাইপ লাইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রত্যেক সংসদে ৫ হাজার করে চারা রোপণের উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আমাদের পঞ্চায়েতকে নির্মল পঞ্চায়েতের তালিকাভুক্ত করার পরিকল্পনায় কাজ জোর কদমে শুরু হয়েছে। পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা, মিড ডে মিল, স্বাস্থ্য নিয়ে আলাদা চিন্তা ভাবনা আমরা করছি।

Village Panchayat Problems and solutions
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy