বেকার যুবাদের জন্য তৈরি করেও এতদিন বিলি করা হয়নি। বেদখল হয়ে পড়েছিল মানবাজার বাসস্ট্যান্ডের স্টল। দখলমুক্ত করে সেই সব স্টল নিলাম করেই মানবাজার ১ পঞ্চায়েত সমিতির ঘরে ঢুকল ১১ লক্ষ টাকা। সে দিনই মানবাজার থানার পাথরকাটা পশুপক্ষীর হাট ছ’মাসের মেয়াদে দেড় লক্ষ টাকায় নিলাম হয়েছে। মানবাজার ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কবিতা মাহাতো বলেন, ‘‘স্টলগুলি থেকে এতদিন কিছুই আয় হচ্ছিল না। নিলাম করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। আপাতত সেলামি হিসেবে ১১ লক্ষা টাকা পঞ্চায়েত সমিতি পেয়েছে। ভাড়া চালু হলে আয়ও বাড়বে।’’
স্থানীয় বেকার যুবক-যুবতীরা ব্যবসার মাধ্যমে যাতে স্বাবলম্বী হতে পারেন সেই উদ্দেশে বছর দশেক আগে মানবাজার ১ পঞ্চায়েত সমিতি বাসস্ট্যান্ড চত্বরে কিছু স্টল নির্মাণ করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে স্টলগুলি বিলি না হওয়ায় তা দখলদারদের হাতে চলে গিয়েছিল। বাসস্ট্যান্ড চত্বরে থাকা ব্যবসায়ীদের অনেকেই স্টলগুলি গুদাম ঘরে পরিণত করেছিল। অভিযোগ রাতে স্টলের বারান্দায় অসামাজিক কাজকর্মও নাকি চলত। সম্প্রতি মানবাজার ১ পঞ্চায়েত সমিতি অবৈধ দখলদারদের হটানোর জন্য নোটিস দেয়। ১২ সেপ্টেম্বর পঞ্চায়েত সমিতি তালা ভেঙে নতুন তালা লাগিয়ে স্টলের দখল নেয়।
দীর্ঘদিন ধরেই ওই স্টলগুলি দখলমুক্ত করে বিলি করার দাবি উঠল মানবাজারে। কিন্তু প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে সেই উদ্যোগ চোখে পড়েনি। সম্প্রতি মানবাজার ১ বিডিও সত্যজিৎ বিশ্বাস মানাবাজারের পুরাতন সব্জি বাজার কিষাণ মান্ডিতে তুলে নিয়ে যান। তাঁর কথায়, ‘‘পুরাতন সব্জি বাজারটি সরকারি জায়গা বসলেও সে বাবদ পঞ্চায়েত সমিতিতে এক টাকাও জমা পড়ত না। কিষাণ মান্ডির স্টল এবং চাতাল নিলাম করে ইতিমধ্যে সমিতির কয়েক লক্ষ টাকা আয় হয়েছে।’’ এরপরেই তিনি বাসস্ট্যান্ড চত্বর থেকে স্টলগুলি দখলমুক্ত করার কাজে নামেন। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করেও ১৬টি স্টল তৈরি হলেও একটি টাকা আমরা ফেরত পাইনি। তাই পঞ্চায়েত সমিতিতে রেজুলেশন করে স্টল উদ্ধার করা হয়। তারপর নিলাম করে বিলি করে ১১ লক্ষা টাকা এসেছে।’’ যুগ্ম বিডিও অপূর্ব কর্মকার জানান, বাজার চলতি অনুযায়ী স্টলের ভাড়া নির্ধারণ করা হবে।
পাথরকাটা পশুপক্ষীর হাটে আগে ভাড়া নিলাম হত। কিন্তু গত দু’বছর নিলাম হয়নি। প্রশাসনের এক আধিকারিকের ব্যাখ্যা, হাট পরিচালন কমিটির কিছু কর্তা দাবি করেছিলেন, হাটের মধ্যে কিছু রায়তি জায়গা রয়েছে। তাই তাঁরা রায়তি জায়গার জন্য প্রশাসনকে ভাড়া দিতে রাজি হননি। সেই টানাপড়েনের জেরে দু’বছর ধরে হাট থেকে রাজস্ব আসছিল না। সম্প্রতি প্রশাসন ওই কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এরপরেই মত পাল্টান তাঁরা।
যদিও বর্তমান হাট কমিটির অন্যতম কর্তা রাধেশ্যাম বাউরি দাবি করছেন, ‘‘আমরা রাজস্ব দেব না এ কথা বলিনি। আমরা জানিয়েছিলাম ১৬১ জন সদস্য মিলে হাট চালাচ্ছি। ডাকে টাকার পরিমাণ বেশি হলে তা দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। এ বারের ডাকে ছ’মাসের জন্য যে দেড় লক্ষ টাকা উঠেছে, তা দেওয়া সম্ভব বলেই আমরা রাজি হয়েছি।’’ বিডিও বলেন, ব্যবসা করে তাঁরা যাতে সংসার চালাতে পারেন এটা যেমন দেখা হবে, পাশাপাশি পঞ্চায়েত সমিতির রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করাও আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল। সবাইকে একটা পদ্ধতির মধ্যে আমরা বাঁধতে চেয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy