Advertisement
E-Paper

ব্রিগেডমুখী বাস, দুর্ভোগে বাঁকুড়াবাসী

বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, “বাস কম চলাচলের অভিযোগ পাইনি। খোঁজ নিচ্ছি। পরিবহণ ব্যবস্থা সচল রাখতে দরকারে বাড়তি সরকারি বাস চালানো হবে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:০০
ঠাসাঠাসি: বাঁকুড়ার কেরানিবাঁধে একটি বাসে। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।

ঠাসাঠাসি: বাঁকুড়ার কেরানিবাঁধে একটি বাসে। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।

ব্রিগেডের জনসভার দু’দিন আগে থেকেই বাস তুলে নেওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে দুর্ভোগ শুরু হয়েছে বাঁকুড়া জেলায়। এর ফলে জেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজনকে শাসকদল ভোগান্তির মধ্যে ফেলে দিল বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, তাঁরা সব রুট থেকে বাস নিচ্ছেন না। ছোটগাড়ি, পিকআপ ভ্যান ও ট্রেনে কর্মীদের ব্রিগেডে নিয়ে যাওয়া হবে। বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, “বাস কম চলাচলের অভিযোগ পাইনি। খোঁজ নিচ্ছি। পরিবহণ ব্যবস্থা সচল রাখতে দরকারে বাড়তি সরকারি বাস চালানো হবে।”

এ দিন সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাসের অভাবে হা-পিত্যেশ করতে দেখা গিয়েছে সাধারণ মানুষকে। কোথাও কোথাও এই সুযোগে কয়েক গুণ ভাড়া বাড়িয়ে যাত্রী তুলতে দেখা গিয়েছে ছোটো গাড়ির চালকদের। এ দিন বিয়ের লগ্ন থাকায় নিমন্ত্রিতেরা গন্তব্যে পৌঁছতে হিমসিম খান।

সকাল ১০ টা নাগাদ দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে খাতড়া পাম্প মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন পুঞ্চার নীলিমা পাত্র। সিমলাপালে বিয়ে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। নীলিমাদেবী বলেন, ‘‘প্রায় দু’ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রয়েছি। সিমলাপাল যাওয়ার কোনও বাস পাচ্ছি না। ছোটো দু’টি ছেলেমেয়ে, তার সঙ্গে বড় একটা ব্যাগ রয়েছে। এত সকল নিয়ে এখন কী করি, বুঝতে পারছি না।’’ সমস্যায় পড়েছেন সরকারি ও বেসরকারি অফিসের কর্মীরাও। এ দিন সরকারি গাড়ি রাস্তায় দেখা গেলেও অন্য দিনের তুলনায় কম চলাচল করেছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ। দু’দিন আগেই যদি এই হাল হয়, তাহলে সমাবেশের দিন কী হবে, তা নিয়ে আশঙ্কা ঘনিয়েছে নানা মহলে।

বাঁকুড়া আরটিও দফতরের এক কর্তা অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘জেলার কোথাও বাস চলছে না, বা পরিবহন ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে— এমন অভিযোগ নেই।’’ যদিও বাঁকুড়া বাস মালিক সমিতি সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিন থেকেই বিষ্ণুপুর-সোনামুখী, বাঁকুড়া-খাতড়া, বিষ্ণুপুর-আরামবাগ রুটের বেশির ভাগ বাসই চলেনি। তবে, বাঁকুড়া-বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া- দুর্গাপুর, বাঁকুড়া-মেজিয়া ও শালতোড়া রুটে বাস চলাচল স্বাভাবিক ছিল।

তবে, দক্ষিণ বাঁকুড়ায় কিছু নেতা দাবি করেছেন, ব্রিগেডের সভায় রেকর্ড সংখ্যক লোক নিয়ে যেতে চাইছেন। বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি তথা খাতড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জয়ন্ত মিত্রের দাবি, ‘‘আমার নেতৃত্বে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহল থেকে ২৬৫টি বাস ও ১৫০টিরও বেশি ছোটো গাড়িতে লোক যাবে ব্রিগেডের সভায়। যার মধ্যে খাতড়া থেকেই যাবে ৯০টি।’’ খাতড়া মহকুমা বাসস্ট্যান্ড কমিটির সম্পাদক নিতাই দত্ত বলেন, ‘‘খাতড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় ১২০টি বেসরকারি বাস চলাচল করে। তার মধ্যে ৯০টি বাস নিয়েছে খাতড়া ব্লক এলাকার নেতৃত্ব। বাকি বাসগুলি ধরেছে অন্য জায়গা থেকে।’’

পাত্রসায়র ও ইন্দাস এলাকাতেও বাস কমের জন্য যাত্রীদের দুর্ভোগের ছবি দেখা গিয়েছে। ওই রুটে মূলত ছোট গাড়িই এখন যাত্রীদের ভরসা। ইন্দাসের বাসিন্দা সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অসীম দাসের অভিযোগ, “তৃণমূলের লোকজন ব্রিগেড যাওয়ার জন্য জোর করে বিভিন্ন জায়গায় বাস আটকে রেখেছেন। সে জন্যই কার্যত বন্‌ধের চেহারা নিয়েছে ইন্দাস।’’ তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পাত্রসায়রের যুব তৃণমূল সভাপতি সুব্রত দত্ত দাবি করেন, “কোথাও বাস আটকানো হয়নি। কিছু বাসমালিক বাড়তি ভাড়া পেতে জয়দেবের মেলায় গাড়ি পাঠিয়েছেন।’’

বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ডেও বেসরকারি বাস সে ভাবে দেখা যায়নি। বিষ্ণুপুর থেকে সোনামুখী, কোতুলপুর, জয়পুর রুটে বাসই চালানো হয়নি বলে অভিযোগ যাত্রীদের। বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা সঞ্জীব মণ্ডল কোতুলপুরের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। বাসে করেই যাতায়াত করেন তিনি। তিনি বলেন, “সকাল থেকেই বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। একটিও বাস পাইনি। বাধ্য হয়ে ছোট গাড়ি ভাড়া করে স্কুলে যেতে হয়েছে।” একই সমস্যার কথা জানিয়েছেন বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা তথা সোনামুখীর একটি স্কুলের শিক্ষিকা নিবেদিতা গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁদের অভিযোগ, বাস চলাচল না করায় ছোট গাড়ির ভাড়া কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

Brigade TMC Bus ব্রিগেড
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy