Advertisement
E-Paper

নজরে রেখে সাফল্য, দাবি মাদ্রাসার 

মাধ্যমিক হোক বা উচ্চ মাধ্যমিক—কৃতিত্বের ধারাবাহিক নজির তৈরি করেছে বাঁকুড়া জেলা স্কুল। এ বার সেই পথেই হাঁটল বাঁকুড়া সদর থানার বাদুলাড়ার এই মাদ্রাসা। রাজ্যের সম্ভাব্য প্রথম দশের তালিকায় নাম রয়েছে তাদের তিন ছাত্রের।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৯ ০০:৩৭
সম্মিলনী হাইমাদ্রাসার বাইরে পড়ুয়া ও শিক্ষকেরা। নিজস্ব চিত্র

সম্মিলনী হাইমাদ্রাসার বাইরে পড়ুয়া ও শিক্ষকেরা। নিজস্ব চিত্র

হস্টেলে টিভি নেই। আবাসিকদের জন্য মোবাইল নিষিদ্ধ। বিকেলে কয়েক ঘণ্টার খেলাধুলোর বাইরে, শুধু পড়াশোনার পরিবেশ। সেই সঙ্গে পালা করে পড়ুয়াদের উপরে শিক্ষকদের নজরদারি। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হাইমাদ্রাসা পরীক্ষার ফলে বাঁকুড়ার সম্মিলনী হাইমাদ্রাসার পড়ুয়াদের এগিয়ে থাকার পিছনের উপাদান এ সব, দাবি শিক্ষকদের।

মাধ্যমিক হোক বা উচ্চ মাধ্যমিক—কৃতিত্বের ধারাবাহিক নজির তৈরি করেছে বাঁকুড়া জেলা স্কুল। এ বার সেই পথেই হাঁটল বাঁকুড়া সদর থানার বাদুলাড়ার এই মাদ্রাসা। রাজ্যের সম্ভাব্য প্রথম দশের তালিকায় নাম রয়েছে তাদের তিন ছাত্রের।

৮০০-র মধ্যে ৭৫৭ নম্বর পেয়ে যৌথ ভাবে রাজ্যের মধ্যে সম্ভাব্য দ্বিতীয় হয়েছে এই স্কুলের আবু দাউদ পাখিরা ও মহম্মদ হাসমাত আলি শাহ। ওই স্কুলেরই সরতাজ আলি লস্কর ৭৪৯ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মধ্যে সম্ভাব্য সপ্তম হয়েছে। আবু দাউদ পূর্ব মেদিনীপুরের নামালবাশ এলাকার, হাসমাত আলি পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম ও সরতাজ আলি হাওড়ার উনসানির বাসিন্দা। বাঁকুড়ার জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পঙ্কজ সরকার বলেন, ‘‘ওই মাদ্রাসার পড়ুয়ারা খুবই ভাল ফল করেছে। এতে জেলার মাদ্রাসাগুলির অন্য পড়ুয়ারাও উৎসাহিত হবে।’’

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দেবীপ্রসাদ পাঁজা বলেন, “গত বছরও আমাদের মাদ্রাসার এক ছাত্র হাইমাদ্রাসায় রাজ্যে অষ্টম হয়। এ বার এক সঙ্গে তিন জন ছাত্র কৃতীদের তালিকায় উঠে আসায় আমরা গর্বিত। আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে।” ওই স্কুল থেকে এ বার ৫৫ জন পরীক্ষায় বসেছিল। সকলে যে শুধু উত্তীর্ণ হয়েছে তা-ই নয়, ৮০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পেয়েছে ১০ জন। মেয়েদের মধ্যে সর্ব্বোচ্চ পেয়েছে সুমাইয়া খাতুন (৫৫৬)।

১৯৮৫ স্থানে স্থাপিত এই মাদ্রাসায় এখন পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চারশো ছাত্রছাত্রী পড়ে। তাদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। রয়েছে হস্টেল। আবু দাউদ ও সরতাজ ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে এবং হাসমাত সপ্তম শ্রেণি থেকে এই স্কুলের হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করেছে। এ দিন তিন কৃতীর কেউই স্কুলে ছিল না। শিক্ষকদের একাংশের দাবি, ওই তিন জন যখন ভর্তি হয়েছিল, তখন তাদের পড়াশোনার মান নজরকাড়া ছিল না।

কী ভাবে হল পরিবর্তন? স্কুল সূত্রের দাবি, ভোর ৪টে থেকে হস্টেলের আবাসিকদের দিন শুরু হয়। ভোরে চা-বিস্কুট খেয়েই পড়তে বসার পালা। পড়া চলে সকাল ৯টা পর্যন্ত। তার পরে স্কুল। পড়ুয়ারা ঘুমোতে যায় রাত ৯টার মধ্যে। হস্টেলেই শুধু নয়, যারা বাড়ি থেকে পড়াশোনা করে, তাদের উপরেও স্কুলের শিক্ষকদের সজাগ নজর রয়েছে বলেই সাফল্য আসছে—মনে করেন অভিভাবক আসরফ মিদ্যা, তাহারুল মিদ্যারা।

স্কুলের শিক্ষক মহম্মদ নাজির হোসেন, বখতিয়ার মিদ্যা, সামসের মিদ্যারা জানাচ্ছেন, স্কুলে দু’টি ‘স্মার্ট ক্লাসরুম’ রয়েছে। সেখানে ‘জায়ান্ট স্ক্রিন’ আছে। ‘প্রোজেক্টর’-এর সাহায্যে পড়ুয়াদের নানা বিষয় বোঝানো হয়। টেস্ট পরীক্ষার পরে পরীক্ষার্থীদের বিশেষ ‘কোচিং’ দেওয়া হয়।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, “পড়ুয়ারা হস্টেলে যখন পড়াশোনা করে, তখনও স্কুলের শিক্ষকেরা পালা করে উপস্থিত থাকেন। পড়াশোনায় সাহায্য করে আল আমিন মিশন। তবে মোটের উপরে সাফল্যের কারণ—সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পড়ুয়াদের উপরে নজর রাখা।’’

Education Madrsa Result
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy