পড়ুয়াদের স্কুল ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ। — ফাইল চিত্র।
কম পড়ুয়া থাকায় পুরুলিয়ার মানবাজার-২ ব্লকের জামতোড়িয়া চক্রের চেকুয়া প্রাথমিক স্কুলটি কি শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যাবে? এই বিষয়ে কলকাতা হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণের ফলে এমনই চর্চা শুরু হয়েছে।
শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, চেকুয়ার এই স্কুলটিতে সাত জন পড়ুয়া এবং দু’জন শিক্ষক রয়েছেন। আইনজীবীদের সূত্রে খবর, সম্প্রতি হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই স্কুলের সাত পড়ুয়াকে কাছাকাছি কোনও স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা এবং স্কুলের দুই শিক্ষককে প্রয়োজনে অন্য স্কুলে পাঠানোর বিষয়টি জেলা স্কুল পরিদর্শককে বিবেচনা করে দেখতে বলেছেন। তবে পুরুলিয়া জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) প্রশান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই স্কুলের বিষয়ে কোনও নির্দেশ হাতে পাইনি। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।”
ওই স্কুলের শিক্ষক দীনবন্ধু দত্ত ‘উৎসশ্রী’ পোর্টালের মাধ্যমে বদলির আবেদন করেছিলেন।
দীনবন্ধু বলেন, “২০১০-এ বর্তমান টিচার ইনচার্জ শুকলাল মুর্মুর সঙ্গে স্কুলে যোগ দিই। আগের শিক্ষক ২০২০ সালে বদলি হয়ে যান। আমার বাড়ি বাঁকুড়া জেলায়। বাড়িতে অসুস্থ বাবা-মা রয়েছেন। তাঁদের দেখাশোনার জন্য ‘উৎসশ্রী’র মাধ্যমে বদলির আবেদন জানাই। সুরাহা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে বদলি চেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হই।”
ওই শিক্ষকের আইনজীবী সুদীপ ঘোষ চৌধুরী জানান, মামলার শুনানির সময়ে স্কুলে পড়ুয়া ও শিক্ষকের সংখ্যা জানতে চান বিচারপতি।
তিনি বলেন, “পরে বিচারপতি পুরুলিয়ার ডিআইকে পরামর্শ দেন, তিনি যেন চেকুয়া স্কুলের ওই সাত পড়ুয়াকে নিকটবর্তী কোনও স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। পাশাপাশি, যে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি, সেখানে ওই দুই শিক্ষককে পাঠানো যায় কি না, তা-ও ডিআইকে বিবেচনা করে দেখতে বলেছেন।”
সোমবার ওই স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, তিন জন মাত্র পড়ুয়া উপস্থিত। স্কুলের টিচার ইনচার্জ শুকলাল জানান, যখন স্কুলে যোগ দেন, ১৮-২০ জন পড়ুয়া ছিল। গত তিন বছরে তা কমতে কমতে সাতে এসে ঠেকেছে। তিনি বলেন, “স্কুলে এ মুহূর্তে দু’জন শিক্ষক ও সাত জন পড়ুয়া রয়েছে। সহ-শিক্ষক দীনবন্ধু দত্ত বদলির আবেদন জানিয়েছেন।”
স্কুলের পড়ুয়া কমে যাওয়া নিয়ে স্থানীদের একাংশ জানান, জঙ্গলে ঘেরা গ্রামে কয়েকটি মাত্র পরিবারের বাস। তা ছাড়া, ২০০ মিটার দূরে চেকুয়া শিশুশিক্ষা কেন্দ্র ও ৫০০ মিটার দূরে রয়না গ্রামে আরও একটি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। তাই শুরু থেকে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা বেশ কম।
তবে এক পড়ুয়ার অভিভাবক সনাতন বেসরার শঙ্কা, “গ্রামে স্কুল ছিল, ভালই ছিল। ছেলেমেয়েদের এ বারে অন্য স্কুলে পাঠাতে হবে। পড়াশোনা না বন্ধ হয়ে যায়!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy