Advertisement
E-Paper

বিদ্যুতে ঘাটতি কমাতে সাবস্টেশন তারাপীঠে

রাস্তার বাতি থেকে শ্মশান-চুল্লি, তোরণদ্বার থেকে ঘরের আলো— চাহিদা মতো বিদ্যুৎ জোগাতে কয়েক মাস ধরেই হিমসিম খাচ্ছিল বিদ্যুৎ দফতর। জারি ছিল সমাধানের চেষ্টাও। সেই চেষ্টাই ফলপ্রসূ হল। তারাপীঠে আলাদা সাব স্টেশন গড়ার অনুমোদন দিল বিদ্যুৎ ভবন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৪৯

রাস্তার বাতি থেকে শ্মশান-চুল্লি, তোরণদ্বার থেকে ঘরের আলো— চাহিদা মতো বিদ্যুৎ জোগাতে কয়েক মাস ধরেই হিমসিম খাচ্ছিল বিদ্যুৎ দফতর। জারি ছিল সমাধানের চেষ্টাও। সেই চেষ্টাই ফলপ্রসূ হল। তারাপীঠে আলাদা সাব স্টেশন গড়ার অনুমোদন দিল বিদ্যুৎ ভবন। সাবস্টেশন তৈরি হলে এলাকার বিদ্যুতের চাহিদা অনেকটাই মিটবে বলে আশা করছেন তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ থেকে শুরু করে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের কর্তারা।

রাজ্যের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র তারাপীঠের বিদ্যুতের চাহিদা এখন আকাশছোঁয়া। তা সামাল দিতে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় পৃথক সাব স্টেশন গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। নিগমের বীরভূম জেলা রিজিওনাল ম্যানেজার তপন দে বলেন, ‘‘তারাপীঠে পৃথক ভাবে ৩৩ কেভি সাব স্টেশন তৈরির জন্যে বছর দেড়েক আগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। পুজোর ছুটির আগের দিন দফতরের মুখ্য নির্বাহী বাস্তকারের কাছ থেকে তার অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে।’’ সাবস্টেশন গড়তে ৫ কোটি টাকা বরাদ্ধ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন।

এখন প্রয়োজন জমি। যেখানে গড়ে উঠবে সেই সাব স্টেশন। নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় তিন বিঘে জমি প্রয়োজন। দ্রুত সেই জমির বন্দোবস্ত করার জন্যে তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ (টিআরডিএ)-এর সঙ্গে যুক্ত সদস্যদের কাছে আর্জি রাখা হয়েছে বলেও জানান নিগমের কর্তারা। টিআরডিএ সূত্রে জানানো হয়েছে, তারাপীঠের উন্নয়নের স্বার্থ জড়িত রয়েছে এই সাব স্টেশনের সঙ্গে। ফলে জায়গার অভাব হবে না।

রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে তারাপীঠ এলাকায় রামপুরহাট থানার মনসুবা মোড় সংলগ্ন ১৩২/৩৩ কেভি সাব স্টেশন থেকে বিদ্যুতের জোগান দেওয়া হয়। ওই সাব স্টেশন থেকে তারাপীঠ ছাড়াও আটলা, বুধিগ্রাম, বীরচন্দ্রপুর, দুনিগ্রাম ও চাঁদপাড়া— এই সমস্ত এলাকাগুলির জন্যে আলাদা আলাদা ফিডারে বিদ্যুতের জোগান দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, মনসুবা মোড় লাগোয়া সাব স্টেশন থেকে তারাপীঠ ফিডারের মাধ্যমে দুটি সার্কিটে প্রায় ২৩ কিলোমিটার জুড়ে এখন একটা মাত্র ৬.৩ কেভি ট্রান্সফর্মারের মাধ্যমে তারাপীঠ এলাকায় বাণিজ্যিক এবং ঘরোয়া সংযোগ মিলে প্রায় ৩২০০ গ্রাহককে বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়া হয়। এ ছাড়াও তারাপীঠ ও তারাপীঠ সংলগ্ন এলাকার পাঁচশোরও বেশি লজে বিদ্যুত সংযোগ দেওয়া হয়।

ইতিমধ্যে তারাপীঠ শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি গড়ে তোলার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে সেখানেও। অন্য দিকে, রামপুরহাট–সাঁইথিয়া সড়কে টিআরডিএ-এর অধীন রামপুরহাট থানার মনসুবা মোড় থেকে তারাপীঠ পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে স্থায়ী ভাবে পথবাতি বসানোর প্রকল্প দীর্ঘ দিন আগেই অনুমোদন হয়ে আছে। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে তা এত দিন বাস্তবায়িত হয়নি। স্থায়ী ব্যবস্থার জন্য পৃথক সাব স্টেশনের জরুরি ছিল বলে মানেন নিগমের কর্তারাও।

এ ছাড়াও তারাপীঠের সৌন্দর্যায়নের জন্যে তারাপীঠ ঢুকতে চিলার কাঁদর এলাকায় রাস্তার উপর সুদৃশ্য তোরণ তৈরি করা হয়েছে। আরও একটি তোরণ নির্মাণের অনুমোদন মিলেছে মনসুবা মোড়ে। সম্প্রতি তারাপীঠে এসে বিদ্যুৎ মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, তোরণদ্বারগুলি আলোয় সাজানো হবে। সেক্ষেত্রেও প্রয়োজন রয়েছে বিদ্যুতের। তারাপীঠ এলাকায় একটি পার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেখানেও বিদ্যুৎ জরুরি।

রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির মাড়গ্রাম গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের সহকারী বাস্তুকার শিশুনাথ দাস জানান, তারাপীঠ এলাকায় ইতিমধ্যে নতুন খুঁটি বসানো হয়েছে। তারাপীঠ ফিডারের অধীন দুটি সার্কিটের জন্যে ৫০ বর্গ মিলিমিটার এর পরিবর্তে ১০০ বর্গ মিলিমিটার বিদ্যুৎবাহী তার পরিবর্তন করা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন। শিশুনাথ জানাচ্ছেন, তারাপীঠে ১০০ কেভি ৭৮টি নতুন ট্রান্সফর্মার বসানো হয়েছে। নতুন সাব স্টেশনের জন্য তিন বিঘে জমি দরকার। ওই সাবস্টেশনে তৈরি হলে দু’টি ৬.৩ এমভিএ ট্রান্সফর্মারের মাধ্যমে তারাপীঠ-সহ আটলা, বীরচন্দ্রপুর ফিডারে বিদ্যুতের জোগান দেওয়া হবে।

সাবস্টেশনের অনুমতি মেলায় খুশি টিআরডিএ-এর চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। এর ফলে এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবার উন্নতির পাশাপাশি গৃহীত প্রকল্পগুলি চালু করা যাবে বলে আশাবাদী মন্ত্রী।

আর জমি? তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের সহকারী চেয়ারম্যান সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘উন্নয়ন মূলক প্রকল্পে জমির অভাব হবে না। আটলা যাওয়ার রাস্তায় একটি খাস জায়গা ইতিমধ্যেই দেখানো হয়েছে নিগমকে। দুটি জায়গার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।’’ প্রয়োজনে এলাকাবাসীকে স্বেচ্ছায় জমি দিতে হবে বলেও মনে করেন সহকারী চেয়ারম্যান।

Power Shortage Tarapith Tarapith Substation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy