বন্ধ: পরপুর দু’টি স্কুল ভবন তৈরি হয়ে পড়েই রয়েছে মানবাজারের গুরুড় গ্রামে। —নিজস্ব চিত্র।
এলাকায় রয়েছে দু’-দু’টি স্কুল ভবন। কিন্তু সেই স্কুল আর খোলা হয়নি। তাই রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে আট কিলোমিটার দূরের স্কুলেই যেতে হয় বান্দোয়ানের গুরুড় এলাকার ছেলেমেয়েদের।
গুরুড় গ্রামের এক প্রান্তে বছর দশেক আগে একটি মধ্যশিক্ষা কেন্দ্রের ভবন তৈরি হয়েছিল। এর কয়েক বছর পরে ২০১৪ সালে মধ্যশিক্ষা কেন্দ্রের পাশেই একটি জুনিয়র হাইস্কুল তৈরি হয়েছিল।
নির্মাণ হলেও মধ্যশিক্ষা কেন্দ্র এবং জুনিয়র হাইস্কুলের কোনও ভবনেরই তালা খোলা হয়নি। ইতি মধ্যে অযত্নে এবং অবহেলায় মধ্যশিক্ষা কেন্দ্রের ভবনটির জীর্ণ দশা হতে চলেছে। জুনিয়র হাইস্কুলের বারান্দায় সন্ধ্যা হলেই অসামাজিক কাজের আসর বসে যায় বলেও অভিযোগ।
বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, মধ্যশিক্ষা কেন্দ্রটি নির্মাণ হওয়ার পর তাঁরা আশা করেছিলেন, এলাকার ছেলেপিলেদের আর বাইরে পড়তে যেতে হবে না। অন্তত অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত গ্রামের স্কুলে তারা পড়ার সুযোগ পাবে। কিন্তু কোথায় কি! এরপরে জুনিয়র হাইস্কুল তৈরি হল। সেখানেও কোনও শিক্ষক এলেন না। স্কুলও চালু হল না। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘‘চালুই যদি না হবে, তা হলে লক্ষ-লক্ষ টাকা খরচ করে এ ভাবে স্কুল ভবন নির্মাণ করার অর্থ কী?
গুরুড় গ্রামের সপ্তম শ্রেণির গুণধর সিং সর্দার, পারবাইদ গ্রামের ষষ্ঠ শ্রেণির সুতমা মাহাতো, চঞ্চলা মাহাতো এবং তুলসিডি গ্রামের সপ্তম শ্রেণির আকাশ সিং সর্দার বলে, ‘‘এলাকায় স্কুল থেকেও নেই। তাই আট কিমি দূরে বান্দোয়ানের স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়। সরকার কি আমাদের কষ্ট বুঝতে পারে না?’’
তুলসিডি গ্রামের বাসিন্দা অজয় মাহাতো, চন্দন মাহাতোরা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার পড়ুয়াদের পাঠ উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলার কথা বলেন। এখানে দু’টি স্কুল ভবন তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে, কিন্তু কোনও এক রহস্যময় কারণে স্কুলগুলি চালু হয়নি। তাহলে স্কুল তৈরি করে কী লাভ হল?’’
গুরুড় অঞ্চলে হেতাকোল গ্রামে একটি হাইস্কুল রয়েছে। কিন্তু বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ওই স্কুলটি অঞ্চলের একপ্রান্তে অবস্থিত। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভাল নয়। তাই পড়ুয়ারা হেতাকোলের বদলে বান্দোয়ান বাজারের স্কুলে যেতে বেশি আগ্রহী। কিন্তু সে পথেও কম নয়। তাই ভোগান্তিও হচ্ছে তাদের।
বান্দোয়ানের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সুশোভন মণ্ডল বলেন, ‘‘শিক্ষক না থাকায় জুনিয়র হাইস্কুলটি চালু করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে কয়েকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সদুত্তর মেলেনি।’’
জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শুষেন মাঝি বলেন, ‘‘বান্দোয়ানে পড়ে থাকা মধ্যশিক্ষা কেন্দ্রের ভবনের কথা জানি। জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় এ রকম আরও বেশ কিছু নির্মীয়মান শিশুশিক্ষা কেন্দ্র এবং মধ্যশিক্ষা কেন্দ্র পড়ে রয়েছে। এ গুলি চালু করতে চেয়ে সর্বশিক্ষা মিশনের প্রোজেক্ট ডিরেক্টরের কাছে আবেদন জানিয়েছি। আমরা চাইছি, পঞ্চায়েত সমিতির নিয়ন্ত্রণে এ গুলি চালু করার অনুমতি দেওয়া হোক। এখনও পর্যন্ত আমাদের আবেদনের উত্তর পাইনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy