সেকালের মেলার বিকিকিনির হাট-ছবি। (সংগৃহীত)
পৌষমেলায় দূষণের অভিযোগ ওঠায়, পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্তের আর্জির প্রেক্ষিতে নানা বিধি নিষেধ জারি করেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। আদালতের সেই সব বিধি নিষেধ মেনেই, এ বার পৌষ উৎসব। কিন্তু কেমন হবে মেলা, নতুন কোনও বিধি-নিষেধ— এমন প্রশ্ন আর বিতর্ক নিয়েই শুরু হল এ বারের শান্তিনিকেতন পৌষমেলা।
বিশ্বভারতী জানাচ্ছে, দেরিতে হলেও আদালতের বিধি নিষেধ মেনে মেলার আয়োজনের জন্য, মাঠে নেমেছেন সবপক্ষ। তাঁদের দাবি, পরিবেশ বিষয়ক যাবতীয় বিধি নিষেধ মেনেই হয়েছে স্টল বুকিং করা হয়েছে। এ বার প্রায় হাজার খানেক স্টল এসেছে মেলায়। স্টল দাতাদের হলফনামা দিতে বাধ্যতামূলক করেছে মেলা কমিটি। বিশ্বভারতীর দাবি, দেশে এই প্রথম কোনও শিশু বান্ধব মেলা হচ্ছে। তার জন্য কমিটি বিনা পয়সায় ৫ হাজার বর্গফুট জায়গা দিচ্ছে মেলার মাঠে। ওই জমিতে গড়ে উঠবে শিশুদের উপযোগী সাতটি স্টল। থাকছে শিশুদের নানা আনন্দ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাও।
ফি বছরের শতাব্দী প্রাচীন এই ঐতিয্যবাহী মেলায় তিন দিন ধরে চলে নানা লোকনৃত্য, বাউল, ফকির, লোকগান এবং যাত্রাভিনয়। মেলামঞ্চে এবং প্রাঙ্গনে বসে লোক সংস্কৃতির আসরও। রাতের অনুষ্ঠান যাতে বাইরে শব্দ দূষণ না করে তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছেন অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা। মেলা কমিটির অন্যতম আহ্বায়ক গৌতম সাহা বলেন, “লোকগান, লোকনৃত্য এবং লোক সংস্কৃতির উৎসব অনেক রাত পর্যন্ত চলে। সন্ধ্যার পরে ওই অনুষ্ঠানগুলি আমরা ইনডোরের মধ্যে রাখার ব্যবস্থা করেছি। ফলে যথারীতি ওই অনুষ্ঠান হবে, পরিবেশের বিধি মেনে। থাকবে পরিবেশ বান্ধব জেনেরেটর।” এদিকে দূষণের বিধি নিষেধ থাকায়, মেলায় সার্কাস না আসার আশঙ্কা করছিল বিভিন্ন মহল। ওই সার্কাসের পক্ষে ম্যানেজার লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘‘পরিবেশের যাবতীয় বিধি নিষেধ মেনে চলার শর্তে আমাদের সার্কাস দেখানোর অনুমতি মিলেছে। এ বার মেলাতে আমরা সাইলেন্সার ব্যবহার করে দু’চাকা এবং চারচাকার খেলা দেখাবো।’’ পৌষমেলায় মোবাইল যোগাযোগ বিছিন্ন নিয়ে গ্রাহকদের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। এ বার মেলা উদ্যোক্তারা জানান, এ বার একটি বেসরকারি মোবাইল সংস্থা বিশেষ ব্যবস্থা করেছে। মেলা ক’ দিন শান্তিনিকেতনে যাতে মোবাইল মারফত যোগাযোগ নিয়ে গ্রাহকদের ভোগান্তি না হয়, সে নিয়ে ওই সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছেন আয়োজকেরা। আয়োজকরা জানাচ্ছেন, অগ্নি নির্বাপণ এবং পরিবেশের যাবতীয় বিধি নিষেধ না মানায়, দীর্ঘ দিন ধরে মেলায় স্টল দেওয়া একাধিক প্রতিষ্ঠিত দোকানদারকে বসতে দেওয়া হয়নি মেলায়। মেলা চত্বরে থাকছে
এটিএম কাউন্টার।
থাকছে ক্যাশলেস সমাজ নিয়ে মানুষদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার উদ্যোগও। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্ত বলেন, “পরিবেশের বিধি এবং আদালতের নির্দেশ মেনেই এ বারের শতাব্দী প্রাচীন পৌষ উৎসব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy