Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Migrant labour

পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম লেখানোর সময় বাড়ল

প্রশাসন সূত্রে খবর, অতিমারি পরিস্থিতিতে জেলায় কম-বেশি ২৪,০০০ পরিযায়ী শ্রমিকের সন্ধান পেয়েছিল শ্রম দফতর।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া, পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:১১
Share: Save:

পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্তিকরণের সময়সীমা বাড়াল বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।

এ বারই প্রথম দুয়ারে সরকার শিবিরে পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্তকরণের প্রক্রিয়া চালু করেছে সরকার। সপ্তম দুয়ারে সরকার শিবিরের প্রচারের মূল বিষয়বস্তু ছিল সেই উদ্যোগই। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, ১-১৬ সেপ্টেম্বর বাঁকুড়ায় দুয়ারে সরকার শিবিরে যত জন পরিযায়ী শ্রমিক নিজেদের নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন, তার থেকে বেশি জমা পড়েছে অন্য বেশ কিছু প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার আবেদনপত্র।

বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বার জেলায় দুয়ারে সরকার শিবিরে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পেতে কম-বেশি ২,৭৯,০০০টি আবেদনপত্র জমা পড়েছে। সব থেকে বেশি জমা পড়েছে শ্রমিকদের বিনামূল্যে সামাজিক সুরক্ষা যোজনা প্রকল্পের আবেদনপত্র। তার পরেই রয়েছে লক্ষ্মীর ভান্ডার। যত জন পরিযায়ী শ্রমিক নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন, তার থেকে বেশি আবেদন জমা পড়েছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে। এই প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্তির সময়সীমা বাড়িয়েছে। ফলে সেই সংখ্যা বাড়বে বলে মনে করছে প্রশাসন।

প্রশাসন সূত্রে খবর, অতিমারি পরিস্থিতিতে জেলায় কম-বেশি ২৪,০০০ পরিযায়ী শ্রমিকের সন্ধান পেয়েছিল শ্রম দফতর। এ বার দুয়ারে সরকার শিবিরে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে নাম নথিভুক্তির জন্য আবেদন জমা পড়েছে ১৭,৭২৭টি। ইতিমধ্যেই ৫,৪০১টি আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। এক আধিকারিক বলেন, “কোভিড পরিস্থিতিতে ভিন্‌ রাজ্যে কাজ ছেড়ে অনেকেই জেলায় ফিরেছিলেন। পরে তাঁদের একাংশ আর বাইরে কাজ করতে যাননি। আমরা চাই, প্রত্যেক পরিযায়ী শ্রমিক সরকারি খাতায় তাঁদের নাম নথিভুক্ত করাক।” বাঁকুড়া ১, ওন্দা, বিষ্ণুপুর ও সোনামুখী ব্লক থেকে বেশি সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক নাম নথিভুক্তির আবেদন করেছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

পুুরুলিয়াতেও পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্তির সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। সোমবার জেলাশাসক রজত নন্দা বলেন, ‘‘আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিযায়ী শ্রমিকেরা নাম নথিভুক্ত করাতে পারবেন। বাংলা সহায়তা কেন্দ্রগুলিতেও নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন তাঁরা।’’

পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্পর্কে নানা তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাঁরা কোথায়, কী কাজ করছেন, কোনও এজেন্টের মাধ্যমে ভিন্ রাজ্যে গিয়েছিলেন কিনা, এমন নানা তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এজেন্ট বা অন্য কোনও ব্যক্তির মাধ্যমে ভিন্ রাজ্যে কাজে গেলে তাঁদের নাম, যোগাযোগের নম্বর এবং শ্রমিক যে সংস্থায় কাজ করতে গিয়েছেন তার নাম, ঠিকানা ও যোগাযোগের নম্বরও তথ্যভান্ডারে রাখা হবে। শিবিরে নাম নথিভুক্তির সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের পাসপোর্ট মাপের ছবি দিতে হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার শিবিরে বিভিন্ন প্রকল্পে মোট আবেদন জমা পড়েছে ২,৫৬,৮৮৬টি। শিবিরে এসেছিলেন ২,৪৩,০১৬ জন। ২৯,৩২৮ জন পরিযায়ী শ্রমিক নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কাশীপুরের বড়দৈকিয়ারি গ্রামের রাজেন্দ্রনাথ মাহাতো বলেন, ‘‘আমি ওড়িশায় কাজ করি। শিবিরে নাম লেখাতে এসেছিলাম।’’ কাশীপুরের আর এক শ্রমিক গণেশ বাউরি বলেন, ‘‘আমি চেন্নাইয়ে কাজ করি। নাম নথিভুক্ত করিয়েছি শিবিরে। এ বার কর্মস্থলে ফিরে যাব।’’ বিরোধীদের দাবি, করোনা-কালে কাজ হারিয়ে ৫০ হাজারের বেশি পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছিলেন। সেই সংখ্যা এখন আরও বেড়েছে। দুয়ারে সরকার শিবিরে যত জনের নাম নথিভুক্ত হয়েছে, প্রকৃত পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা তার চেয়ে ঢের বেশি। পরিযায়ী শ্রমিকেরা এখন ভিন্‌ রাজ্যে কর্মস্থলে রয়েছেন।

(আবেদনপত্রের সংখ্যার তথ্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন সূত্রে পাওয়া। পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষেত্রে তা শেষ তথ্য পাওয়া পর্যন্ত)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

purulia bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE