সিপিএম নেতারা রাতে পঞ্চায়েত অফিসে বসে নথিবদল করছিলেন, শাসকদলের এই অভিযোগে উত্তাল হল মানবাজার পঞ্চায়েত অফিস। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন বিডিও। দু’পক্ষের নেতারাই ঘনিষ্ঠমহলে মানছেন— পুলিশ সময় মতো উপস্থিত না হলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারত। মানবাজার ১ এর বিডিও সত্যজিৎ বিশ্বাস শুক্রবার সমস্ত পঞ্চায়েত সদস্যকে ব্লক অফিসে ডেকে পাঠান। আলাদা ভাবে সকলের সঙ্গে কথাও বলেন।
মানবাজারের তৃণমূল নেতা মানবেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ খবর পাই পঞ্চায়েত অফিস খোলা আছে। কেউ বা কারা গোপনে কিছু কাজ করার চেষ্টা করছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সিপিএমের কয়েক জন নেতা নথিপত্র নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করছেন!’’ তারপরেই শুরু গোলমাল! সিপিএমের মানবাজার লোকাল কমিটির সম্পাদক সজল চক্রবর্তী সে অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর দাবি, ‘‘সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী আবাস গৃহ যোজনা প্রকল্পের উপভোক্তাদের নামের তালিকা ব্লক অফিসে জমা দেওয়ার কথা ছিল। বিডিও জানিয়েছিলেন যে সব পরিবার ইতিপূর্বে ইন্দিরা আবাস গৃহ বা গীতাঞ্জলির প্রকল্পে ঘর পেয়েছেন, সে সব পরিবারের নাম যেন দ্বিতীয় দফায় তালিকায় না ঢোকে। পঞ্চায়েত সদস্যরা ওই তালিকাই পরীক্ষা করছিলেন। তাঁরা নাম সংযোজন বা বাদ দেওয়া কিছুই করেননি।’’ তৃণমূলের লোকেরা মিথ্যে অভিযোগে দলীয় কর্মীদের উপরে চড়াও হন বলে পাল্টা অভিযোগ সজলবাবুর।
পাল্টা মারধরের অভিযোগ এনেছেন তৃণমূল নেতা মানবেন্দ্রবাবুও। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সিপিএম লোকজন জুটিয়ে আমাদের উপরে চড়াও হয়েছিল।’’ জেলা রাজনীতির কারবারীদের মতে, গোলমালের বীজ লুকিয়ে রয়েছে পঞ্চায়েতের মধ্যেই। ১৭ আসনের পঞ্চায়েতে সিপিএম ৯টি ও তৃণমূল ৮টি আসন পেয়েছিল। প্রধান পদটি তপশিলি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। সিপিএমের এমন সদস্য না থাকায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্বেও প্রধান পদটি পান তৃণমূলের বাসন্তী মূর্মু। সিপিএমকে উপপ্রধান পদ পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। এ দিনের ঘটনার পরে বাসন্তীদেবীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি পাঁচটার সময় অফিস থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। পরে কি হয়েছে জানি না।’’
মানবাজার ১ বিডিও সত্যজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস গৃহের প্রস্তাবিত তালিকা প্রায় সমস্ত পঞ্চায়েত জমা দিলেও মানবাজার পঞ্চায়েত পারেনি।’’ রাতে গোলমালের খবর পেয়ে বিবাদমান দু’পক্ষকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে গভীর রাত পর্যন্ত বিডিওকে পঞ্চায়েতে থাকতে হয়। কেউ যাতে পঞ্চায়েতে ভাঙচুর চালাতে না পারেন, সে জন্য পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিডিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy