E-Paper

অবৈধ কয়লা, পোস্টারে নিশানা তৃণমূল সদস্যকে

অবৈধ কয়লা মজুতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না-নেওয়া হলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে জানানোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে পোস্টারে। ঘটনাকে ঘিরে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে শাসকদলের অন্দরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:৩৩
An image of Coal Mine

—প্রতীকী চিত্র।

কয়লা পাচার চলছে এবং টন টন অবৈধ কয়লা মজুত রয়েছে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য ও তাঁর আত্মীয়দের বাড়িতে, এমন অভিযোগ তুলে দুবরাজপুরের যশপুর পঞ্চায়েত এলাকায় বেশ কিছু পোস্টার পড়েছে শনিবার সকালে। কারা এই কাজ করেছেন, সেটা স্পষ্ট না-হলেও পোস্টারে নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলে পরিচয় দেওয়া হয়েছে। শাসকদলের কোন্দলের জেরেই এমন পোস্টার, দাবি স্থানীয়দের একাংশের।

অবৈধ কয়লা মজুতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না-নেওয়া হলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে জানানোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে পোস্টারে। ঘটনাকে ঘিরে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে শাসকদলের অন্দরে। পোস্টারগুলিতে দাবি করা হয়েছে, দুবরাজপুর থানার সালুঞ্চি-পরতপুর গ্রামে কয়লা পাচার চলছে দিনরাত। এছাড়া হাজার হাজার টন কয়লা মজুত রয়েছে পরতপুর গ্রামের শতাধিক বাড়িতে। এমনকি, কয়লা মজুত রয়েছে যশপুর পঞ্চায়েতের এক সদস্য ও তাঁর আত্মীয়দের বাড়িতে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। পোস্টারে আরও লেখা হয়েছে, এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার (অতীতে যাঁর বিরুদ্ধে কয়লা পাচারের অভিযোগ রয়েছে) এবং এলাকার এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা কয়লা মজুত রেখেছেন।

যশপুর অঞ্চলের এই পোস্টার ঘিরেই শোরগোল পড়েছে এলাকায়। স্থানীয় ঘাসবেড়া গ্রামে শনিবার।

যশপুর অঞ্চলের এই পোস্টার ঘিরেই শোরগোল পড়েছে এলাকায়। স্থানীয় ঘাসবেড়া গ্রামে শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।

প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলেও পোস্টারে দাবি করা হয়েছে।ওই পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে, তৃণমূলের যশপুর অঞ্চল সভাপতি মুন্সি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘‘গোটা বীরভূমেই কয়লা পাচার বন্ধ। তার পরেও যে অভিযোগ উঠেছে, সেটা পুলিশ ও দলের উপরতলাকে জানানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কেউ অন্যায় করে থাকলে দল কেন তাঁর দায়িত্বে নেবে?’’

বীরভূম জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, অবৈধ কয়লা রুখতে নিয়মিত অভিযান চলে। এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও স্থানীয়দের একাংশের দাবি, সালুঞ্চি-পরতপুর হয়ে কয়লা পাচারের অভিযোগ নতুন নয়। শাসকদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভাজন আছে বলেই এই অভিযোগ সামনে আসছে। অতীতেও এমনটা লক্ষ করা গিয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরে যশপুর অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধেই ‘দুর্নীতি’-র অভিযোগ তুলে একই ভাবে পোস্টার পড়ার ঘটনা ঘটেছিল। তাঁকে ছাড়াও নিশানা করা হয়েছিল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধানকে। জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ ও সাংসদ শতাব্দী রায়কে উদ্দেশ করে ওই পোস্টারে দাবি করা হয়েছিল, যশপুরের ওই দুই তৃণমূল নেতার বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে। কোনও আলোচনা ছাড়া অঞ্চল সভাপতির ‘রাজত্ব’ চলছে। এর তদন্ত দাবি করা হয়েছিল পোস্টারে।

গত বছর অগস্টে এবং ডিসেম্বরেও অঞ্চল সভাপতির নামে পোস্টার পড়েছিল। সেখানে দুর্নীতির পাশাপাশি প্রকৃত গরিবদের বঞ্চিত করে আবাস যোজনার প্রাপক হিসাবে নিজেদের আত্মীয়দের নাম তুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ছিল। ওই অভিযোগের আদৌ তদন্ত হয়েছে কি না, জানা যায় নি। তবে, যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছলেন অঞ্চল সভাপতি।

এ বার কয়লা মজুতের পোস্টার পড়ল গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘দুর্নীতি বরদাস্ত করবে না দল। সত্যিই যদি কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকে, তাহলে পোস্টার না-সাঁটিয়ে সরাসরি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে লিখিত অভিযোগ করুক।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Illegal Coal Mine TMC Coal Mines Birbhum

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy