Advertisement
E-Paper

দলেরই প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা তৃণমূল সদস্যদের

গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে বিরোধ দেখা দিলে তা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়ার জন্য আগেই পরামর্শ দিয়েছিলেন তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা নেতৃত্ব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৬ ০১:৪৪

গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে বিরোধ দেখা দিলে তা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়ার জন্য আগেই পরামর্শ দিয়েছিলেন তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা নেতৃত্ব।

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে বরদাস্ত করা হবে না তা বারবার জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেত্রীর সেই কথা অবশ্য কানেই তুলছেন না নিচুতলার অনেক তৃণমূল নেতাই। বিরোধের জেরে বছরখানেক আগে বাঁকুড়া জেলার বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতে এক গোষ্ঠীর প্রধান বা উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন অন্য গোষ্ঠীর নেতারা।

এ বার বিরোধী শূন্য রানিবাঁধ ব্লকের রুদড়া পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অনাস্থা আনলেন উপপ্রধান-সহ দলেরই কয়েকজন সদস্য। এই ঘটনায় ফের শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামনে এসে পড়েছে। এই পঞ্চায়েতে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার পিছনে দলের যুযুধান দুই গোষ্ঠীর বিবাদকেই দায়ী করছেন এলাকার তৃণমূল কর্মীরা।

প্রশাসন সূত্রের খবর, পঞ্চায়েতের ১০টি আসনের সবক’টিতেই গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। বিরোধীশূন্য এই পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচিত হন তৃণমূলের শিখারানি মণ্ডল। তৃণমূলের অঞ্চলা মান্ডি উপপ্রধান নির্বাচিত হন। প্রধানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে উপপ্রধান-সহ নয় সদস্য শুক্রবার রানিবাঁধ ব্লক অফিসে গিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন। যদিও এ দিন দুপুরে রানিবাঁধের বিডিও সুমন্ত দেবনাথ বলেন, “রুদড়া পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের চিঠি আমার হাতে আসেনি। তবে প্রধানের বিরোধে অনাস্থা আনা হলে পঞ্চায়েত আইন মেনে যা করণীয় তাই করা হবে।”

রানিবাঁধ ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুনীল মণ্ডলের সঙ্গে দলের যুব সভাপতি চিত্ত মাহাতোর বিরোধ নতুন নয়। গত পঞ্চায়েত ভোট থেকে সমবায় সমিতির নির্বাচনে এই বিরোধ প্রকাশ্যেই দেখা গিয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, রুদড়ার প্রধান ও উপপ্রধান দু’জনেই এলাকার রাজনীতিতে সুনীলবাবুর স্নেহধন্য বলেই পরিচিত ছিলেন। সম্প্রতি নানা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে উপপ্রধানের ‘ঠান্ডা লড়াই’ চলছে। তার জেরেই ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান-সহ ন’জন তৃণমূল সদস্যই প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে অনাস্থা জানিয়েছেন।

উপপ্রধান অঞ্চলা মান্ডি ও পঞ্চায়েত সদস্য অচিন্ত্য বাস্কের অভিযোগ, “এলাকার উন্নয়নের নানা কাজ প্রধান নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে করছেন। কারও সঙ্গে পরামর্শ করার প্রয়োজনবোধ করেন না। অনেক কাজে দুর্নীতি হচ্ছে।” তাঁদের দাবি, বারবার এ ব্যাপারে প্রধানকে সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু তিনি কোনও কথায় আমল দিতে রাজি নন। তাই পঞ্চায়েতের সব সদস্য একজোট হয়ে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছে। যুব তৃণমূলের রুদড়া অঞ্চল সভাপতি সঞ্জয় ধবলদেবের অভিযোগ, “প্রধান হওয়ার পর থেকে শিখারানিদেবী দলের বাকি সদস্যদের বিশেষ পাত্তা দিচ্ছেন না। ক্ষুব্ধ সদস্যেরা তাই বাধ্য হয়ে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন।’’

দুর্নীতি বা স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি প্রধান। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েতের সব সদস্যের মতামত নিয়ে মিটিং করে সব কাজ করা হচ্ছে। তারপরেও ওঁরা কেন এমন মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন, তা ওঁরাই জানেন। এটুকু বলতে পারি, সরকারি নিয়ম মেনে যে কাজ করা হয়েছে তা নথিপত্র দেখলেই প্রমাণ হয়ে যাবে। আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছে বলে শুনেছি। ব্লক অফিস থেকে তবে আমাকে কিছু জানানো হয়নি।” তৃণমূলের রানিবাঁধ ব্লক সভাপতি অবশ্য দাবি করেছেন, “অনাস্থা আনার ব্যাপার আগে থেকে আমি জানতাম না। কেউ এ ব্যাপারে আমার সঙ্গে কোনও আলোচনা করেনি। সমস্যা থাকলে তা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলার পক্ষপাতী আমরা। ওই পঞ্চায়েতের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা হবে।”

TMC party head no-confidence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy