Advertisement
১৭ মে ২০২৪
বিশ্বভারতীতে প্রদর্শনী এবং আলোচনাসভা

হারানো খেলা আবার ফিরে পেতে উৎসব শান্তিনিকেতন

গোল্লাছুটের দুপুর বাঙালির কৈশোর থেকে হারিয়ে গিয়েছে অনেক দিন। মোবাইল গেম-এর রমরমায় দুপুর পালানো ছেলেমেয়েদের কিৎকিৎ, ধাপসা, কুমির ডাঙাও একটু একটু করে ঠাঁই নিচ্ছে স্মৃতির রাজ্যে।

শৈশব: নানুরের একটি বাড়ির ছাদে ‘বুড়ির লাঠি’ খেলায় মেতে নতুন প্রজন্মের এক খুদে। এই ধরনের অনেক খেলার প্রসঙ্গ উঠে আসবে বিশ্বভারতীর শরীর শিক্ষা বিভাগের উৎসব।

শৈশব: নানুরের একটি বাড়ির ছাদে ‘বুড়ির লাঠি’ খেলায় মেতে নতুন প্রজন্মের এক খুদে। এই ধরনের অনেক খেলার প্রসঙ্গ উঠে আসবে বিশ্বভারতীর শরীর শিক্ষা বিভাগের উৎসব।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭ ০১:৩০
Share: Save:

গোল্লাছুটের দুপুর বাঙালির কৈশোর থেকে হারিয়ে গিয়েছে অনেক দিন। মোবাইল গেম-এর রমরমায় দুপুর পালানো ছেলেমেয়েদের কিৎকিৎ, ধাপসা, কুমির ডাঙাও একটু একটু করে ঠাঁই নিচ্ছে স্মৃতির রাজ্যে।

চর্চার অভাবে গ্রাম বাংলার বহু খেলা হারিয়ে যেতে বসেছে। এমন বহু খেলাও রয়েছে, বর্তমান যা ট্র্যাডিশনাল গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস হিসেবে বেশ আদৃত হলেও সেই অর্থে তাদের চর্চা হয় না। সেই সব হারিয়ে যাওয়া বহু খেলাকে এই প্রজন্মের কাছে ফেরাতে এগিয়ে এল বিশ্বভারতী। সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্বভারতীর শারীর শিক্ষা বিভাগের উদ্যোগে, হারিয়ে যাওয়া এমন অনেক খেলা আবার ফিরিয়ে আনতে শুরু হচ্ছে এক দিনের ‘ট্র্যাডিশনাল গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল।’

শুধু প্রদর্শনীর জন্য খেলা নয়, রয়েছে সবিস্তারে আলোচনাও। আর তাই নাটুয়া, রায়বেঁশে, মালখাম থেকে শুরু করে কিতকিত, ডাংগুলি, কুমিরডাঙা, ধাপসা, পিট্টুর মতো হারিয়ে যেতে বসা গ্রামবাংলার খেলাধুলো এই প্রজন্মের কাছে ফিরবে নতুন স্বাদে।

বিশ্বভারতীর শারীর শিক্ষা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সমীরণ মণ্ডল বলেন, “খেলাধুলো ভারতীয় সংস্কৃতির অন্যতম অঙ্গ। গ্রামবাংলা তথা দেশের অন্যান্য প্রান্তের হারিয়ে যেতে বসা খেলাকে সংরক্ষণ করার উদ্দেশ্যে স্পোর্টস ফেস্টিভ্যালের এমন আয়োজন। যার জেরে, নতুন প্রজন্মের কাছে খেলা হারানো খেলা কি এবং কেমন তুলে ধরা যাবে। একটি সংস্কৃতিও চেনা যাবে।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউনেস্কো মনে করছে প্রাচীন খেলা অদৃশ্যমান ঐতিহ্য। প্রয়োজনীয়ও সংরক্ষণ না হলে, অচিরে হারিয়ে যাবে। তাই খেলার বিধি, পোশাক-সহ অন্যান্য বিষয় সংরক্ষণে উদ্যোগী হয়েছে।

বিশ্বভারতীর শ্রীনিকেতনের অধিকর্তা অধ্যাপিকা সবুজকলি সেনের উদ্যোগে বছর খানেক আগে শুধু মাত্র রায়বেঁশে নিয়ে এমন আয়োজন করেছিল শারীর শিক্ষা বিভাগ। ইউনেস্কোর পাশাপাশি সাম্প্রতিক কালে এমন গেমস এবং স্পোর্টসের চর্চা ও ব্যাপ্তি বুঝে, সংশ্লিষ্ট বিভাগের পড়ুয়াদের পাঠ্যক্রমে জায়গা করে নিয়েছে ওই বিষয়।

বিশ্বভারতীর গবেষক শেখ খাবিরুদ্দিন, প্রদীপ টুডুরা জানান, এমন খেলাধুলোর সঙ্গে স্থানীয় ভাষা, গান, নাচ, পোশাক সর্বোপরি একটি সংস্কৃতি জড়িয়ে আছে। এমন উদ্যোগ স্বাভাবিক কারণে সাধুবাদের।

আয়োজক শারীর শিক্ষা বিভাগ এবং প্রাক্তনীদের সংগঠন জানিয়েছে, রায়বেঁশে, মালখাম পাশাপাশি পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রের পক্ষ থেকেও থাকছে তিনটি দলের এমন খেলা। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্ত বলেন, “শুধু মাত্র এই রাজ্যের গ্রাম বাংলার জন্য নয়, দেশের ও বিদেশের বহু পড়ুয়া ও গবেষকেরা উপকৃত হবেন। হারিয়ে যাওয়া খেলার সরঞ্জাম সংগ্রহ করে, একটি প্রদর্শশালা করা নিয়েও চিন্তা ভাবনা করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Santiniketan Defunct Game
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE