Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Purulia Tourism

পুজোয় পালে হাওয়া পুরুলিয়ার পর্যটনে

রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে এখন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নাম পুরুলিয়া। শুধু শীত নয়, গোটা বছরই জেলার একাধিক পর্যটনকেন্দ্রে ভিড় লেগে থাকে।

অযোধ্যা পাহাড়ের চেনা ছবি ফিরছে। নিজস্ব চিত্র

অযোধ্যা পাহাড়ের চেনা ছবি ফিরছে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২০ ০৬:০০
Share: Save:

‘লকডাউন’-এর মন্দা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে পুরুলিয়া জেলার পর্যটন ব্যবসা, তেমনই দাবি সংশ্লিষ্টদের। সৌজন্যে, করোনা-আবহে ‘নিউ নর্মাল’ পুজো। অযোধ্যা পাহাড় থেকে গড়পঞ্চকোট, বড়ন্তি থেকে জয়চণ্ডী পাহাড়, পুজো ঘিরে সর্বত্রই পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়ায় দীর্ঘদিনের খরা কাটছে বলে মত ব্যবসায়ীদের। অনেক দিন পরে স্বস্তিতে গাইড ও গাড়িচালকেরাও।

রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে এখন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নাম পুরুলিয়া। শুধু শীত নয়, গোটা বছরই জেলার একাধিক পর্যটনকেন্দ্রে ভিড় লেগে থাকে। কোভিড-পরিস্থিতিতে যদিও তাতে ভাটা পড়ে। তবে ‘লকডাউন’ পরবর্তী সময়ে পর্যটনকে ঘিরে যাতে জেলার অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারে, তা মাথায় রেখে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রের অতিথি আবাসের কর্মীদের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি, অতিথি আবাসের আশপাশে থাকা খাবারের দোকানের কর্মীদেরও পরীক্ষা করানো হয়। লক্ষ্য, পর্যটকেরা যাতে নির্ভয়ে ঘুরতে আসতে পারেন।

অযোধ্যা পাহাড়ের একটি অতিথি আবাসের মালিক রোহিত লাটা বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের এই পদক্ষেপের বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে জানার পরে, পর্যটকদের অনেকেই এ বারে পুজো কাটাতে পুরুলিয়াকে বেছে নেন। তাতে অনেক দিন পরে জেলার নানা প্রান্তে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। আর শুধু রাজ্য নয়, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা থেকেও পর্যটকেরা আসছেন। সমস্ত ঘরেরই আগামী সপ্তাহের গোড়া পর্যন্ত বুকিং সারা।’’

জেলার একটি প্রথম সারির হোটেল ও রিসর্টের অধিকর্তা রাহুল আগরওয়ালের কথায়, ‘‘পুরুলিয়া শহর, পাহাড় ও মাঠাতেও আমাদের অতিথি আবাস রয়েছে। সব জায়গাতেই পুজো ঘিরে ভাল ব্যবসা হয়েছে। এখন থেকেই শীতের বুকিংও আসতে শুরু করেছে। আমরাও স্বাস্থ্য-বিধি ও পরিচ্ছন্নতার উপরে জোর দিয়েছি।’’

পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের সামগ্রিক অঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের অতিথি আবাসও রয়েছে পাহাড়ে। সেটির দায়িত্বে থাকা সুশান্ত খাটুয়া বলেন, ‘‘হিলটপে বা পাহাড়তলিতে কুমারী কাননে আমাদের দু’টি অতিথি আবাস রয়েছে। সঙ্গে গোটা পাহাড় জুড়ে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৪০-৪২টি অতিথি আবাস রয়েছে। পুজোয় কোথাও কোনও ঘর খালি ছিল না।’’ একই কথা জানান উত্তর-পূর্বে পঞ্চকোট পাহাড়তলির একটি অতিথি আবাসের দায়িত্বে থাকা সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়ও।

এ দিকে, বড়ন্তি ইকো-ট্যুরিজমের ম্যানেজার অঙ্কিত মাজি ও গড়পঞ্চকোট ইকো-ট্যুরিজমের ম্যানেজার বিকাশ মাহাতোরও বক্তব্য, ‘‘ঘর বা ‘টেন্ট’, সবই ভর্তি। শীতের বায়নাও শুরু হয়েছে।’’

পর্যটকদের ভিড় বৃদ্ধি পাওয়ায় খুশি গাইডেরাও। তেমনই এক জন বেণু সেন বলেন, ‘‘দোলের পরে থেকে তো ফাঁকাই বসেছিলাম। এত দিনে পর্যটকেরা আসতে শুরু করায় দু’পয়সার মুখ দেখছি। পুজোর আগে পাহাড়ে জেলা প্রশাসন করোনা পরীক্ষা ব্যবস্থা করেছিল। সেটা অনেক কার্যকরী হয়েছে।’’

করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা যে পর্যটক টানতে কাজে এসেছে, তা তাঁদের কথাতেও স্পষ্ট। হাওড়ার কদমতলা থেকে অযোধ্যা পাহাড়ে বেড়াতে আসা সন্দীপ নন্দীর কথায়, ‘‘এখানকার অতিথি আবাসের কর্মীদের করোনা পরীক্ষা করানো হচ্ছে শুনে সেই ভরসাতেই এসেছি। এখানকার পরিকাঠামোও ভাল।’’ পঞ্চকোট পাহাড়ে বেড়াতে আসা বাচিকশিল্পী শ্রাবন্তী চক্রবর্তীও জানান, পাহাড়ে কোজাগরীর চাঁদের সৌন্দর্যই আলাদা। তা দেখতে বারবার আসা যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Purulia Tourism Jhalda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE