আদালতের পথে ধৃতেরা। —নিজস্ব চিত্র।
রেলের ঠিকাদারি সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত যুবক খুনের দু’মাস পরে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’জনকে ধরল পুলিশ। শুক্রবার শুক্রবার ভোরে রেল শহর আনাড়া থেকে আদ্রা থানার পুলিশ ওই দু’জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা হল পাড়া থানার শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা সুদীপ্ত রায়চৌধুরী ওরফে দীপু এবং পাড়া থানারই বড়াহিড় গ্রামের মাধব চক্রবর্তী ওরফে মাধা। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা ভাড়াটে খুনি। লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে তারাই পিন্টু বর্মা নামে ওই যুবককে খুন করেছিল। শুক্রবারই ধৃতদের রঘুনাথপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক দু’জনের দশ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
জুলাই মাসের মাঝামাঝি প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করা হয় আদ্রার পিন্টু বর্মা নামে এক যুবককে। রেলওয়ে গার্লস হাইস্কুলের পাশের রাস্তায় দুই আততায়ী মোটরবাইকে চেপে এসে খুব কাছ থেকে পরপর গুলি করে পিন্টুকে। পুলিশের দাবি, পেশায় সব্জি ব্যাবসায়ী হলেও পিন্টুর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল রেলের ঠিকাদারি সংক্রান্ত সিন্ডিকেটের সঙ্গে। সিন্ডিকেট সংক্রান্ত বিবাদের জেরে বছর তিনেক আগে সন্ধ্যার ভরা বাজারে খুন হন সঞ্জীব সিংহ ওরফে বাবু নামের আদ্রার এক যুবক। সেই খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিল পিন্টু। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পিন্টুর খুন হওয়ার সঙ্গে সেই ঘটনার কোনও যোগ নেই।
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, মৃত পিন্টু বর্মার ঝাড়খণ্ডের একটি সিন্ডিকেটের হয়ে আদ্রায় রেলের ঠিকাদারির কাজ দেখভাল করতেন। সেই সুবাদেই শত্রুতা হয় অপর গোষ্ঠীর সঙ্গে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘পথের কাঁটা সরিয়ে আদ্রার সিন্ডিকেটের দখল পেতেই খুন করা হয়েছিল বলে মনে হচ্ছে।’’
তবে খুনের নেপথ্যে সিন্ডিকেট সংক্রান্ত বিরোধের আঁচ পেলেও প্রাথমিক ভাবে পুলিশের হাতে কোনও তথ্য প্রমাণ ছিল না। ঘটনার তদন্তকারী অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আদ্রা থানার ওসি পঙ্কজ সিংহকে। গুলি চালানোর ধরন দেখে পুলিশের দৃঢ় অনুমান ছিল, যে ভাড়াটে খুনি দিয়ে কাজ করানো হয়েছে তারা পুরদস্তুর পেশাদার নয়। সেই মতো খোঁজ খবর করে সুদীপ্তর কথা জানতে পারে পুলিশ। সুদীপ্তর মোবাইল ফোনের কললিস্ট বের করে পুলিশ দেখতে পায়, খুনের মিনিট দশেক আগে আদ্রার এক যুবককে ফোন করা হয়েছিল। তাকে জি়জ্ঞাসাবাদ করে টুকরো টুকরো সূত্র মিলিয়ে অনেকটা ধোঁয়াশা কাটে। পুলিশের দাবি, হেফাজতে নেওয়ার পরে সুদীপ্ত ও মাধবকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু তথ্য মিলেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে বিশেষ মুখ খুলতে চাননি পুলিশ আধিকারিকেরা।
রঘুনাথপুরের এসপি রূপেশ কুমার বলেন, ‘‘ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের বিষয়ে জানার চেষ্টা চলছে। ধৃতদের দিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy