একই ওয়ার্ডে প্রাথমিক স্কুল রয়েছে দু’টি। মেরেকেটে ব্যবধান ২০০ মিটার। শুধু তাই নয়, কাছাকাছি রয়েছে আরও তিনটি বেসরকারি স্কুল। লাগোয়া দু’টি ওয়ার্ডে রয়েছে আরও তিনটি সরকারি প্রাথমিক স্কুল। অর্থাৎ, ৫০০ মিটারের মধ্যে সরকারি, বেসরকারি মিলে রয়েছে আটটি স্কুল।
এই অবস্থায় প্রতিটি স্কুলেই কমবেশি পড়ুয়ার অভাব রয়েছে। ফলে উঠছিল স্কুলগুলির সংযুক্তিকরণের দাবি। তাতে সায় দিল শিক্ষা দফতর। রামপুরহাট পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রেডক্রস সোসাইটি জিএসএফ প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়— এই দুটি স্কুল এ বার মিলে যাচ্ছে। বীরভূম জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রাজা ঘোষ বলেন, ‘‘১ অগস্ট থেকে রামপুরহাট রেডক্রস সোসাইটির পড়ুয়ারা রামপুরহাট আদর্শ প্রাথমিক স্কুলে ক্লাস করবে।’’
এতে একাধিক সুবিধে হবে বলে এক মত শিক্ষা দফতর থেকে শুরু করে শিক্ষক, অভিভাবকেরা। কেমন?
প্রথমত, এই সিদ্ধান্তের ফলে দুটি স্কুলকে আলাদা আলাদা করে এস্টাব্লিসমেন্ট খরচ দিতে হবে না। বাড়বে পড়ুয়াদের সংখ্যা। মিড-ডে মিলের খাবারও আগের থেকে ভাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু তাই নয়, এই সংযুক্তিকরণের ফলে এড়ানো গেল একটি বড় সমস্যাও। সংসদের চেয়ারম্যান জানান, ১৯৮১ সাল থেকে জিএসএফ প্রাথমিক স্কুলটি রেডক্রসের জায়গায় চলছিল। রেডক্রসের তরফে অনেক দিন ধরেই ওই স্কুলটি অন্যত্র সরিয়ে যাওয়ার অনুরোধ ছিল। সংযুক্তিকরণের সিদ্ধান্তে সে ব্যাপারেও আর কোনও সমস্যা থাকবে না। তিনি বলেন, ‘‘সে সব দিক বিবেচনা করেই ওই সিদ্ধান্ত।’’
এ দিকে, জিএসএফ স্কুলের পড়ুয়া সংখ্যা ৮৪ জন। স্কুলে প্রধান শিক্ষক-সহ রয়েছেন তিন শিক্ষক। রামপুরহাট আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৩ জন পড়ুয়া। প্রধান শিক্ষককে নিয়ে রয়েছেন চার শিক্ষক। সংযুক্তিকরণের পরে মোট পড়ুয়া সংখ্যা দাঁড়াল ১৩৭। স্কুল সংযুক্তিকরণের নিয়ম অনুযায়ী একই স্কুলে দু’জন প্রধান শিক্ষক রাখা যাবে না। সে জন্য জিএসএফ স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অন্য স্কুলে সরিয়ে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রামপুরহাট আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কবিতা চট্টোপাধ্যায় এমন সিদ্ধান্তে খুশি। তিনি জানান, স্কুলের উপর-নীচে দুটি হলঘর আছে। এ ছাড়াও একটি আলাদা ঘর ও অফিস ঘর আছে। আলাদা রান্নার ঘরও রয়েছে। ফলে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। দুটি স্কুলের অভিভাবকরাও সংযুক্তিকরণের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
দুটি স্কুলই রামপুরহাট পশ্চিম চক্রের অধীন। রামপুরহাট পশ্চিম চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অরুণকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘দুটি স্কুল ২০০ মিটারের মধ্যে। দুটি স্কুলেই শিক্ষক আছে অথচ পড়ুয়ার সংখ্যা কম। সেই জন্য স্কুল দুটিকে একত্রিত করে যাতে ছাত্র সংখ্যা বৃদ্ধি পায় তার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক আরো জানান, এ ছাড়াও রেডক্রস সোসাইটিতে যে স্কুলটি চালু ছিল। সেটি একটি বেসরকারি জায়গায় চালু ছিল। রেডক্রসের পক্ষ থেকে ওই জায়গায় ভালো করে চিকিৎসাকেন্দ্র চালু রাখার জন্য আবেদন করেছিল কর্তৃপক্ষ। তার জন্য স্কুলটি অন্য কোথাও সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার তাঁরা আবেদন জানিয়েছিল। সেই জন্য সব দিক বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy