ফাইল চিত্র
মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের র্যাঙ্কিং (এনআইআরএফ)-এ ১৩ ধাপ পিছিয়ে বিশ্বভারতীর স্থান হয়েছে ৫০ নম্বরে। এক দশক আগে যে প্রতিষ্ঠান ১১ নম্বরে ছিল, তার এই ক্রমাবনতির জন্য পড়ুয়া, প্রাক্তনী থেকে শুরু করে আশ্রমিক সকলেই দায়ী করছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে। শুক্রবার সন্ধ্যায় খোলা চিঠিতে তার জবাব দিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
বিশ্বভারতীর ওয়েবসাইটে সেই চিঠি রয়েছে। উপাচার্য লিখেছেন, ‘‘অবনমনের দায় শুধু কর্তৃপক্ষের নয়। মান ধরে রাখার দৌড়ে পিছিয়ে পড়ার হেতু হল, বহির্বর্তীদের দৃষ্টিকোণে বিশ্বভারতীর ভাবমূর্তি, প্রাক্তনীদের সহযোগের কার্পণ্য এবং বিশ্বভারতীর গঠনমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের যথাযথ প্রতিবেদন অগোচরে থেকে যাওয়া।” কর্মিসভার লাগাতার ‘অনৈতিক’ আন্দোলন, ছাত্র-ছাত্রীদের ‘অমানবিক’ ঘেরাও বিক্ষোভ, কিছু শিক্ষকের আর্থিক অনিয়ম এবং প্রাক্তন কর্তৃপক্ষের ‘বেআইনি’ কাজকর্মের জন্য এই অবনমন বলে তাঁর মত।
বিশ্বভারতীতে দীর্ঘদিনের ‘ঘুঘুর বাসা’ ভাঙতে গিয়ে ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আরও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে মনোনিবেশ করতে পারেননি’ বলেও স্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘উপাচার্যের হাতে কোনও জাদুদণ্ড নেই। যার সাহায্যে দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা বিচ্যুতির গ্লানি মুছে বিশ্বভারতীকে রবীন্দ্র আদর্শে পুনঃপ্রতিষ্ঠা দিতে পারেন।”
এই বিবৃতিকে এক প্রকার দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা হিসেবেই দেখছেন কর্মিসভার সভাপতি গগন সরকার। তিনি বলেন, “নিজেদের দাবি নিয়ে আন্দোলন হয়েছে। সেটা কী ভাবে বিশ্বভারতীর পঠন-পাঠনের মানকে প্রভাবিত করল বুঝলাম না। অন্যদের দোষারোপ করার আগে বিশ্বভারতীর মানোন্নয়নে উনি কী কী কাজ করেছেন, তার নথি বরং প্রকাশ করুন।” নিজের বিবৃতিতে পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে উপাচার্য অভিযোগ করেছেন, গত বছর ২৫ ঘণ্টা ঘেরাওয়ের সময় অসুস্থ শিক্ষকদের ইনসুলিন পর্যন্ত নিতে দেওয়া হয়নি। যা জেনে ওই আন্দোলনে উপস্থিত ছাত্র নেতা সোমনাথ সৌ পাল্টা দাবি করছেন, “সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। ওষুধ তো বটেই, খাবার এবং জল পৌঁছতে সহযোগিতা করেছি।” পড়ুয়াদের অনেকে মনে করেন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, হস্টেলের ওয়াই-ফাই পরিষেবা, গবেষণার পরিবেশের উন্নতির কথা ভাবলে হয়তো ক্রম-তালিকায় এতটা নীচে নামতে হত না।
কর্মীমণ্ডলীর যুগ্ম-সম্পাদক কিশোর ভট্টাচার্য অবশ্য মনে করেন, “উপাচার্যের কথা অস্বীকার করতে পারি না। প্রতিষ্ঠানের উন্নতি করতে হলে সকলকে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে।” বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকারকে জিজ্ঞাসা করা হলেও তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy