Advertisement
১৭ মে ২০২৪

কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে ঘুরল জেলা প্রশাসন

পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী দু’দিনের সফরে শুক্রবার দুপুরে সিউড়ি আসেন কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী। এক দরিদ্র পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ, কর্মিসভা থেকে স্বচ্ছতা অভিযান— শুক্র ও শনিবার একাধিক কর্মসূচি রয়েছে তাঁর।

কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর।

কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ০২:০০
Share: Save:

দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর জেলা সফরের ব্যবধান মাত্র দু’মাসের। তার মধ্যেই প্রশাসনিক ‘অসহযোগিতা’ বদলে গেল ‘সৌজন্যে’।

গত এপ্রিলে একগুচ্ছ দলীয় কর্মসূচিতে সিউড়ি এসেছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা তখন সৌজন্য সাক্ষাৎ তো দূর, উল্টে সিউড়ির সরকারি বাংলো বা সার্কিট হাউসে থাকার খরচও দলের কাছ থেকে আদায় করে ছেড়েছিল। তার বিপরীত ছবি দেখা গেল কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরের ক্ষেত্রে।

পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী দু’দিনের সফরে শুক্রবার দুপুরে সিউড়ি আসেন কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী। এক দরিদ্র পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ, কর্মিসভা থেকে স্বচ্ছতা অভিযান— শুক্র ও শনিবার একাধিক কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যে দলের জমি শক্ত করতেই দলের শীর্ষ নেতাদের এ রাজ্যে পাঠাচ্ছে বিজেপি। তোমরের জেলা সফরও তার অঙ্গ।

তবে রিজিজুর বেলায় যা হয়েছিল, এ দিন ঠিক তার উল্টো ঘটনা ঘটল। প্রশাসনের কর্তারা সার্কিট হাউসে এসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে শুধু দেখাই করলেন না। মন্ত্রীর ইচ্ছেয় সিউড়ির ডিআরডিসি হলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেলা আয়োজন করে সফরকে রীতিমতো সরকারি করে তুললেন। জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলছেন, ‘‘সবটাই রাজ্য প্রশাসনের নির্দেশে হয়েছে।’’

বিজেপি অবশ্য দাবি করছে, প্রথমে এটা সরকারি কর্মসূচি হিসাবেই দেখা হচ্ছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুফল সম্পর্কে জানাতে সিউড়ি জেলা স্কুলের মাঠে ‘মোদী মেলা’ শুরু হওয়ার কথা ছিল শুক্রবার। তোমর সেটার উদ্বোধন করতেন। কিন্তু, প্রথম দিকে জেলা প্রশাসনের অসহযোগিতায় সেই মেলার অনুমতি সময়ে পাওয়া যায়নি। এমনকী দলের তরফেই সার্কিট হাউস বুক করতে হয়। যে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের এখানে মেলা বসানোর কথা ছিল, তাদের তরফেও একই দাবি করা হয়েছে। পরে ড্যামেজ কন্ট্রোল করে প্রশাসন। যদিও জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলছেন, ‘‘বৃহস্পতিবার সকালেই মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেটা নির্দিষ্ট সংস্থাকে মেল ও ফোন করে জানানো হয়েছিল।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাজ্য পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকেই এই বার্তা জেলা প্রাশাসনের কাছে এসেছিল যে, মাননীয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের সঙ্গে দেখা করতে এবং কাজ দেখতে চান। তড়িঘড়ি সব ব্যবস্থা সেরে ফেলে জেলা প্রশাসন। ডাকা হয়ে জেলার বেশ কিছু মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও সঙ্ঘ সমবায়কে।

শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সার্কিট হাউস নেমে প্রথমে কড়িধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোড়া গ্রামের এক প্রান্তিক পরিবার মন্টু বাগদির বাড়িতে তাঁর মধ্যাহ্নভোজনের কথা থাকলেও মন্ত্রী সেখানে প্রথমে না গিয়ে সরাসরি প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন ডিআরডিসি হলে আসেন। আগাগোড়া সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক, প্রশাসনের অন্য শীর্ষ আধিকারিকরাও। স্বনির্ভর দলের কাজ কেমন চলছে। স্বচ্ছ ভারত মিশনের কাজ কেমন হচ্ছে, বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। দু’টো থেকে প্রায় সোওয়া তিনটে পর্যন্ত বৈঠকের পরে জেলার কাজের গতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন নরেন্দ্র সিংহ তোমর।

সেখানে থেকে বেরিয়ে কড়িধ্যা যান। বিকেলে রামকৃষ্ণ সভাগৃহে মহিলা মোর্চার সঙ্গে বৈঠক করেন। আজ, শনিবার সকালে শহরে স্বচ্ছ ভারত অভিযানে যোগ দেবেন।

নেই বিদ্যুৎ। এলাকার বিদ্যুৎবাহী খুঁটি ভেঙে বিপাকে নলহাটি থানার ইন্দ্রডাঙায় অবস্থিত হিমঘর। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই খুঁটি ভাঙে। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত হিমঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার আশ্বাস মিলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE