রাইপুরে রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
বিশ্ব আদিবাসী দিবসে রবিবার দুই জেলায় নানা অনুষ্ঠান হয়ে গেল। বরাবাজারের সিন্দরি অঞ্চলের শাশাংডি গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র লাগোয়া জায়গায় শতাধিক আদিবাসী নারী-পুরুষ সমবেত হয়েছিলেন। ‘মুলুঃ ইপিল রাস্কা মহল গাঁওতা’-র উদ্যোগে সারাদিন নাচ-গান ও খেলাধুলোর প্রতিযোগিতা হয়। চলে আলোচনাসভাও।
গাঁওতার সদস্য জোয়েল টুডু, বৈদ্যনাথ মুর্মু বলেন, ‘‘৯ অগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস ঘোষণা করলেও অনেকেই এর খোঁজ রাখেন না। মূলত আদিবাসীদের অধিকার রক্ষায় সরকারি স্তরে বিভিন্ন প্রকল্প এবং সুযোগ সুবিধা থাকলেও অধিকাংশ এর সুফল পান না। আদিবাসীদের অধিকার রক্ষায় কী ধরনের সুযোগ রয়েছে, কী ভাবে তা পাওয়া সম্ভব আমরা এগুলি আলোচনা করেছি।’’ স্থানীয় চিকিৎসক তথা অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা শ্যামাপদ হেমব্রম অভিযোগ করেন, ‘‘আদিবাসীদের জমি সাধারণ নিয়মে উচ্চ সম্প্রদায়ের লোকেরা কিনতে পারেন না। কিন্তু বিভিন্ন কৌশলে আদিবাসীদের জমি বেহাত হয়ে যাচ্ছে। আদিবাসীদের উন্নয়নের প্রকল্পগুলি থেকেও এক শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের অসহযোগিতায় আদিবাসীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। এ দিন স্বাস্থ্য শিবিরে অনেকেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। আদিবাসীদের প্রাচীন প্রথা মেনে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয়। একটি পুকুরে হাঁস ছেড়ে দিয়ে জলে নেমে ওই হাঁস ধরা, দৌড়, তিরন্দাজি প্রভৃতি প্রতিযোগিতা হয়। আদিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে এ দিন বিকেলে মানবাজারে বাইক নিয়ে একটি মিছিল হয়। বাইকের সামনে আদিবাসীদের বিভিন্ন দাবির সমর্থনে প্ল্যাকার্ড লাগানো ছিল।
নিতুড়িয়ায় এ দিন খেরওয়াল সমন্বয় সমিতি ও তেলকুপি বারণী ঘাট কমিটির উদ্যোগে একটি অনুষ্ঠান হয়। এ দিন বেলায় প্রায় এক হাজার আদিবাসী মানুষ নিতুড়িয়ার পারবেলিয়া থেকে মিছিল করে আসেন সড়বড়ির কমিউনিটি হল ‘সম্প্রীতি সদনে’। সেখানে আলোচনাসভা হয়। উপস্থিত ছিলেন রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি ও পাড়ার বিধায়ক উমাপদ বাউরি। উদ্যোক্তাদের তরফে রাজেন টুডু, বেল টুডুরা অভিযোগ করেন,দেশ স্বাধীন হলেও আদিবাসী সম্প্রদায় এখনও ব্রাত্য রয়ে গিয়েছে। শিক্ষা থেকে শুরু করে কর্মসংস্থান সব ক্ষেত্রেই আদিবাসীরা বঞ্চিত। এ ছাড়াও পাশ্চাত্য সংস্কৃতি আদিবাসী সম্প্রদায়ের নিজস্ব সংস্কৃতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে আলোচনাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বক্তারা।
বাঁকুড়ার রাইপুর ও সারেঙ্গা থানা পৃথক ভাবে ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। এ দিন প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের খেলা হয়। সারেঙ্গা থানার উদ্যোগে আয়োজিত ফুটবল প্রতিযোগিতায় আটটি দল যোগ দেয়। রবিবার সারেঙ্গা মিশন ময়দানে এই প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলাটি হয়। খেলা শেষে আদিবাসী মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
অন্যদিকে রাইপুর থানার উদ্যোগে আয়োজিত ফুটবল প্রতিযোগিতাতেও মোট আটটি দল খেলে। খেলা শেষে রাইপুরের মণ্ডলকুলি রাজলক্ষ্মী উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের মাঠে থানার তরফে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে আদিবাসী মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ দিন রাইপুর বাজারে আদিবাসী দিবস উপলক্ষে রাইপুর পঞ্চায়েতের তরফে মিছিল করে শহর পরিক্রমা করা হয়। মিছিল শেষে রাইপুর বাজারে একটি পথসভার আয়োজন করা হয়। শতাধিক মানুষ এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। রাইপুর কৃষ্ণমোহিনী হাইস্কুলেও একটি আলোচনা করে রাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy