Advertisement
E-Paper

অভিযুক্তদের ধরতে সালুঞ্চি গ্রামে হানা

তরুণ সাব ইনস্পেক্টর অমিত চক্রবর্তী খুনের তদন্তে নড়েচড়ে বসল বীরভূম পুলিশ। ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে শুক্রবার বিকেলে খোদ জেলার পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে এলাকায় ধরপাকড়ের অভিযান চালাল পুলিশ। দুবরাজপুর থানার ওই পুলিশ আধিকারিকের খুনে মূল অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূল নেতা আলিম শেখকে অবশ্য পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৪ ০২:০৯
অভিযানের পরে। বাড়িতে ভাঙচুরের চিহ্ন দেখাচ্ছেন ফেরার তৃণমূল নেতার স্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র

অভিযানের পরে। বাড়িতে ভাঙচুরের চিহ্ন দেখাচ্ছেন ফেরার তৃণমূল নেতার স্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র

তরুণ সাব ইনস্পেক্টর অমিত চক্রবর্তী খুনের তদন্তে নড়েচড়ে বসল বীরভূম পুলিশ। ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে শুক্রবার বিকেলে খোদ জেলার পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে এলাকায় ধরপাকড়ের অভিযান চালাল পুলিশ। দুবরাজপুর থানার ওই পুলিশ আধিকারিকের খুনে মূল অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূল নেতা আলিম শেখকে অবশ্য পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে, এসআই খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ এ দিন দুবরাজপুরের সালুঞ্চি গ্রাম থেকে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার ও আটক করেছে। তাঁরা কারা পুলিশ তা রাত পর্যন্ত স্পষ্ট করেনি। এ দিনের অভিযানের পরে বাসিন্দাদের একাংশ পুলিশের বিরুদ্ধে তল্লাশির নামে অত্যাচার চালানোর অভিযোগও তুলেছেন। এমনকী, তাঁদের দাবি, তল্লাশি চলাকালীন পুলিশ গ্রামের মেয়েদেরও মারধর করে। পুলিশ অবশ্য সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই পাল্টা দাবি করেছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত ৩ জুন দুবরাজপুরের যশপুর পঞ্চায়েতের গোপালপুর গ্রামে পুকুর সংস্কার করাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও সিপিএমের সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পোঁছে ওই সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমার আঘাতে মারাত্মক জখম হয়েছিলেন দুবরাজপুর থানার টাউনবাবু অমিত চক্রবর্তী। দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অমিতবাবুর ৫৫ দিনের লড়াই শেষ হয় ২৮ জুলাই। অমিতবাবুর বাড়ি হুগলির চুঁচুড়ার রথতলায়।

ওই ঘটনায় পুলিশ আগেই ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। অমিতবাবুর মৃত্যুর পরে খুনের মামলাও রুজু হয়। কিন্তু গ্রেফতার হয়েছিলেন মাত্র ১৭ জনই। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই ধৃতদের অধিকাংশই নিরপরাধ ব্যক্তি। এমনকী, তালিকায় নাম থাকা নেতাদের অনেককেই পুলিশ রাজনৈতিক চাপে গ্রেফতার করেনি বলেও বাসিন্দাদের দাবি। যাঁদের মধ্যে সব থেকে বড় নাম দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আলিম শেখ। অমিতবাবু জখম হওয়ার পর থেকেই জেলায় পুলিশের একাংশের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। অনেকের মনোবল চিড় ধরে বলেও পুলিশের সূত্রের খবর। সেই ক্ষোভ আরও বেড়ে যায় ওই তরুণ পুলিশ অফিসারের মৃত্যুর পরে। বেশ কিছু দিন ধরেই বিষয়টি যেন ঠান্ডাঘরে চলে গিয়েছিল। তার পরে আলিমের গ্রাম সালুঞ্চিতে পুলিশের এই হঠাৎ অভিযান।

স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন জেলার এসপি অলোক রাজোরিয়ার নেতৃত্বে বিকেল সাড়ে ৪টে থেকে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সালুঞ্চি গ্রামে পুলিশি অভিযান চলে। ফেরার অভিযুক্তদের কাউকেই অবশ্য ধরতে পারেনি পুলিশ। যদিও বাসিন্দাদের দাবি, আলিম শেখের বৃদ্ধ বাবা জরদীশ শেখ-সহ বেশ কয়েক জনকে পুলিশ গ্রাম থেকে তুলে এনেছে। সন্ধ্যায় ওই গ্রামে গিয়ে দেখা গেল পুলিশি অভিযানে গ্রামবাসীদের একাংশ রীতিমতো ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ বিনা প্ররোচনায় তাঁদের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে। মারধরও করেছে। ভাঙচুরের স্পষ্ট চিহ্ন ছিল আলিম শেখের বাড়িতে। চারদিকে ছড়িয়ে আসবাবপত্র। ফেরার ওই তৃণমূল নেতার স্ত্রী রোশনা বিবির দাবি, “স্বামীর খোঁজে এসে পুলিশ আমার উপরে অকথ্য অত্যাচার চালিয়েছে। গোটা ঘর তছনচ করেছে। শ্বশুরকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। তাঁকে তুলেও নিয়ে গিয়েছে।” ঘরে তল্লাশি চালানোর সময়ে কোনও মহিলা পুলিশ ছিল না বলেই তাঁর দাবি। প্রায় একই সুর গ্রামের অন্য বাসিন্দাদের একাংশেরও। তাঁদের মধ্যে জসিম শেখ, জব্বর শেখ, রেজাউল করিমদের অভিযোগ, অমিতবাবুর খুনে অভিযুক্ত না হলেও পুলিশ গ্রামের বহু নিরপরাধ বাসিন্দার বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে।

সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন অলোক রাজোরিয়া। তিনি বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজেই এ দিন সালুঞ্চিতে অভিযান চলেছে। দু’একজনকে ধরাও হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে তাদের যোগ কতটা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তল্লাশি অভিযানে বাসিন্দাদের একাংশ পুলিশের বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগ তুলেই থাকেন। ওখানে তেমন কিছু ঘটেনি।”

rampage rampage dubrajpur dubrajpur police station police station amit chakraborty amit chakraborty murder murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy