Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ বার এগারোটি পঞ্চায়েতেও বিডিও স্যারের প্রশিক্ষণ শিবির

গোটা ব্লকে স্নাতক ডিগ্রিধারী বেকার দেড় হাজার। ওই স্তরে পড়াশোনায় রয়েছেন আরও কয়েকশো। এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে এলাকার বেকার যুবক-যুবতীদের পাশে তিনি আগেই দাঁড়িয়েছিলেন। চাকরির প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে ওই যুবক-যুবতীদের আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী করেছে তাঁর বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবির।

শিবিরে বিডিও-র কথা মনযোগ দিয়ে শুনছেন শিক্ষার্থীরা। নিজস্ব চিত্র।

শিবিরে বিডিও-র কথা মনযোগ দিয়ে শুনছেন শিক্ষার্থীরা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
লাভপুর শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৭
Share: Save:

গোটা ব্লকে স্নাতক ডিগ্রিধারী বেকার দেড় হাজার। ওই স্তরে পড়াশোনায় রয়েছেন আরও কয়েকশো।

এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে এলাকার বেকার যুবক-যুবতীদের পাশে তিনি আগেই দাঁড়িয়েছিলেন। চাকরির প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে ওই যুবক-যুবতীদের আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী করেছে তাঁর বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবির। সোমবার প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন এ বার এলাকার ১১টি পঞ্চায়েতেই ওই প্রশিক্ষণ শিবির চালু করলেন লাভপুরের বিডিও জীবনকৃষ্ণ বিশ্বাস। এলাকার বেকার ছেলেমেয়েদের চাকরি পাওয়ার যোগ্য করে তুলতে পারিশ্রমিকে সেখানে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। লাভপুরের ঘরের ছেলে, বিশিষ্ট সাহিত্যিক প্রয়াত তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে পঞ্চায়েত স্তরের ওই সব শিবিরগুলির নাম কোনওটির ‘গণদেবতা’, কোনওটির বা ‘পঞ্চগ্রাম’ প্রভৃতি উপন্যাসের নামে রাখা হয়েছে। প্রতি শনিবার ক্লাস হবে। প্রশিক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জীবনবাবুর শিক্ষার্থীদেরই। মাসে এক দিন পরিদর্শনে যাবেন জীবনবাবু।

কী শেখানো হবে ওই শিবিরে?

উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর ছেলেমেয়েরা কীভাবে ভবিষত্‌ কর্মজীবনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করবেন, তার দিশা দেখানো হবে। শুধু কর্মসংস্থানই নয়, নিজ নিজ প্রবণতা অনুযায়ী বেকারেরা প্রশিক্ষণ এবং সরকারি ভর্তুকিযুক্ত ঋণ নিয়ে স্বনির্ভর প্রকল্প গড়তে পারেন, দেওয়া হবে তার সুলুক সন্ধানও। কেন এই উদ্যোগ? জেলা পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, জেলার অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলির অন্যতম হল এই লাভপুর। রাজনৈতিক সংঘর্ষের পাশাপাশি কোনও কর্মসংস্থানের সঙ্গে যুক্ত করতে না পেরে হতোদ্যম বেকারদের একাংশ নিজেদের নানা অসামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে ফেলছে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে দিয়ে করানো ব্লক প্রশাসনের একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষার রিপোর্টও বলছে, বর্তমানে ব্লকে স্নাতক ডিগ্রিধারী বেকারের সংখ্যা ১৫৬৮ জন। ওই স্তরে পড়াশোনা করছে আরও ৭৩৭ জন। ওই সব যুবক-যুবতীরা যাতে সমাজের মূলস্রোত থেকে ছিটকে না যায়, তার জন্যই এই উদ্যোগ বলে ব্লক প্রশাসনের দাবি।

সোমবার জামনা পঞ্চায়েতের শিবিরে হাজির হয়েছিলেন লাভপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সুমঙ্গল মাঝি, কান্দরা কলেজের প্রথম বর্ষের ফুলেশ্বরী সর্দার, অভিভাবক সুনীল সাহা, অর্চনা মেটেরা। শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি করে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার বই। তার পর বিডিও-র মুখে সব শুনে কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে যান সকলে। একসুরে তাঁরা বলেন, “বিডিও স্যারের পরিকল্পনা আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখাল।” বিডিও-র সঙ্গে হাজির ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক মনিরুল ইসলাম, লাভপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কাবেরিকা গুঁই-সহ ব্লক স্তরের বিভিন্ন আধিকারিকেরা। বিধায়ক ফোন ধরেননি। সভাপতি বলেন, “কথায় আছে, অলস মস্তিক শয়তানের কারখানা। বিডিও-র পরিকল্পনায় বেকারেরা দিশা পাবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস। তাই ওই উদ্যোগ সফল করতে আমরা বিশেষ ভাবে সচেষ্ট হব।” অন্য দিকে, জীবনবাবু বলছেন, “মানসিক অবসাদ ভুলে যুবক-যুবতীরা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেলেই আমার শ্রম সার্থক হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE