Advertisement
১৮ মে ২০২৪
বাঁকুড়ায় কাজ চলছে ঢিমেতালে

গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন দ্রুত শেষে জোর প্রশাসনের

কাজ চলছে ঢিমেতালে। ক্ষোভ বাড়ছে গ্রামাঞ্চলে। তাই গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করায় জোর দিল বাঁকুড়া জেলা পরিষদ। পাশাপাশি বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সমস্যা দ্রুত মেটাতে হেল্পলাইন নম্বরও চালু করতে চলেছে জেলা পরিষদ। বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদের ক্ষুদ্র কুটির ও বিদ্যুৎ দফতরের স্থায়ী সমিতির একটি বৈঠক হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:২৩
Share: Save:

কাজ চলছে ঢিমেতালে। ক্ষোভ বাড়ছে গ্রামাঞ্চলে। তাই গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করায় জোর দিল বাঁকুড়া জেলা পরিষদ। পাশাপাশি বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সমস্যা দ্রুত মেটাতে হেল্পলাইন নম্বরও চালু করতে চলেছে জেলা পরিষদ।

বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদের ক্ষুদ্র কুটির ও বিদ্যুৎ দফতরের স্থায়ী সমিতির একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী, বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ সুখেন বিদ, জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় ছাড়াও জেলা বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, বাঁকুড়ায় আংশিক ভাবে প্রায় ২০৩৪ টি মৌজায় বিদ্যুদয়নের কাজ এখনও বাকি রয়েছে। প্রায় ৬০ হাজার বিপিএল এবং এপিএল পরিবার এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ পায়নি। গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছতে বছর ছ’য়েক আগে শুরু হয়েছিল গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্প। এই প্রকল্পে বিপিএল পরিবার বিনামূল্যে বিদ্যুৎ পেয়ে থাকে। আর এপিএল পরিবারকে টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে হয়। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই এই প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এ দিনের বৈঠকে।

সুখেনবাবু বলেন, “ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। তবে কাজ এগোচ্ছে ঢিমে তালে। গতি বাড়াতেই প্রকল্পের কাজ শেষ করার জন্য নির্দিষ্ট সময় ধার্য করেছি আমরা।” বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত জেলার ১৫৩৪টি মৌজায় সম্পূর্ণ ভাবে বিদ্যুৎ পৌঁছনো সম্ভব হয়েছে। কাজের এই গতি বজায় থাকলে আগামী ১০ মাসে কী করে প্রায় ২ হাজার মৌজায় বিদ্যুদয়ন সম্ভব, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা। সুব্রতবাবুর কটাক্ষ, “এ তো দেখছি ‘স্বপ্নে পোলাও রাঁধা’র সামিল! তাই ‘যত খুশি ঘি ঢালা’ হচ্ছে। ১০ মাসে ২ হাজার মৌজায় বিদ্যুৎ দেওয়ার মতো পরিকাঠামোই নেই জেলায়।”

জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তীর অবশ্য দাবি, কলকাতা থেকে দু’টি নতুন এজেন্সি নিয়ে এসে এই জেলায় গ্রামীণ বিদ্যুদয়নের কাজ করানো হচ্ছে। ফলে পরিকাঠামোগত কোনও সমস্যা থাকবে না। খাতড়া থেকে রাইপুর পর্যন্ত প্রায় ৩৩ কিলোমিটার রাস্তায় নতুন করে বিদ্যুদয়ন হয়েছে বলেও তিনি জানান। জেলা বিদ্যুৎ দফতরের প্রজেক্ট ম্যানেজার সত্যবান মণ্ডল জানান, দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য প্রায় ৩০২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। জেলা বিদ্যুৎ দফতরের রিজিওনাল ম্যানেজার চন্দ্রশেখর সেনগুপ্ত জানান, এই টাকায় বিষ্ণুপুর ডিভিশনে দু’টি ও বাঁকুড়া ডিভিশনে একটি নতুন সাব স্টেশন গড়া হবে। এর ফলে জেলায় ভোল্টেজ তুলনামূলক ভাল হবে। এ ছাড়াও পুরনো তার পাল্টানো, নতুন খুঁটি বসানোর মতো কাজে এই টাকা ব্যয় করা হবে।

উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করে টাকা জমা দেওয়ার পরেও মাসের পর মাস সংযোগ না মেলায় ক্ষুব্ধ বাঁকুড়া জেলার বহু মানুষ। এ নিয়ে সম্প্রতি আন্দোলনে নেমেছে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সংগঠন ‘অ্যাবেকা’। কর্মাধ্যক্ষ সুখেনবাবু বলেন, “কোথায় সমস্যা হচ্ছে, তা জানতে ১০ দিন পরে আরও একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। গত তিন মাসে জেলায় কত আবেদন জমা পড়েছে এবং কত জন বিদ্যুতের সংযোগ পেয়েছেন, সেই পরিসংখ্যানও দফতরের আধিকারিকদের জেলা পরিষদে জমা করতে বলা হয়েছে। গ্রাহকদের স্বার্থে আমরা দ্রুত একটি হেল্পলাইন চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শীঘ্রই হেল্পলাইন নম্বর প্রকাশ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE