Advertisement
০৪ মে ২০২৪

জামাই খুনের নালিশ, ধৃত শাশুড়ি

জামাইকে খুন করে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল শাশুড়ির বিরুদ্ধে। থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরের দিনই জামাইয়ের গ্রামে মীমাংসা করতে গিয়ে সেই শাশুড়ি ও তাঁর জনাকয়েক পরিজন গ্রামবাসীর হাতে ঘেরাও হলেন। তাঁদের উদ্ধার করতে গিয়ে ঘেরাও হলেন পুলিশ কর্মীরাও। শেষে শাশুড়ি ও তাঁর পরিজনদের আটক করে তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে লিখিত ভাবে জানানোর পরে পুলিশ কর্মীরা ছাড়া পেলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৪ ০০:১৭
Share: Save:

জামাইকে খুন করে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল শাশুড়ির বিরুদ্ধে। থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরের দিনই জামাইয়ের গ্রামে মীমাংসা করতে গিয়ে সেই শাশুড়ি ও তাঁর জনাকয়েক পরিজন গ্রামবাসীর হাতে ঘেরাও হলেন। তাঁদের উদ্ধার করতে গিয়ে ঘেরাও হলেন পুলিশ কর্মীরাও। শেষে শাশুড়ি ও তাঁর পরিজনদের আটক করে তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে লিখিত ভাবে জানানোর পরে পুলিশ কর্মীরা ছাড়া পেলেন।

মঙ্গলবার রঘুনাথপুর থানার ধটাড়া গ্রামের ঘটনা। বেলা থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত ঘেরাও থাকার পরে পুলিশ আটক ছ’জনকে থানায় নিয়ে যান। পরে মৃত জিতেন মুদির (২১) শাশুড়ি বিরলা মুদিকে পুলিশ গ্রেফতার করার কথা জানায়। নিতুড়িয়ার রাধামাধবপুর গ্রামে তাঁর বাড়ি। পুলিশ বাকি পাঁচজনকে আটক করে রেখেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগে রাধামাধবপুর গ্রামের মনতোষীর সঙ্গে ধটাড়া গ্রামের বাসিন্দা পেশায় ট্রাক্টর চালক জিতেন মুদির বিয়ে হয়েছিল। মনতোষী কিছু দিন আগে বাপের বাড়ি যান। শনিবার তাঁকে আনতে রাধামাধবপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন জিতেন। সেখানেই তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটে। সেই রাতেই তাঁর দেহ দাহ করা হয়। ওই দাহ করে দেওয়া নিয়েই ঘোঁট পাকায়।

জিতেনের মা কালোমণি মুদির দাবি, “ছেলেকে খুন করে প্রমাণ লোপাটের জন্যই দেহটি দাহ করে দেওয়া হয়। তারপরে আমাদের ছেলে আত্মহত্যা করে মারা গিয়েছে বলে খবর পাঠায়।” রবিবার ধটাড়া গ্রামের জনা পঞ্চাশ বাসিন্দাকে নিয়ে কালোমণিদেবী নিতুড়িয়া থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে অহিদ আনসারি বলেন, “রবিবার পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। সোমবার যেতে বলেছিল। সেই মতো সোমবার থানায় কালোমণিদেবী পুত্রবধূ, তাঁর মা ও দুই আত্মীয়ের বিরুদ্ধে ছেলেকে খুন করে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ করেন।”

জিতেনের বাড়িতে কয়েকজনকে নিয়ে বিরলাদেবী এসেছেন শুনে গ্রামবাসীরা জড়ো হয়ে তাদের ঘেরাও করেন। কালোমণিদেবীর দাবি, “ছেলেকে খুন করার অভিযোগ দায়ের করার পরেই ওঁরা মীমাংসা করতে গ্রামে এসেছিল।” বস্তুত গ্রামের ছেলেকে খুনের অভিযোগে মূল অভিযুক্তকে এলাকায় দেখতে পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামে গেলে পুলিশের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা। পরে রঘুনাথপুর ও নিতুড়িয়া থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী গ্রামে যায়। তাঁরা শেষ পর্যন্ত গ্রামবাসীদের দাবি মেনে লিখিত ভাবে আশ্বাস দিয়ে বিরলাদেবী-সহ তাঁর ছ’জন পরিজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।

তবে বিরলাদেবী এ দিন দাবি করেছেন, “জামাইকে খুন করা হয়নি। সে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সঙ্গে সঙ্গে জামাইয়ের বাড়িতে খবর পাঠানো হয়। তাঁরা শনিবার রাতেই রাধামাধবপুর গ্রামে আসেন। তাঁদের সম্মতিতেই জামাইয়ের দেহ দাহ করা হয়।” তাঁর আক্ষেপ, এখন জিতেনের বাড়ির লোকজন পুরো ঘটনা অস্বীকার করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, সব সম্ভাবনা মাথায় রেখে তদন্ত শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bankura murder mother in law
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE