Advertisement
E-Paper

জল নেই দু’টি ওয়ার্ডে, সিউড়িতে পথ অবরোধ

জল সরবরাহর প্রধান পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে শহরের দু’টি ওয়ার্ডে দু’ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পানীয় জল আসছিল না। অভিযোগ, বারবার দরবার করেও তাতে কান দেয়নি তৃণমূল পরিচালিত সিউড়ি পুরসভা। শেষমেশ ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙল পুরবাসীর। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই জলের দাবিতে ব্যস্ত সিউড়ি-সাঁইথিয়া সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানালেন ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের একাংশ। জেলা সদর সিউড়ির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ওই ঘটনায় অবরোধে সামিল হয়ে ছিলেন মহিলারাও। প্রায় চার ঘণ্টা অবরোধের পরে পুলিশ-প্রশাসনের আশ্বাসে বাসিন্দারা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৪ ০০:৩৩
ব্যারিকেড করে পথ আটকে রেখেছেন বাসিন্দারা।

ব্যারিকেড করে পথ আটকে রেখেছেন বাসিন্দারা।

জল সরবরাহর প্রধান পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে শহরের দু’টি ওয়ার্ডে দু’ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পানীয় জল আসছিল না। অভিযোগ, বারবার দরবার করেও তাতে কান দেয়নি তৃণমূল পরিচালিত সিউড়ি পুরসভা। শেষমেশ ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙল পুরবাসীর। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই জলের দাবিতে ব্যস্ত সিউড়ি-সাঁইথিয়া সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানালেন ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের একাংশ। জেলা সদর সিউড়ির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ওই ঘটনায় অবরোধে সামিল হয়ে ছিলেন মহিলারাও। প্রায় চার ঘণ্টা অবরোধের পরে পুলিশ-প্রশাসনের আশ্বাসে বাসিন্দারা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে খবর, পূর্ত দফতর থেকে রাস্তা সারানোর কাজ করতে গিয়ে প্রধান পাইপ কাটা পড়ায় সিউড়ি ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সর্দার পাড়া এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু অংশে বেশ কয়েক দিন ধরে জল পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ। আন্দোলনকারীদের দাবি, এমনিতেই সিউড়িতে রোজদিনের জলসঙ্কট রয়েছে। পুরসভা দিনে যে দু’বার জল দেয়, তা পর্যাপ্ত নয়। তার উপরে গত ২০-২২ দিন ধরে সেই পরিষেবাও পুরোপুরি নয়। অভিযোগ, এ ব্যাপারে স্থানীয় কাউন্সিলর থেকে ও পুর কর্তৃপক্ষ, বারবার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তাই শেষ পর্যন্ত পথ অবরোধের সিদ্ধান্ত নিতে তাঁরা বাধ্য হয়েছেন।

১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সর্দার পাড়ার বাসিন্দা, রবি সর্দার, রমা দে, লিনা বিশ্বাস, নেপি হাজরারা বলেন, “জলের যে কী কষ্ট, তা বলে বোঝানো যাবে না। এই গরমে পুরসভা দিনে দু’বার অল্প পরিমাণ জল দেয়। তাতে প্রয়োজন মেটে না। কোনও কোনও দিন আবার একবারও জল মেলে না। ফলে জল সংগ্রহ করতে গিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যেই ঝগড়া-ঝাঁটি লেগে যায়।” এই পরিস্থিতিতে টানা এত দিন ধরে জল বন্ধ থাকায় এলাকার মানুষের দুর্ভোগের অবস্থা চরমে পৌঁছেছে বলে খবর। এ ভাবে দিনের পর দিন পরিষেবা বন্ধ থাকা কোনও ভাবে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু কাউন্সিলর বা পুর কর্তৃপক্ষ তা নিয়ে কান দেওয়াতেই তাঁরা শেষমেশ অবরোধে সামিল হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।


পাইপ ফেটে জল জমা হয়েছে রাস্তায়।

যদিও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের পূর্ণিমা মাহারার দাবি, দিন দশেক আগেই ওই এলাকায় মাটি খোঁড়াখুঁড়ি করার সময় পাইপ কাটা পড়েছিল। তার পর থেকেই জল পরিষেবা ব্যাহত হয়ে পড়ে। পূর্ণিমাদেবী বলেন, “পরের দিনই এ ব্যাপারে পুরপ্রধানকে লিখিত ভাবে সব জানিয়েছিলাম। গত রবিবার পূর্ত দফতরের দুই আধিকারিক ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করে গিয়েছেন। শীঘ্রই সারিয়ে দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন।” পাইপ সারাতে দেরি হওয়ার দায় পূর্ত দফতরের দিকেই ঠেলে দিয়েছেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর। আবার সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই দুই ওয়ার্ডে জল পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার খবর জানতে পেরেই পূর্ত দফতরকে চিঠি পাঠিয়েছি। তাঁরা তা দ্রুত সারিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও আমাকে দিয়েছিলেন। কিন্তু এত দিনেও সারাইয়ের কাজ শুরু না হওয়াতেই এলাকার ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা পথ অবরোধ করেছেন।” তাঁর দাবি, ওই এলাকার উন্নয়ন খাতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ আছে। প্রয়োজনে স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলে ওই টাকা দিয়ে পাইপ সারানোর কাজ করা হবে।

এ দিন অবরোধের খবর পেয়ে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ডিএসপি (ডিএন্ডটি) সুমিত চট্টোপাধ্যায় এবং এক ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিলে দুপুরে অবরোধ উঠে যায়। পুর কর্তৃপক্ষ পাইপ সারানোর দায়িত্ব পূর্ত দফতরের বলে দাবি করলেও তা উড়িয়েই দিয়েছেন পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র দেবাশিস সরকার। তিনি বলেন, “ওই এলাকার পাইপ সারানোর দাবিতে পুর কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে যে চিঠি পাঠিয়েছিল, তার উত্তর দেওয়া হয়েছে। ওই পাইপে অনেক আগে থেকেই ফুটো ছিল। ওই পাইপ সারানোর দায়িত্ব আমাদের নয়।” পাইপ সারানোর অনিশ্চয়তার দাঁড়িয়ে বাসিন্দারা কিন্তু হুমকি দিচ্ছেন, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জল পরিষেবা চালু না হলে প্রয়োজনে সিউড়ির অন্যান্য রাস্তাও অবরোধ করা হবে।

বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

water crisis suri agitation road blockade
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy