কয়েক বছর আগে বাঁকুড়ায় এসে তৎকালীন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ ঘোষণা করেছিলেন ১১০০ কোটি টাকায় ঘরে ঘরে জল পৌঁছে দেওয়া হবে। কিন্তু সেই প্রকল্পের আওতায় এসেছিল জেলার ১৪টি ব্লক ও দু’টি পুরএলাকা। এতে এক প্রকার হতাশই হয়েছিলেন জেলার বাকি আটটি ব্লক ও একটি পুরসভার মানুষ। শনিবার শুশুনিয়ায় এসে সেই প্রকল্পের দ্বিতীয় দফার কাজের আশ্বাস দিয়ে গেলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। জানিয়ে গেলেন, প্রথম দফায় বাদ পড়ে যাওয়া বাকি ব্লকগুলিতে দ্বিতীয় দফায় জল মিলবে। শুনে স্বভাবতই খুশি জেলাবাসী।
সুব্রতবাবু জানান, বাঁকুড়ার জন্য ফের একটি বড় জলের প্রকল্পের চিন্তাভাবনা করেছে রাজ্য সরকার। প্রকল্পটি রূপায়ণের জন্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা দরকার। বিশ্বব্যাঙ্ক ও সুইডেনের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “ইতিমধ্যেই এই জেলায় আমরা প্রায় হাজার কোটি টাকার জল প্রকল্প গড়ছি। কিন্তু ১৪টি ব্লক সেই জল পাবে। তাই আমরা বাকি আটটি ব্লকে জল প্রকল্প গড়তে নতুন করে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা চেয়েছি।
উল্লেখ্য, বাঁকুড়া জেলাকে ফ্লোরাইড মুক্ত করতেই দামোদর নদ থেকে নলকূপের মাধ্যমে পরিশ্রুত জল ব্লকে ব্লকে সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন জয়রাম রমেশ। সেই মোতাবেক ১১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে ১৪টি ব্লক (বাঁকুড়া-১, বাঁকুড়া-২, বড়জোড়া, শালতোড়া, ছাতনা, খাতড়া, রানিবাঁধ, হিড়বাঁধ, ওন্দা, ইন্দাস, সিমলাপাল, সারেঙ্গা, রাইপুর ও বিষ্ণুপুর) ও দু’টি পুরসভাকে (বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর) জল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বর্তমানে এই প্রকল্পের কাজ চলছে পুরোদমে।
জেলা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অরিন্দম মজুমদার জানান, এই প্রকল্পের আওতায় আসা ১৪টি ব্লকের কাজকে মোট ন’টি প্যাকেজে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। সবকটি প্যাকেজের কাজই এগোচ্ছে দ্রুততার সঙ্গে। প্রায় ৬৫ শতাংশ নলকূপ বসানোর কাজ ইতিমধ্যেই সারা হয়ে গিয়েছে। আগামী বছর অক্টোবরের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। অরিন্দমবাবু বলেন, “নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই যাতে কাজ শেষ করা যায়, তার চেষ্টা করা হচ্ছে।” দ্বিতীয় প্রকল্পটির কাজ কবে থেকে শুরু হবে তা অবশ্য নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেননি মন্ত্রী। তিনি বলেন, “বাঁকুড়া জেলার মানুষের সবচেয়ে বড় চাহিদা হল জল। আমরা ক্ষমতায় আসার পরেই এই জেলায় জলের সমস্যা মেটাতে নানা প্রকল্প নিয়েছি। রাজ্য সরকারের হাতে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় আমরা বাইরে থেকে টাকা চেয়েছি। টাকা বরাদ্দ হলেই দ্রুত কাজ শুরু হবে।” শুশুনিয়ায় একটি সরকারি বাংলোর উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের সচিব সৌরভ দাস, বাঁকুড়ার জেলাশাসক বিজয় ভারতী প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy