Advertisement
০৬ মে ২০২৪
অবস্থান গড়াল গভীর রাতে

টাকা ফেরতের দাবি, অর্থলগ্নি সংস্থার কর্তাকে ঘিরে বিক্ষোভ

বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থায় টাকা জমা রেখে মেয়াদ শেষের পরেও টাকা ফেরত পাওয়া যাচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে সংস্থাটির পরিচালনাধীন নার্সিংহোমের সামনে দিনভর বিক্ষোভ-অবস্থান করলেন এজেন্ট ও লগ্নিকারীরা। বিক্ষোভের মুখে পড়লেন ওই সংস্থার কর্ণধারও। মঙ্গলবার আদ্রার উপকণ্ঠে রাঙ্গুনি এলাকার কাছে ওই নার্সিংহোমে বিক্ষোভ-অবস্থান করেন বিহারের নালন্দা, গয়া থেকে আসা শতাধিক এজেন্ট ও লগ্নিকারী।

সংস্থার কর্ণধারকে ঘিরে বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র

সংস্থার কর্ণধারকে ঘিরে বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আদ্রা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪৮
Share: Save:

বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থায় টাকা জমা রেখে মেয়াদ শেষের পরেও টাকা ফেরত পাওয়া যাচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে সংস্থাটির পরিচালনাধীন নার্সিংহোমের সামনে দিনভর বিক্ষোভ-অবস্থান করলেন এজেন্ট ও লগ্নিকারীরা। বিক্ষোভের মুখে পড়লেন ওই সংস্থার কর্ণধারও। মঙ্গলবার আদ্রার উপকণ্ঠে রাঙ্গুনি এলাকার কাছে ওই নার্সিংহোমে বিক্ষোভ-অবস্থান করেন বিহারের নালন্দা, গয়া থেকে আসা শতাধিক এজেন্ট ও লগ্নিকারী। তাঁদের মধ্যে বেশ কিছু সংখ্যক মহিলাও ছিলেন।

এ দিন সকালে বিহার থেকে আসা ওই এজেন্ট ও লগ্নিকারীরা নার্সিংহোমটির সামনে জড়ো হয়ে তাঁদের টাকা ফেরতের দাবি জানাতে শুরু করেন। পরে পরিস্থিত সামাল দিতে আদ্রা থানা থেকে পুলিশ যায়। কিন্তু, আমানতকারীরা পুলিশকে জানিয়ে দেন, টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে লগ্নি-সংস্থাটির কর্ণধার নিশ্চয়তা না দেওয়া পর্যন্ত তাঁরা সরবেন না। ওই এজেন্ট ও আমানতকারীদের দাবি, গত কয়েক বছর ধরে এই অর্থলগ্নি সংস্থাটির তরফে রীতিমতো অফিস খুলে বিহারের নালন্দা, গয়া ও বিহারশরিফ এলাকায় কয়েক কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে।

নিজেদের সংস্থাটির এজেন্ট পরিচয় দিয়ে বিহারশরিফ এলাকার বাসিন্দা মুশারফ পারভিন, রেখা দেবী, নালন্দা ও গয়া এলাকার অমরনাথ কুমার, সুরিন্দর প্রসাদ, মনোজ চৌধুরিরা বলেন, “নালন্দা ও গয়ায় বেশ কয়েকটি অফিস খুলেছিল এই সংস্থাটি। ওই সংস্থায় অর্থ জমা রাখলে চড়া সুদ আর অন্যান্য সুযোগসুবিধা মিলবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল সংস্থাটির তরফে। ফলে, আমরা যেমন এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে সংস্থায় রাখার কাজে যুক্ত হয়েছিলাম, তেমনই নিজেরাও টাকা জমা রেখেছিলাম। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কোনও টাকাই হাতে পাইনি।” এজেন্টদের ক্ষোভ, তাঁদের এলাকার সংস্থাটির অফিসের ঝাঁপ বন্ধ হয়ে গিয়েছে অনেক দিন হল। আর যে-সব আমানতকারী তাঁদের মাধ্যমে টাকা লগ্নি করেছিলেন ওই সংস্থায়, তাঁরা বাড়িতে এসে প্রতিদিন টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। ওই এজেন্ট ও আমানতকারীদের আরও দাবি, সংস্থাটি ব্যবসা শুরু করার সময়ে জানিয়েছিল, পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর এলাকায় তাদের সিমেন্ট কারখানা রয়েছে, আদ্রায় বড় হাসপাতাল শুরু হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় গুঁড়ো মশলা, ইঁট, ফ্যান এবং পর্যটনের ব্যবসা রয়েছে। ওই এজেন্টদের কথায়, “সংস্থাটির তরফে ব্যবসা শুরুর সময়ে বিভিন্ন কারখানার ছবি দেখানো হয়েছিল। তার জেরে আমরা সহজেই ওদের কথায় বিশ্বাস করে সংস্থায় টাকা রাখতে এলাকার বাসিন্দাদের উৎসাহ দিয়েছিলাম। এখন বুঝছি, সব ভুয়ো!” সম্প্রতি সংস্থার তরফে কিছু টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কিছু চেক দেওয়া হয়েছিল। সেগুলি ভাঙাতে গিয়ে দেখা যায় অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় চেকগুলি বাউন্স করেছে।

এ দিন সকাল থেকে দীর্ঘক্ষণ নার্সিংহোমের সামনে বিক্ষোভ চলার পরে সেখানে এসেছিলেন সংস্থাটির অন্যতম কর্ণধার সত্যরঞ্জন চৌধুরী। তিনি আদ্রা রেলশহরের পাশের রগুড়ি গ্রামেরই বাসিন্দা। নার্সিংহোমে ঢোকার মুখেই তাকে তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। সত্যরঞ্জনবাবুকে ঘিরে অবিলম্বে টাকা ফেরতের দাবি জানাতে শুরু করেন বিক্ষোভকারী এজেন্ট ও আমানতকারীরা। শেষ পর্যন্ত নার্সিংহোমের সামনে সত্যরঞ্জনবাবু হ্যান্ডমাইক নিয়ে প্রকাশ্যেই বলেন, “প্রয়োজনে সম্পত্তি বিক্রি করে লগ্নিকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে।” কিন্তু, আমানতকারীরা অবিলম্বে কিছু টাকা দেওয়ার দাবিতে অনড় থাকায় তিনি ১০ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে পরে সত্যরঞ্জনবাবুর প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে তাঁর মোবাইলে ফোন করা হলে ফোন বারবার ব্যস্ত পাওয়া গিয়েছে। এসএমএস করা হলেও তার উত্তর মেলেনি।

আদ্রা থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই আমানতকারী ও এজেন্টরা অর্থলগ্নি সংস্থাটির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানাননি। তাঁরা শুধু দিনভর বিক্ষোভ-অবস্থান করেছেন। সংস্থাটির তরফে টাকা ফেরতের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অবস্থান অবশ্য পুলিশ তুলতে পারেনি। মঙ্গলবার রাতেও নার্সিংহোমের বাইরে জড়ো হয়ে থেকেছেন ওই সংস্থার এজেন্ট ও আমানতকারীরা।

লুঠপাটের অভিযোগ। মেশিন দিয়ে মায়ের কেনা বাড়ির পাঁচিল ভেঙে বাড়ির ভিতরে থাকা জিনিসপত্র লুঠপাটের অভিযোগ উঠল বিষ্ণুপুরের বৈলাপাড়ায়। সোমবার এই মর্মে দুই মহিলা থানায় এলাকার দুই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। যদিও ওই দু’জনের মধ্যে এক যুবকের দাবি, জায়গাটি তাঁর নামে রেকর্ড রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

adra private invesment company protest agitation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE