মহম্মদবাজারে দুই বোনের খুনের মামলায় অভিযুক্ত মা ও মামাকে জামিন দিল সিউড়ির অবকাশকালীন আদালত। আর তার পরেই এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্তে ফের প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা।
মঙ্গলবার রাতে অভিযুক্ত মা অপর্ণা সাধু এবং মামা রামপ্রসাদ সাহার জামিন মঞ্জুর করেন সিউড়ি আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা দ্বিতীয় বিচারক মহানন্দা দাস। সরকারি আইনজীবী রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘অভিযুক্তদের জামিনের আর্জির তীব্র বিরোধিতা করি। কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ তেমন কোনও তথ্য প্রমাণ দেখাতে না পারায় বিচারক দু’জনেরই জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।’’
সরকারি আইনজীবীর আরও ব্যাখ্যা, মামলায় ৮৩ দিনের মাথায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিলেও একজোড়া চটি ছাড়া কোনও তথ্য প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি পুলিশ। কিন্তু সেই চটি যে অভিযুক্ত রামপ্রসাদের, তার সাপেক্ষে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রমাণও নেই। রণজিৎ বলেন, ‘‘তাই আমাদের জামিনের বিরোধিতা ধোপে টেকেনি। বিচারক পরিষ্কার জানিয়ে দেন, সন্দেহের বশে এ ভাবে কাউকে জেলে রাখা ঠিক নয়।’’ অভিযুক্তদের আইনজীবী গোলাম মফিজউদ্দিনও বুধবার দাবি করেন, চার্জশিটে একজোড়া চটির গল্প ছাড়া অভিযুক্তেরা ঘটনায় জড়িত এমন কোনও তথ্যপ্রমাণ খাড়া করতে পারেননি আইও। দুই বোন খুনে মা ও মামাদের বিরুদ্ধে অন্য কোনও প্রমাণ দূরের কথা, এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া চটি কার তা-ও প্রমাণ করতে পারেনি পুলিশ। তাই বিচারক অভিযুক্ত মা ও মামার কুড়ি হাজার টাকা করে বন্ডে জামিন মঞ্জুর করেন বলে জানান মফিজউদ্দিন।
গত ১৬ জুন মহম্মদবাজারে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের অদূরে নিজেদের বাড়িতেই খুন হয় দুই বোন সুস্মিতা (১৫) ও পুস্পিতা (১২) সাধু। তদন্তে নেমে পুলিশ, ওই বাড়ি থেকে একটি রক্তমাখা বঁটি এবং একপাটি কালো চটি উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে অপর্ণাদেবী এবং রামপ্রসাদবাবুকে গ্রেফতার করে। যদিও গোটা ঘটনায় প্রথম থেকেই প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা। অভিযুক্তদের আইনজীবীদের অভিযোগই ছিল, এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে থানায় আটক করে রাখা হয় তাঁদের মক্কেলদের। অথচ তাঁদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করানো হয়নি। দীর্ঘ জেরা শেষে ঘটনার প্রায় ন’দিন পরে রামপ্রসাদকে গ্রেফতার করে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতে নেয় পুলশ। তার দু’দিন পরে গ্রেফতার করা হয়ে অপর্ণাদেবীকেও। দু’দিনের পুলিশি হেফাজত হয় তাঁরও। হেফাজত শেষে দু’জনকেই জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেয় সিউড়ি আদালত। এত দিন দু’জনেই জেল হাজতে ছিলেন।
অপর্ণাদেবীর স্বামীর সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। তবে, অভিযুক্ত রামপ্রসাদের স্ত্রী চুমকিদেবী, শ্বশুর অমর সাহা এবং দাদা স্বপন সাহাদের দাবি, ‘‘ওঁদের সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’’ অন্য দিকে, বারবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি জেলার পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy