Advertisement
০২ মে ২০২৪

নাকাশগ্রামের শিবমন্দিরে ভক্তদের ভিড়

গেরুয়া পোশাকে শ্রাবণ মাসে শিবের মাথায় জল ঢালতে যাওয়ার চল দীর্ঘ কালের। এ মাসের প্রতি সোমবার (বিশেষ করে শেষ সোমবার) তারকেশ্বর ও ঝাড়খণ্ডের দেওঘরের পাশাপাশি বীরভূমের প্রাচীন শিবমন্দিরগুলিতেও ভক্তেরা ভিড় জমান। গত কয়েক বছর ধরে এই তালিকায় নতুন সংযোজন রাজনগরের নাকাশগ্রাম। শেষ কয়েক বছর ধরে ওই গ্রামের দুর্গামন্দির স্থিত শিবমন্দিরে ভক্তদের ভিড় বেড়েই চলেছে।

সোমবার নাকাশগ্রামে শিবের মাথায় জল ঢালতে হাজির এই খুদেও। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

সোমবার নাকাশগ্রামে শিবের মাথায় জল ঢালতে হাজির এই খুদেও। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
রাজনগর শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৪ ০০:৪১
Share: Save:

গেরুয়া পোশাকে শ্রাবণ মাসে শিবের মাথায় জল ঢালতে যাওয়ার চল দীর্ঘ কালের। এ মাসের প্রতি সোমবার (বিশেষ করে শেষ সোমবার) তারকেশ্বর ও ঝাড়খণ্ডের দেওঘরের পাশাপাশি বীরভূমের প্রাচীন শিবমন্দিরগুলিতেও ভক্তেরা ভিড় জমান। গত কয়েক বছর ধরে এই তালিকায় নতুন সংযোজন রাজনগরের নাকাশগ্রাম। শেষ কয়েক বছর ধরে ওই গ্রামের দুর্গামন্দির স্থিত শিবমন্দিরে ভক্তদের ভিড় বেড়েই চলেছে। সোমবারও হাজার হাজার মানুষ ওই মন্দিরের শিবের মাথায় জল ঢাললেন। ওই উপলক্ষে বিগত কয়েক বছরের মতো এ বছরও ভক্তদের জন্য প্রসাদ ও পাত পেড়ে পঙ্ক্তিভোজনের ব্যবস্থাও করেছিলেন উদ্যোক্তরা। এ দিন রাজনগরের ওই অনুষ্ঠান কার্যত সামাজিক উৎসবের চেহারা নিল।

নাকাশগ্রামের দুর্গামন্দিরের পাশে শিবমন্দিরটি অবশ্য বেশি দিনের নয়। মাত্র বছর দশেক হল সেটির প্রতিষ্ঠা হয়েছে। শ্রাবণ মাসের প্রতি সোমবার ওই শিবমন্দিরে এসে ভক্তেরা জল ঢালা শুরু করেন। শেষ সোমবার ভিড় হত একটু বেশিই। তা দেখেই একটু অন্য রকম ভাবতে শুরু করল মন্দির কমিটি। তাঁরা দেখলেন, এলাকার পুরুষেরা চাইলে বিভিন্ন মন্দিরে যেতে পারেন। কিন্তু মহিলা ও শিশুদের পক্ষে দূরের কোনও শিবমন্দিরে গিয়ে জল ঢালা কষ্টকর। এরপরেই মন্দির কমিটি এবং বাসিন্দাদের একাংশ মিলে তৈরি করলেন ‘আনন্দমঠ পরিচালন সমিতি’ নামে একটি কমিটি। তারপর থেকে ওই কমিটিই গোটা রাজনগর ব্লকের মানুষকে নাকাশ শিবমন্দিরে জল ঢালার সুযোগ করে দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন কমিটির সভাপতি মাধবকুমার দত্ত। বছর পাঁচেক আগে শুরু হওয়া সেই আয়োজন প্রতি বছর কলেবরে বেড়ে চলেছে।

সকাল ৮টায় মন্দির থেকে তিন কিলোমিটার দূরের কুশকর্ণিকা নদী থেকে জল নিয়ে শিবের মাথায় ঢালা শুরু হয়। চলে দুপুর অবধি। এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ নাকাশে গিয়ে দেখা গেল মেয়েরা লালপাড় সাদা শাড়ি এবং ছেলেরা গেরুয়া পোশাকে দীর্ঘ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। সঙ্গে কচিকাঁচারাও। কোথাও কোনও সমস্যা যাতে না হয়, তার জন্য কড়া নজরদারি চালাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। পাশাপাশি থাকে প্রশাসনিক উদ্যোগও। থাকে পুলিশ, মেডিক্যাল টিম। তবে, শুধু রাজনগরই নয়, সীমানা ঘেঁষা পাশের ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন গ্রামের মানুষও এখানে আসেন। তরুণী সোমা ভট্টাচার্য, বধূ বন্দনা, যুবক তন্ময় গড়াইদের পাশাপাশি লাইনে দাঁড়িয়ে জল ঢালল বছর দশেকের মনোজ বাগদি বা তৃতীয় শ্রেণির রাখি সিংহরাও। শিবের মাথায় জল ঢেলে সকলেই খুব খুশি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rajnagar nakashgram shiva temple
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE