দেব মাল
মা-মাসিদের সঙ্গে নদীতে স্নান করতে নেমে মৃত্যু হল এক শিশুর। নাম দেব মাল (৭) ওই শিশুর বাড়ি সাঁইথিয়া ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে। ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ সাঁইথিয়ায় ময়ূরাক্ষী নদীতে। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকার মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের দাবি, নদী থেকে যত্রতত্র বেআইনি ভাবে বালি তোলার কারণেই এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। ক্ষুব্ধ জনতা প্রতিবাদে সাঁইথিয়া অভেদানন্দ কলেজের সামনে পথ অবরোধ করেন। পুলিশ গিয়ে ঘণ্টা খানেকের মধ্যে অবরোধ তুলে দেয়। মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিউড়ি সদর হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাঁইথিয়ার রক্ষাকালীতলা পাড়ার বাসিন্দা সোমনাথ মালের শ্বশুরবাড়ি ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নাথপাড়ায়। পেশায় দিন মজুর সোমনাথবাবুর দুই শ্যালকের বিয়ে উপলক্ষে সপরিবারে শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন। এ দিনই রাতে বৌভাতের অনুষ্ঠান ছিল। আর এ দিনই ঘটে গেল বিপদ। দুর্ঘটনার পর সমস্ত অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিন ভাই বোনের মধ্যে ছোট দেব। তার মৃত্যুর পরে বলার মতো অবস্থায় নেই তাঁর মা মানাদেবী ও বাবা সোমনাথবাবু। দেবের বড় মামা তিলক দাস বলেন, “বাড়ির কাছেই নদী। বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ বাড়ির অনেকের সঙ্গে নদীতে স্নান করতে যায় ভাগ্নে। ওর মা এবং আরও কয়েক জন নদীতে স্নান করছিল। সে সময় ভাগ্নে অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে খেলছিল। খেলতে খেলতে জলে নামা মাত্র খাদে পড়ে যায়। অন্য বাচ্চাদের চিৎকার শুনে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে গিয়ে দেবকে উদ্ধার করা হয়। তবু শেষ রক্ষা করা যায়নি।”
দেব মালের মৃত্যুর পরে অবরোধে বাসিন্দারা। —নিজস্ব চিত্র।
এলাকার লোকজনের দাবি, কোনও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে বালি তোলা চলছে। তার ফলেই এই দুর্ঘটনা। ক্ষুব্ধ জনতা বালি তোলার জন্য আনা একটি জেসিপি মেসিন ভেঙে দেয়। এমনকী বালিঘাটের কর্মীদের লাঠি নিয়ে তেড়েও যান। বালিঘাটের কর্মীরা প্রথমে তাড়া খেয়ে পালিয়ে যায়। পরে দল বল জুটিয়ে তারা ফিরে আসে। কিন্তু ততক্ষণে পুলিশ চলে আসায় বড় গণ্ডগোল হয়নি। পরে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর প্রায় সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অবৈধ বালিঘাট বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী পথ অবরোধ করেন কলেজ মোড়ে। পুলিশ ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সঙ্গে কথা বলে অবৈধ বালিঘাট বন্ধের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy