Advertisement
২৮ মে ২০২৪

নদীর চর থেকে উদ্ধার নিখোঁজ কিশোরীর দেহ

নদীর চর থেকে উদ্ধার স্কুলছাত্রীর নগ্ন দেহ। ওন্দা থানার শালিহান গ্রামের ঘটনা। মৃত ছাত্রী স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ত। বৃহস্পতিবার গ্রাম থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে দ্বারকেশ্বর নদের চর থেকে মেয়েটির দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ওন্দা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৪ ০০:২৪
Share: Save:

নদীর চর থেকে উদ্ধার স্কুলছাত্রীর নগ্ন দেহ। ওন্দা থানার শালিহান গ্রামের ঘটনা। মৃত ছাত্রী স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ত। বৃহস্পতিবার গ্রাম থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে দ্বারকেশ্বর নদের চর থেকে মেয়েটির দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই কিশোরীকে খুন করে বালির নীচে পুঁতে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল।

পুলিশ ও মৃতার পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার রাত আটটা নাগাদ শৌচকর্ম করতে হাতে টর্চ নিয়ে বাড়ি সংলগ্ন একটি ডোবার দিকে গিয়েছিল ওই কিশোরী। তার পর থেকেই আর খোঁজ মিলছিল না তার। রাতেই পরিবারের লোকজন গ্রামে এবং আত্মীয়-পরিজনদের বাড়িতে খোঁজখবর নিলেও কিশোরীর হদিস পাননি। বুধবার ওন্দা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। ওই দিনই দুপুরে মৃত ছাত্রীর এক খুড়তুতো কাকা তাঁর ভাইঝির চটি, কানের দুল, টর্চ, আংটি বাড়িতে নিয়ে এসে দাবি করেন, বাড়ি সংলগ্ন ডোবার ধারের ঝোপ থেকে তিনি সে-সব পেয়েছেন। এর পরেই গ্রামবাসী ও মৃতার পরিবারের লোকজন ওই খুড়তুতো কাকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেন। তাঁর কথায় বেশ কিছু অসঙ্গতিও ধরা পড়ে। এই সময় কিছু গ্রামবাসী ওই ব্যক্তিকে বেশ কয়েকবার দ্বারকেশ্বরের পাড়ে যেতে দেখেছেন বলে জানান।

নদের পাড়ে কিছু পাওয়া যেতে পারে অনুমান করে গ্রামের কয়েকশো বাসিন্দা বুধবার বিকেলে সেখানে যান। খুঁজতে খুঁজতে বালির উপরে চুল ও পায়ের আঙুল দেখতে পান তাঁরা। কাছে গিয়ে দেখে তাঁরা বুঝতে পারেন, বালির নীচে কারও দেহ চাপা পড়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। ততক্ষণে সন্ধ্যার অন্ধকার নেমেছে, ম্যাজিস্ট্রেট না পাওয়ায় পুলিশ রাতে দেহ তোলা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়। বৃহস্পতিবার সকালে ওন্দার বিডিও শুভঙ্কর ভট্টাচার্যের উপস্থিতিতে দেহ উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ। রাতেই মৃত ছাত্রীর কাকাকে আটক করে ওন্দা থানার পুলিশ।

বালি সরাতেই বেরিয়ে আসে গলায় ওই কিশোরীর নগ্ন দেহ। দেহটি শনাক্ত করেন তার পরিবারের লোকজন। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠায়। জেলা পুলিশের ডিএসপি (আইনশৃঙ্খলা) বাপ্পাদিত্য ঘোষ বলেন, “বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত মৃতার পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তবে, পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আটক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”গ্রামবাসীদের একাংশের অবশ্য দাবি, মৃতদেহের বিভিন্ন জায়গায় রক্ত জমে রয়েছে। যা থেকে খুন করার আগে মেয়েটির উপরে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে তাঁদের অনুমান। বিডিও শুভঙ্করবাবু বলেন, “মৃতার গলায় নাইটি জড়ানো ছিল। তবে, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যাবে।”

এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে গ্রামে। মৃতার এক দিদি ও এক ভাই। তার বাবার গ্রামেই গোলদারি দোকান রয়েছে। মেয়ের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, “শৌচকর্ম করতে যাচ্ছি বলে নেয়ে সেই যে বের হল, আর ফিরল না। আমরা সব জায়গায় খোঁজ করেছিলাম। কিন্তু, কেউ ওর হদিস দিতে পারিনি। কেন আমার মেয়ের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটল, কিছুই বুঝতে পারছি না।” তাঁর দৃঢ় ধারণা, নদীর পাড়ে নিয়ে গিয়ে তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে। যারা এই কাজ করেছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি তুলেছে মৃতার পরিবার।

আটক হওয়া নিজের খুড়তুতো ভাই সম্পর্কে মেয়েটির বাবা বলেন, “এখন কিছু ভাবার মতো মানসিক অবস্থা আমাদের নেই। তবে, ওর কথাবার্তা অসংলগ্ন ছিল। পুলিশ সব দিক তদন্ত করে দেখুক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dead body of a missing girl onda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE