Advertisement
E-Paper

পুরুলিয়ার এক রাতে দুই বাড়িতে হানা দুষ্কৃতীদের, লুঠ টাকা ও গয়না

দরজার জোড়া তালা ভেঙে গৃহস্থের বাড়িতে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে সোনার গয়না, নগদ টাকা ও অন্যান্য জিনিসপত্র লুঠ করে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাতে, পুরুলিয়া শহরের লোকনাথ পল্লি এলাকায়। ওই রাতে একই এলাকায় আরও একটি বাড়িতে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। তবে, ওই বাড়ির লোকজন জেগে যাওয়ায় গোলমাল শুরু হওয়ায় তারা পালিয়ে যায়। শহরের মধ্যে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় রাতে তালা ভেঙে এ ভাবে অবাধে ডাকাতির ঘটনায় নিরাপত্তার অভাববোধ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৪ ০১:৩৬
বাড়িতে বসে ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন অমিয় কুণ্ডু। নিজস্ব চিত্র

বাড়িতে বসে ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন অমিয় কুণ্ডু। নিজস্ব চিত্র

দরজার জোড়া তালা ভেঙে গৃহস্থের বাড়িতে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে সোনার গয়না, নগদ টাকা ও অন্যান্য জিনিসপত্র লুঠ করে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাতে, পুরুলিয়া শহরের লোকনাথ পল্লি এলাকায়।

ওই রাতে একই এলাকায় আরও একটি বাড়িতে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। তবে, ওই বাড়ির লোকজন জেগে যাওয়ায় গোলমাল শুরু হওয়ায় তারা পালিয়ে যায়। শহরের মধ্যে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় রাতে তালা ভেঙে এ ভাবে অবাধে ডাকাতির ঘটনায় নিরাপত্তার অভাববোধ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকনাথ পল্লি এলাকায় রাজ্য বিদ্যুত দফতরের কর্মী অমিয় কুণ্ডুর বাড়িতে প্রথম চড়াও হয় ওই দুষ্কৃতীদল। একমাত্র সন্তান ও স্ত্রী সোমাদেবীকে নিয়ে ওই বাড়িতে ভাড়া থাকেন অমিয়বাবু। রাত ৩টের কিছু পরে তালা ভেঙে দুষ্কৃতীরা বাড়িতে ঢোকে। অমিয়বাবু বলেন, “ঘুমের ঘোরেই বুঝতে পারি, ঘরে কোনও কিছুর শব্দ হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে উঠে দেখি, ঘরের মধ্যে তিন জন। মুখে কাপড় বাঁধা। এক জনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, এক জনের হাতে রড জাতীয় কিছু একটা ছিল। হাতে টর্চ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই হিন্দিতে চিৎকার করতে বারণ করে বাড়িতে যা আছে, দিয়ে দিতে বলল। ওদের মূর্তি দেখেই বুঝতে পারলাম, বাধা দিয়ে বা তর্কাতর্কি করে লাভ নেই।” পাশের ঘরেই ঘুমিয়েছিলেন অমিয়বাবুর স্ত্রী। দুষ্কৃতীরা তাঁকেও ঘুম থেকে তুলে দেয়। আলোও জ্বালাতে দেয়নি। সঙ্গে আনা টর্চের আলোয় বিভিন্ন ব্যাগ, বিছানা তছনছ করে দুষ্কৃতীরা। সোমাদেবীর কথায়, “এত দিন ডাকাতির কথা শুনেছিলাম। রবিবার রাতে নিজে সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলাম। ওদের হাতের অস্ত্র দেখে ভয়ে বুক কাঁপছিল। আমাদের বারো বছরের ছেলেকে অবশ্য তোলেনি। ও ঘুমিয়েই ছিল। তাই কিছু টের পায়নি।” অমিয়বাবু বলেন, “প্রাণের ভয়ে ওদের হাতে সব কিছু তুলে দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। যাওয়ার সময় ওরা বাইরে থেকে দরজা আটকে দিয়ে যায়। বলে যায় চিৎকার করার চেষ্টা করলে ফিরে এসে গুলি করব। ভয়েই আর চেঁচামেচি করিনি।”

সেখান থেকে বেরিয়ে পাড়াতেই আরও একটি বাড়িতে হানা দেয় ওই দুষ্কৃতীরা। এই বাড়ির দোতলায় থাকেন সুজাতা মণ্ডল। তিনি বলেন, “তখন গভীর রাত। ঘুমের মধ্যেই শুনতে পেলাম, আমাদের দরজায় কেউ জোরে ধাক্কা দিচ্ছে বা ভাঙার চেষ্টা করছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করি। বাইরের আওয়াজ থেমে যায়। আমরা ভাড়া বাড়িতে থাকি। বাড়িওয়ালাকেও ফোন করি। পরে দেখা যায় সদরের তালা ভেঙে দুষ্কৃতীরা উপরে উঠেছিল।”

সকালে এই খবর পাড়ায় চাউর হতেই এলাকায় চর্চার বিষয় হয়ে ওঠে। পুরুলিয়া পুরসভার বিরোধী দলনেতা বিভাস দাস এই ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা এবং এই এলাকা থেকেই নির্বাচিত কাউন্সিলর। বিভাসবাবু বলেন, “কিছুদিন আগে দিনের বেলায় এই এলাকাতেই এক শিক্ষিকার গলার হার ছিনতাই করে মোটরবাইকে পালিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। গত ছ’মাসে একাধিক চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এলাকার বাসিন্দারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। পুলিশকে এটা দেখতে হবে।” শহরের বিভিন্ন রাস্তায় শুধু নয়, বিভিন্ন পাড়াতেও পুলিশি টহল বাড়ানোর দাবি তুলেছেন তিনি। সোমবার অমিয়বাবু পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

purulia robbery amiya kundu
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy