Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
বালিজুড়ি পঞ্চায়েত

প্রধানকে সরার নির্দেশ অনুব্রতর

বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে দলের সদস্যরাই অনাস্থা এনেছিলেন। মাস দেড়েক আগে অস্বস্থিতে পড়তে হয়েছিল নেতৃত্বকে। দলের অস্বস্তি ঢাকতে বহুচেষ্টায় তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব ভোটাভুটি পর্যন্ত গড়াতে দেননি নেতৃত্ব। দলীয় হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত আটকানো গিয়েছিল বিক্ষুব্ধ সদস্যদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:২২
Share: Save:

বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে দলের সদস্যরাই অনাস্থা এনেছিলেন। মাস দেড়েক আগে অস্বস্থিতে পড়তে হয়েছিল নেতৃত্বকে। দলের অস্বস্তি ঢাকতে বহুচেষ্টায় তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব ভোটাভুটি পর্যন্ত গড়াতে দেননি নেতৃত্ব। দলীয় হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত আটকানো গিয়েছিল বিক্ষুব্ধ সদস্যদের। কিন্তু সংখ্যা গরিষ্ঠ সদস্যের দাবি মেনে শেষ পর্যন্ত প্রধান পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলা হল বালিজুড়ির তৃণমূল প্রধান শিবঠাকুর মণ্ডলকে। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ভোলানাথ মিত্র বলেন, “জেলা সভাপতির সিদ্ধান্ত অনুসারে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ৩টের মধ্যে ওঁকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে। নির্দেশ কার্যকর না করা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সত্যিই কি ইস্তফা দিলেন তিনি? এ বিষয়ে মুখ খোলেননি শিবঠাকুরবাবু। তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, এ ছাড়া তাঁর কাছে আর কোনও পথ খোলা নেই। দুবরাজপুরের বিডিও কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি বিষয়টি শুনেছি। তবে ওই প্রধানের ইস্তফাপত্র এ দিন বিকেল পর্যন্ত আমার কাছে এসে পৌঁছয়নি।”

প্রসঙ্গত গত ২৯ ডিসেম্বর আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান শিবঠাকুর মণ্ডলের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসেন সাত তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য। পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দুবরাজপুরের বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের মোট সদস্য সংখ্যা ১১ জন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মোট ৯টি আসন নিয়ে ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল। দু’টি আসন পায় সিপিএম। প্রধান হন শিবঠাকুরবাবু। তিনি আবার ব্লক সভাপতির কাছের লোক বলেই পরিচিত।

কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে প্রধানের সঙ্গে মতপার্থক্য দেখা দেয় দলের অন্য পঞ্চায়েত সদস্যদের। পঞ্চায়েতের কাজের হিসাব চেয়ে তথ্য জানার অধিকার আইনে কয়েকটি আবেদনও জমা পড়ে। কিছুদিন আগে নিখিল বাউড়ি নামে এক তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের মৃত্যুর পরেই প্রধানের বিরুদ্ধে অসন্তোষ আরও বেড়ে যায়। গত ২৯ ডিসেম্বর বিক্ষুব্ধ তৃণমূল সদস্য টুম্পা দাস, আশিস বাগদি, সুনীল বাগদি, জামাল খান, কল্পনা দাস, তোফা বাদ্যকরেরা আনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসেন।

ভোটাভুটি আটকানোর জন্য দলের চেষ্টা সত্ত্বেও বিক্ষুব্ধ সদস্যদের আটকানো যায়নি। বরং ৩১ ডিসেম্বর দুবরাজপুরের যুগ্মবিডিও অসিতকুমার বিশ্বাসের কাছে সাত সদস্যই জানিয়ে দেন অনাস্থা প্রস্তাবে তাঁরা স্বেচ্ছায় সই করেছেন। ভোটাভুটির দিনও ধার্য হয়। দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে দলের সদস্যেরাই এ ভাবে অনাস্থা আনায় বিষয়টি নিয়ে প্রবল অস্বস্তি তৈরি হয় তৃণমূলের মধ্যে।

অস্বস্তি আরও বাড়ে যখন ৫ জানুয়ারি রাতের অন্ধকারে এক বিক্ষুব্ধ মহিলা সদস্য তোফা বাদ্যকর ও তাঁর স্বামীকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে প্রধানের বিরুদ্ধেই। তৃণমূল সূত্রের খবর, এরপরই কী ভাবে বিক্ষুব্ধদের শান্ত করা যায় সেই নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। হস্তক্ষেপ করতে হয় খোদ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকেও। ঠিক হয় ভোটাভুটির প্রয়োজন নেই। সরিয়ে দেওয়া হবে ওই প্রধানকে। সেই সিদ্ধান্তই এ দিন ঘোষিত হল বলে মনে করা হচ্ছে। ব্লক সভাপতি ভোলানাথ মিত্র দাবি করেন, “ওই প্রধানের বিরুদ্ধে যে সব আভিযোগ উঠেছে সেগুলির মধ্যে সত্যতা রয়েছে। অঞ্চল সভাপতির মধ্যমে প্রধানকে দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” তবে শিবঠাকুরবাবুর সঙ্গে চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dubrajpur anubrata balijuri panchayat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE