Advertisement
০৩ মে ২০২৪

ফাটল মোটরবাইকে রাখা ডিটোনেটর, মৃত্যু যুবকের

মোটরবাইকের সিটের তলায় রাখা ডিটোনেটর বিস্ফোরণে মৃত্যু হল এক যুবকের। বুধবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে খয়রাশোল থানা এলাকার ভাদুলিয়া গ্রাম সংলগ্ন হিংলো সেচ খালের কাছে। পুলিশ জানিয়েছে মৃত যুবকের নাম গৌতম ভাঁড়ারি(৩১)। বাড়ি ভাদুলিয়া গ্রামেই।

দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে বাইক। নিজস্ব চিত্র

দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে বাইক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খয়রাশোল শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৪ ০১:৩৫
Share: Save:

মোটরবাইকের সিটের তলায় রাখা ডিটোনেটর বিস্ফোরণে মৃত্যু হল এক যুবকের। বুধবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে খয়রাশোল থানা এলাকার ভাদুলিয়া গ্রাম সংলগ্ন হিংলো সেচ খালের কাছে। পুলিশ জানিয়েছে মৃত যুবকের নাম গৌতম ভাঁড়ারি(৩১)। বাড়ি ভাদুলিয়া গ্রামেই।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, কোমরের নীচের অংশ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু ঘটে গৌতমের। চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্থ হয় বাইকটিও। জেলা পুলিশসুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “আমরা ঘটনাটিকে ভীষণ গুরত্ব দিয়ে দেখছি। কেন, কী ভাবে ওই যুবকের বাইকে বিস্ফোরক এল। ঘটনার সঙ্গে মাও যোগ আছে কিনা সবটাই ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

ঘটনাস্থল থকে নমুনা সংগ্রহ করে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। প্রসঙ্গত ২০১০ সালের ৯ মার্চ অনুরূপ একটি বিস্ফেরণের ঘটনায় মিঠু দাস নামে এক তরুনীর দেহ ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। পুলিশ সূত্র অনুযায়ী একই ভাবে মোটরবাইকের টুলবক্সে রাখা বিস্ফোরণে মিঠুদেবীর মৃত্যুর পাশাপাশি শেখ জাফর নামে এক ব্যক্তি জখম হয়েছিলেন। উল্লেখযোগ্য, মিঠুদেবীর বাড়িও ছিল এই ভাদুলিয়া গ্রামে। যে সময় খয়রাশোলে মাওবাদীদের উপস্থিতি ও একাধিক নাশকাতার ঘটনায় তাঁদের যোগ ছিল বলে, ওই ঘটনার তদন্তে এসেছিলেন তত্‌কালীন ডিআইজি শ্রীজগমোহন এবং পরে আইজি পশ্চিমাঞ্চল জুলফিকার হোসেন। যদিও ওই ঘটনার সঙ্গে তেমন কোনও মাও-যোগ পাওয়া যায়নি।

পুলিশের একাংশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, খয়রাশোলের ওই অঞ্চলে অবৈধ কয়লা খাদানে বিস্ফেরণ ঘটানোর জন্য প্রয়শই এমন বিস্ফোরকের দরকার পড়ে। সেই বিস্ফেরক সরবরাহ বা বহন করার কাজ এলাকার কেউ কেউ করে থাকেন। আগে আরও বেশি প্রয়োজন হত। তবে বর্তমানে একটি বেসরকারি কয়লাখনি সংস্থা ওই এলাকার আদুরে গঙ্গারামচক নামে একটি খোলামুখ খনির কাজ চালাচ্ছে। বৈধভাবে খনি যারা গড়ছে তাঁদের এমন অবৈধ বিস্ফোরকের প্রয়োজন নেই। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি লুকিয়ে পরিত্যক্ত কয়লা খাদান থেকে এখনও কয়লা তোলার কাজ চলছে? পুলিশ কর্তা এবং এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের মতে গৌতম তেমনই কাজে যুক্ত ছিল হয়ত।

গৌতমের পরিবার অবশ্য পুলিশের সেই দাবি মানতে নারাজ। মৃতের আত্মীয় পরিজনদের মতে, এমন কাজে যুক্ত ছিল না গৌতম। পিসতুতো দাদা শক্তি ঘোষ এবং খুড়তুতো দাদা নিরঞ্জন ঘোষেদের বলেন, “গত রাত্রে গ্রামের বেশ কয়কে জনের সঙ্গে ফিস্ট করেছিল। ভাই রাতে বাড়ি ফেরার সময় গাড়ি স্টার্ট করার জন্য কিক মারতেই বিস্ফোরণ ঘটে। ওঁকে হত্যা করার জন্য চক্রান্ত করে বাইকের সিটের তলায় কেউ বিস্ফোরক রেখে ছিল। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করব।” পুলিশ অবশ্য বিস্ফোরক রাখা এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তা বহন করার ধারা প্রয়োগ করে একটি মামলা রুজু করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE