গোয়ালা গ্রামে টোল আদায় অফিসের সামনে জটলা।—নিজস্ব চিত্র
বেআইনি ভাবে পথশুল্ক আদায় করা হচ্ছে। এই অভিযোগে বুধবার রামপুরহাট থানার শালবাদরা পাথরব্যবসায়ী মালিক সমিতির একাংশ ময়ূরেশ্বর থানার গোয়ালা গ্রামের কাছে একটি বেসরকারি শুল্ক আদায় কারীসংস্থার অস্থায়ী অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চান। এই নিয়ে শুল্ক আদায়কারী কর্মীদের সঙ্গে মালিক পক্ষের বচসার জেরে পাথর বোঝাই লরি, ট্রাক্টর দীর্ঘক্ষণ রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে পড়ে। পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সঙ্গে বচসাও হয় কিছু বাসিন্দার। শেষমেষ শুল্ক আদায়কারী সংস্থার পক্ষে ম্যনেজার পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতিকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখান। শালবাদরা পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সম্পাদক বরুণ রায় বলেন, “আম্বা-কাষ্ঠগড়া রাস্তা পূর্ত দফতরের। অথচ জেলা পরিষদ মাসড়া-ঠাকুরপুরা রাস্তার উপর শুল্ক আদায় করছে।” তাঁর দাবি, “আমরা জানতে পারি মাসড়া-ঠাকুরপুরা রাস্তায় জেলা পরিষদের পক্ষে শুল্ক আদায়কারী সংস্থার মালিক আইনাল হক ২০১৩ সালের ১৪ মে থেকে আর শুল্ক আদায় করতে পারবে না। অথচ দেখা যাচ্ছে, এখনও মাসড়া-ঠাকুরপুরা রাস্তায় সমান ভাবে পথ শুল্ক আদায় করা হচ্ছে। সেই কারণে আমরা এদিন টোল আদায় সংস্থার কাছে তাদের প্রয়োজনীয় কাগজ দেখতে চাওয়া হয়। পরে জানতে পারি বর্তমানে টোল আদায় করার জন্য নতুন একটি এজেন্সি দায়িত্ব পেয়েছে। কিন্তু তাদেরও কাগজপত্রে কিছু ভুল রয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হব।”
খোঁজ নিয়ে দেখা যাচ্ছে, নতুন এজেন্সি ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে মাসিক ৫ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা জেলাপরিষদকে দেবে। কিন্তু মালিক পক্ষের দাবি, জেলাপরিষদের মেমো নম্বরে টোল আদায় করার জন্য ২০১৪ সালের ১২ নভেম্বর তারিখ দেওয়া হয়েছে। এখানেই মালিক পক্ষের সন্দেহ হয়। মালিক সমিতির প্রশ্ন, টোল আদায় নিয়ে যেখানে উচ্চ আদালতে মামলা চলছে, সেখানে নতুন করে কী করে জেলাপরিষদ টোল আদায়ের অনুমতি একটি নতুন এজেন্সিকে দিয়ে দিল? টোল আদায়কারী এজেন্সির পক্ষে ম্যানেজার কেশব পণ্ডিত বলেন, “সরকারি আইন মেনে টোল আদায় করার অনুমোদন জেলাপরিষদ থেকে পেয়েছি। সেই মতো আমরা টোল আদায় করছি।”
এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গোয়ালা গ্রামের কাছে একটি চালাঘরের নীচে শুল্ক আদায়ের জন্য ৪-৫ জন ওই এজেন্সির কর্মী কাজ করছেন। কোন বাড়ি থেকে কত পরিমাণ টাকা নেওয়া হবে তার একটা তালিকা রাস্তার ধারে টাঙানো আছে। বসচার জেরে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য, মল্লারপুর ফাঁড়ির পুলিশ এলাকায় পৌঁছয়। শালবাদরা মালিক সমিতির সভাপতি শক্তি চক্রবর্তী বলেন, “আমরা বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” অতিরিক্ত জেলাশাষক (জেলাপরিষদ) বিধান রায় অবশ্য বলেন, “মাসড়া-ঠাকুরপুরা রাস্তায় নিয়ম মেনে দরপত্র ডেকে নতুন এজেন্সিকে টোল আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আয়নাল হকের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। সম্প্রতি নতুন টেন্ডার ডাকা হয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর জেলাপরিষদ থেকে ওই এজেন্সিকে চিঠি করা হয়েছে।” তিনি জানান, রাস্তা সংস্কারের জন্য পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নপর্ষদ থেকে টাকা অনুমোদন হয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। তা ছাড়া রাস্তাটি চওড়া করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy