Advertisement
২৪ মে ২০২৪

বিষ্ণুপুর-সাবড়াকোন রাস্তার হালে ক্ষোভ

পিচ উঠে গিয়ে পাথর উঠে যাচ্ছে। খানাখন্দে ভরা সেই রাস্তায় লাফাতে লাফাতে যাচ্ছে গাড়ি। হেঁটে চলতে পথচারীরা অনেক সময় পাথরে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাচ্ছেন। গাড়ি ও মোটরবাইক উল্টে দুর্ঘটনাও ঘটছে। বিষ্ণুপুর-সাবড়াকোন রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ায় তাই ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার বাসিন্দারা।

বিপদের আশঙ্কা পদে পদে। ঢ্যাঙাশোলের কাছে তোলা নিজস্ব চিত্র।

বিপদের আশঙ্কা পদে পদে। ঢ্যাঙাশোলের কাছে তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৫ ০০:৪৩
Share: Save:

পিচ উঠে গিয়ে পাথর উঠে যাচ্ছে। খানাখন্দে ভরা সেই রাস্তায় লাফাতে লাফাতে যাচ্ছে গাড়ি। হেঁটে চলতে পথচারীরা অনেক সময় পাথরে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাচ্ছেন। গাড়ি ও মোটরবাইক উল্টে দুর্ঘটনাও ঘটছে। বিষ্ণুপুর-সাবড়াকোন রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ায় তাই ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার বাসিন্দারা।

আগে বিষ্ণুপুর থেকে বাঁকাদহ হয়ে ২৮ কিলোমিটার ঘুরে সাবড়াকোন পৌঁছতে হতো। বাসিন্দারা জানান, বছর আটেক আগে বিষ্ণুপুরের সঙ্গে তালড্যাংরার সাবড়াকোন ও সিমলাপালের ভূতশহরের দূরত্ব কমানোর উদ্দেশে জেলা পরিষদ এই রাস্তাটি তৈরি করেছিল। এই রাস্তা হওয়ায় ১২ কিলোমিটার দূরত্ব কমেছে। নতুন রাস্তা পেয়ে তখন বাসিন্দারা খুশি হয়েছিলেন। অন্যান্য গাড়ির চলাচল যেমন বাড়ে, তেমনই বাসও চালু হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা খারাপ হয়ে পড়েছে। বিশেষত এই রাস্তা লাগোয়া দালানডাঙা, ঘুঘুমুড়া, ঢ্যাঙাশোল, নোহারি ইত্যাদি গ্রামের বাসিন্দারা খুবই অসন্তুষ্ট। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের কর্তা থেকে জনপ্রতিনিধিরা অনেকেই এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু রাস্তাটি সংস্কারে কেউ কোনও উদ্যোগ দেখাচ্ছেন না। রাস্তা সংস্কারে হেলদোল দেখা যাচ্ছে না জেলা পরিষদেরও। রাস্তার হাল নিয়ে স্থানীয় বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েত সমিতিকে বাসিন্দাদের তরফে জানানো হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়নি। এমনকী কবে সংস্কার করা হবে, তা নিয়ে সুনিশ্চিত আশ্বাসও কোনও তরফে পাওয়া যায়নি বলে তাঁদের দাবি।

ওই রুটে বিষ্ণুপুর থেকে ভূতশহর পর্যন্ত দু’টি মিনিবাস চলাচল করে। চলাচল করে মালবাহি বেশ কিছু লরি-ট্রাকও। এক ট্রাক চালক উমেশ যাদব বলেন, “এই রাস্তায় ছোট-বড় এতো গর্ত যে মাঝে-মাঝেই গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে। রাস্তার দু’পাশে আবার জঙ্গল রয়েছে। এলাকায় মাঝে মধ্যে হাতি চলে আসে। সেই ভয়ে বিগড়ে যাওয়া গাড়ি ফেলে চলে আসতে হয়। কিন্তু রাস্তাটি খুবই সংক্ষিপ্ত। তাই ঘুরপথে অন্য রাস্তা দিয়ে যেতে ইচ্ছে করে না।” তাঁর দাবি, রাস্তাটির গুরুত্ব বুঝে প্রশাসনের এই রাস্তাটি সংস্কারে নামা উচিত। একই দাবি ঢ্যাঙাশোল গ্রামের বাসিন্দা সত্য দে, দালানডাঙ্গা গ্রামের বাঁশিরাম সরেন ও বুদ্ধদেব দাসেরও। তাঁরা জানান, কত লোক নানা কাজে দৈনিক এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু রাস্তা ভেঙে পড়ায় সবাই বেজায় সমস্যায় পড়েছেন। সত্য দে বলেন, “রাস্তার গর্তে মোটরবাইকের চাকা পড়ে বেসামাল হয়ে উলিটে পড়েছিলাম। শরীরের কিছু জায়গা কেটে গিয়েছিল। কপাল জোরে অল্পের উপর দিয়ে আমি রক্ষা পেলেও মোটরবাইকের খুব ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল। রাস্তা খারাপের জন্যই অকারণে আমাকে দুর্ঘটনায় পড়তে হয়েছিল।”

সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শমীক পাল। তিনি বলেন, “ওই রাস্তায় তালড্যাংরা পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত কিছুটা অংশে কাজ শুরু হয়েছে। বিষ্ণুপুরের দিক থেকেও কাজ শুরুর জন্য জেলা পরিষদকে জানিয়েছি।” বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “ওই রাস্তার বিস্তীর্ণ এলাকা বেহাল হয়ে পড়েছে। বিষ্ণুপুরের দিক থেকেও সংস্কারের কাজ শীঘ্রই শুরু করা হবে।’’ যদিও বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষের কটূক্তি, “ওদের তো ১৮ মাসে বছর। মনে হয় সামনের বিধানসভা ভোটের সময় রাস্তাটা সংস্কার করবে। তাতে মানুষের ভোগান্তি বাড়লেও ওরা ভোট-বাক্সে লাভের আশা দেখছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bishnupur-sabrakon road condition
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE