মূক ও বধির এক বধূর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ভরসন্ধ্যায় কয়েক লক্ষ টাকা লুঠ করে পালাল দুই দুষ্কৃতী। সোমবার সন্ধ্যায় বরাবাজারে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে এই লুঠের ঘটনাটি ঘটে। সেই রাতেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
বরাবাজার থানা থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে ব্যবসায়ী বিনোদ কাটারুকার বাড়ি। তিনি এলাকায় মশলা বিক্রি করেন। সোমবার সন্ধ্যায় লুঠপাটের সময় তিনি অবশ্য বাড়িতে ছিলেন না। বিনোদবাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, প্রতিদিনের মতো সোমবার সন্ধ্যায় মশলার টাকা সংগ্রহের জন্য তিনি বাজারে বেরিয়েছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ তিনি হঠাৎ বাড়ি থেকে ফোন পান। তাঁর কথায়, ‘‘আমার স্ত্রী মূক ও বধির হলেও ফোন করে উত্তেজিত ভাবে এমন আওয়াজ করে যে বুঝে যাই বড় কোনও বিপদ হয়েছে। কাজ ফেলে রেখে বাড়িতে ছুটে এসে দেখি ও কাঁদছে। আলমারি হাট করে খোলা। আকারে ইঙ্গিতে স্ত্রী জানায়, বাড়ির পিছন দিক থেকে মুখে কাপড় বাঁধা দুই দুষ্কৃতী এসে ওর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে আলমারি খুলতে বাধ্য করে। আলমারিতে ব্যবসার প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ছিল। দুষ্কৃতীরা সব টাকা লুঠ করে পালিয়েছে।’’ তিনি পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দুষ্কৃতীরা নিয়ে গিয়েছে।
ওই বাড়ির পিছন দিকে রয়েছে অনেকটা ফাঁকা জায়গা। ঝোপঝাড়ও রয়েছে। পড়শি সুমিত সাহা মঙ্গলবার সকালে বলেন, ‘‘আমার পাশেই বিনোদবাবুর বাড়ি। কিন্তু সন্ধ্যায় যে অত বড় ডাকাতি হয়ে গেল, আমরা কিছুই টের পাইনি। বিনোদবাবু ডাকার পরে সব শুনে আমরা তাজ্জ্বব।’’ পুলিশ জানিয়েছে, বিনোদবাবুর বাড়ির পিছনে উঁচু পাঁচিল রয়েছে। সেই পাঁচিল ঘেঁষে একটি গাছ রয়েছে। পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা আগে থেকে বিনোদবাবুর গতিবিধির উপরে নজর রাখছিল। তিনি বাড়িতে না থাকার সুযোগে দুষ্কৃতীরা গাছ বেয়ে বাড়িতে ঢুকে লুঠপাট চালায়।
তবে পুলিশের এক কর্তা বলেন, আলমারিতে আরও কিছু দামি জিনিস ছিল। কিন্তু দুষ্কৃতীরা সে সবে হাত দেয়নি। শুধু টাকা নিয়েই কেন পালাল তাও ভাবাচ্ছে পুলিশকে। সময়ের অভাবে সে সবল নিতে পারেনি, না কি টাকার কারণে তারা এসেছিল, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। সেই সঙ্গে ব্যবসায়ীক কোনও সমস্যা রয়েছে কি না তাও জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
ঘটনার পরেই বাসিন্দাদের মুখে মুখে ঘুরছে একটি প্রশ্ন— থানার কাছেই কী ভাবে একটি বাড়িতে ভরসন্ধ্যায় লুঠপাটের সাহস পেল দুষ্কৃতীরা? তার উপরে এলাকাটি ব্যবসায়িক কেন্দ্র। নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন। পুরুলিয়ার এসপি পুলিশ সুপার রূপেশকুমার বলেন, ‘‘লুঠের খবর পেয়েছি। সব রকম সম্ভাবনাই দেখা হচ্ছে। তবে ওই বধূ মূক ও বধির হওয়ায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা করেও তেমন সুফল মিলছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy