কাজ বন্ধ করছেন গ্রামবাসীরা। —নিজস্ব চিত্র।
রাস্তার কাজ নিম্নমানের হচ্ছে, এই অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে একটি রাস্তা নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দিলেন এলাকার বাসিন্দারা। পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলের আড়শা ব্লকের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সপ্তাহ আগে আড়শার হেঁসলা গ্রাম থেকে হেঁসলা-হাড়নামা গ্রাম অবধি এই রাস্তাটি পিচ মেশানো পাথর ফেলে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ হচ্ছে। তাঁরা প্রতিবাদে কাজ বন্ধ করে দেন। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তা নির্মাণের কাজ প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শুরু হয়েছে। কাজ শেষের সময়সীমা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। কমবেশি দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এই রাস্তার জন্য।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই ঠিকাকর্মীদের রাস্তায় নিম্নমানের কাজের অভিযোগ তোলা হলেও তাঁরা কান দেননি। এরপরেই বৃহস্পতিবার রাস্তায় পিচ মেশানো দেওয়ার কাজ শুরু করতেই রাস্তা থেকে পাথর উঠে যাচ্ছে দেখে স্থানীয় মানুষজন কাজ বন্ধ করে দেন। হেঁসলা উন্নয়ন বিরোধী প্রতিরোধ কমিটির সম্পাদক অশ্বিনী গরাইয়ের অভিযোগ, “শুধু আমরাই নই, অন্য কেউ পরীক্ষা করলেই বুঝতে পারবেন কাজের মান কত নিম্নমানের।” তিনি যখন এই কথা বলছেন তখন কয়েকজন পা ঘষে দেখান কী ভাবে পিচ দেওয়ার পরও রাস্তা থেকে পাথর উঠে যাচ্ছে।” অশ্বিনীবাবুরা দাবি করেন, “আমরা চাই প্রশাসন এই রাস্তায় কাজ কেমন হচ্ছে তা সরজমিনে তদন্ত করুক।” তাঁরা জানান, প্রশাসন যাতে তদন্ত করেন সে জন্য জেলা পরিষদ ও জেলাশাসকের দফতরে অভিযোগ জানানো হয়েছে।
এলাকার বাসিন্দারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন এই খবর পেয়ে শুক্রবার এলাকায় যান জেলা পরিষদে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত নিবার্হী বাস্তুকার ষষ্ঠী গরাই। তিনি বলেন, “প্রচন্ড শীত পড়ে গিয়েছে। এত ঠান্ডায় পিচের কাজ করার ক্ষেত্রে কিছু বাস্তব সমস্যা রয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ করতেই এই ঠান্ডাতেও কর্মীরা কাজ করেছিলেন। তবু এলাকার বাসিন্দাদের রাস্তা নিয়ে যা অভিযোগ রয়েছে তা গুরুত্ব দিয়েই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “রাস্তা নির্মাণকে ঘিরে একটা অভিযোগ উঠেছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতোও জানান, গুরুত্ব দিয়েই অভিযোগ দেখা হচ্ছে।
যে ঠিকাদার সংস্থা এই কাজের দায়িত্বে, তার তরফে ভবতারণ মেহেতা অবশ্য দাবি করেছেন, “কাজের মান নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তা ভিত্তিহীন। আগে আমাদের রাস্তার কাজ শেষ করতে দিতে হবে। রাস্তা নির্মাণের মাঝপথেই অভিযোগ তোলা হলে আমরা কী করব? এই ঠান্ডায় পিচের (বিটুমিন) কাজ করলে কিছু অসুবিধা হয়। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy