শেষ হল লোকসংস্কৃতি উত্সব। এবার উত্সব দশ বছরে পড়ল। ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের সহায়তায় লাভপুরের ‘বীরভূম সংস্কৃতি বাহিনী’-র উদ্যোগে বীরভূম ও লাগোয়া জেলা বর্ধমান, মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন গ্রামের প্রায় শ’তিনেক লোকশিল্পী অনুষ্ঠান করলেন এবার উত্সবে।
তিন দিনের লোক আঙ্গিকের উত্সব এবার ঢাক, ঢোল, সানাই ও কাঁসর ঘণ্টার মতো লোকবাদ্যযন্ত্রের শব্দে ছিল মুখরিত। অনুষ্ঠানে বহুরূপী ভাদু, কবিগান, বাউল থেকে শুরু করে অবলুপ্ত নানা লোকগান করেন শিল্পীরা। বোলান গান, বাঁশ ও কাপড়ের তৈরি ঘোড়া নাচ যার মধ্যে বিশেষ আকর্ষণ ছিল। যেহেতু লাভপুর গ্রামটি লেখক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মভূমি, তাই রবি ও সোমবার সন্ধ্যায় তারাশঙ্করের লেখা কাহিনি অবলম্বনে তিনটি নাটক মঞ্চস্থ হয়। প্রথম দিন আয়োজক সংস্থা ‘নজর’ নাটকটি মঞ্চস্থ করে। পরের দিন গোবরডাঙ্গার শিল্পায়ন নাট্যসংস্থা তারাশঙ্করের ‘বেদেনি’ গল্প অবলম্বনে ‘আদিম’ ও কলকাতার কসবার ‘অর্ঘ্য’ নাট্যসংস্থার ‘নারী ও নাগিনী’ নাটক মঞ্চস্থ করে।
শিল্পায়ন নাট্য সংস্থার নির্দেশক আশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “তারাশঙ্করের গল্প অবলম্বনে নাটকটি একটু অন্যরকম ভাবে করা হয়েছে। তাই ভয় ছিল, লাভপুরের মানুষ নাটকটি নেবেন কিনা - সে নিয়ে। কিন্তু নাটক শেষে দর্শকদের অকুণ্ঠ অভিনন্দন পেয়েছি।” এ বার উত্সবে এসে অনেকের মুখে শোনা গিয়েছে, লোক সংস্কৃতির নানা মাধ্যমে সাম্প্রতিক বিষয় জায়গা করে নেওয়ার বিতর্কও। কেউ কেউ বলেন, “ছৌ, আলকাপ, গম্ভীরা প্রভৃতি শহুরে সভ্যতায় ক্রমশ ‘মেকি’ হয়ে যাচ্ছে।” কসবার অর্ঘ্য নাট্য সংস্থার কর্ণধার মণীশ মিত্র অবশ্য বলেন, “সারা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে আমি নাটক করতে গিয়েছি। অনেক লোক-মেলা দেখেছি। বেশির ভাগ জায়গাতেই মেলার আয়োজকদের আচরণ দেখে মনে হয়েছে, তাঁরা লোক শিল্পীদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন। কিন্তু এখানে স্বর্গীয় অনুভুতি লাভ করলাম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy