Advertisement
E-Paper

লেনদেন বন্ধে সঙ্কটে ১০০ দিন কাজ

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশে জেলার ব্যাঙ্কের লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে আগেই মিড-ডে মিলের উপর কোপ পড়েছিল। এ বার তার প্রভাব পড়ল একশো দিনের কাজ প্রকল্পে। ব্যাঙ্কের লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শ্রমিকেরা তাঁদের প্রাপ্য মজুরির টাকা পাচ্ছেন না। বাড়ছে শ্রমিক অসন্তোষ। বুধবার নলহাটির বাউটিয়া পঞ্চায়েতের চাচকা এবং দত্তকয়া গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক শ্রমিক ক্ষোভে সংশ্লিষ্ট বাউটিয়া কৃষি সমবায় উন্নয়ন সমিতির ম্যানেজারকে ঘেরাও করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৪ ০০:৫৭

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশে জেলার ব্যাঙ্কের লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে আগেই মিড-ডে মিলের উপর কোপ পড়েছিল। এ বার তার প্রভাব পড়ল একশো দিনের কাজ প্রকল্পে। ব্যাঙ্কের লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শ্রমিকেরা তাঁদের প্রাপ্য মজুরির টাকা পাচ্ছেন না। বাড়ছে শ্রমিক অসন্তোষ। বুধবার নলহাটির বাউটিয়া পঞ্চায়েতের চাচকা এবং দত্তকয়া গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক শ্রমিক ক্ষোভে সংশ্লিষ্ট বাউটিয়া কৃষি সমবায় উন্নয়ন সমিতির ম্যানেজারকে ঘেরাও করেন। আড়াই ঘণ্টা ধরে ঘেরাও বিক্ষোভ চলে। বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে শ্রমিকদের বোঝানো হয় এবং পনেরো দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়ার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

এ দিন সকালে বাউটিয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে বিক্ষোভে সামিল চাচকা গ্রামের জসিমুদ্দিন শেখ, আব্দুস সালেক বললেন, “মাস ছ’য়েক আগে চাচকা এবং দত্তকয়া গ্রামের দু’টি পুকুরে ৬ দিন এবং ৭ দিন মোট ১৩ দিনের কাজ হয়েছিল। দীর্ঘদিন যাবত ওই কাজের টাকা না পাওয়ার জন্য শ্রমিকেরা পঞ্চায়েতে খোঁজ নিতে শুরু করেন। সম্প্রতি জানতে পারি পঞ্চায়েত ওই দু’টি কাজে শ্রমিকদের মজুরি বাবদ টাকা দু’টি ধাপে বাউটিয়া কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতিতে যেখানে শ্রমিকদের অ্যাকাউন্ট আছে সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা তা জানার পরে এ দিন সকালে সমবায় সমিতিতে হাজির হই।” তাঁদের ক্ষোভ, “ম্যানেজারকে টাকার কথা বলা হয়। কিন্তু উনি জবাব দেন, ব্যাঙ্কে লেনদেন বন্ধ আছে। সে জন্য এখন টাকা দিতে পারবেন না। পনেরো দিন পরে খোঁজ নিতে বলেছেন।”

কিন্তু শ্রমিকদের অনেকেই দিন আনা, দিন খাওয়া। স্বাভাবিক ভাবে কাজ করেও টাকা না পেলে সমস্যা বাড়বে। শ্রমিকদের অভিযোগ, “রাঘব বোয়ালরা সমবায় ব্যাঙ্কে টাকা নিয়ে দুর্নীতি করেছেন। ওঁদের জন্য আমাদের মতো লোকেদের ভুগতে হচ্ছে।” বাউটিয়া কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতির ম্যানেজার নির্মল মণ্ডল বলেন, “১০০ দিনের কাজের জন্য আমাদের সমবায় সমিতিতে ৬০০ জন শ্রমিকের অ্যাকাউন্ট আছে। তার মধ্যে চাচকা এবং দত্তকয়া সংসদের প্রায় ৩৫০ জন শ্রমিকের অ্যাকাউন্ট আছে। ওই দুই গ্রামে ১০০ দিন প্রকল্পে কাজের জন্য শ্রমিকদের মজুরি বাবদ পঞ্চায়েত থেকে দু’বার দু’টি চেক দেওয়া হয়। একটি চেক পাওয়া যায় ২৩ এপ্রিল, আর একটি চেক পাওয়া যায় ৩ মে।” নির্মলবাবু আরও বলেন, “আমাদের সমবায়ের যাবতীয় অ্যাকাউন্ট জেলা সমবায় ব্যাঙ্কের নলহাটি শাখায় থাকার জন্য ওই দু’টি চেক ওই ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া হয়। কিন্তু টাকা পেতে সময় লাগে। ব্যাঙ্ক বন্ধ হওয়ার দু’দিন আগেও কিছু টাকা তুলে কয়েকজন শ্রমিককে টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু আচমকা লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।”

এ দিকে, শ্রমিকদের এবং অন্যান্য গ্রাহকদের বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে বুঝিয়ে বলা হচ্ছে। তবে সামনে চাষের মরসুম। তাই অনেক চাষি এই ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেন। বর্ষার মরসুমে চাষের আগে ব্যাঙ্ক খুলে যাওয়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন অনেক শ্রমিক। নলহাটি ১ ব্লকের বিডিও তাপস বিশ্বাস বলেন, “শ্রমিকেরা কাজ করেছেন। পঞ্চায়েত প্রধান শ্রমিকদের মজুরি বাবদ টাকা সমবায় সমিতিতে দিয়েও দিয়েছেন। কিন্তু এর পরেও যদি ব্যাঙ্কের পরিস্থিতির জন্য শ্রমিকেরা টাকা পাননি। স্বাভাবিক ভাবেই শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।” বিডিও জানান, এই পরিস্থিতির দিকে নজর আছে। সমবায় সমিতির ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে পরিস্থিতির বিষয়ে জানানো হবে। জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলেন, “জেলা সমবায় ব্যাঙ্কের বিষয়টি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিষয়। আশা করছি সাত দিনের মধ্যে কিছু একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

100 days work nalhati
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy