Advertisement
১৯ মে ২০২৪

শিক্ষকদের শাস্তি, হট্টগোলে স্কুলে ছুটি

দুই শিক্ষককে সাসপেন্ড করার ঘটনাকে ঘিরে চরম বিশৃঙ্খলার সাক্ষী থাকল পুরুলিয়ার মানভূম ভিক্টোরিয়া ইন্সস্টিটিউশন। স্কুল কর্তৃপক্ষের ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষকদের একাংশ এ দিন ক্লাস বয়কট করেন। পড়ুয়ারাও ক্লাস ঘর থেকে বইখাতা নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে।

শিক্ষকদের একাংশ ক্লাস বয়কট করায় পুরুলিয়া মানভূম ভিক্টোরিয়া ইন্সস্টিটিউশনে বুধবার আগেই ছুটি হয়ে গেল।—নিজস্ব চিত্র।

শিক্ষকদের একাংশ ক্লাস বয়কট করায় পুরুলিয়া মানভূম ভিক্টোরিয়া ইন্সস্টিটিউশনে বুধবার আগেই ছুটি হয়ে গেল।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:১১
Share: Save:

দুই শিক্ষককে সাসপেন্ড করার ঘটনাকে ঘিরে চরম বিশৃঙ্খলার সাক্ষী থাকল পুরুলিয়ার মানভূম ভিক্টোরিয়া ইন্সস্টিটিউশন। স্কুল কর্তৃপক্ষের ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষকদের একাংশ এ দিন ক্লাস বয়কট করেন। পড়ুয়ারাও ক্লাস ঘর থেকে বইখাতা নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে প্রথম পিরিয়ডের পরে স্কুলে ছুটি দেওয়া হয়। এই হট্টগোলের মধ্যে স্কুলের এক শিক্ষক ও এক করণিকের দু’টি মোটরবাইক ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। পরে ওই প্রতিবাদী শিক্ষকদের সঙ্গে পড়ুয়াদের একাংশ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (মাধ্যমিক) কাছে গিয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন। পুরো ঘটনায় শহরের এই শতাব্দী প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল।

স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক উত্তম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী একজন শিক্ষক কোন বেসরকারি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন না। কিন্তু এই স্কুলের দুই শিক্ষক এই স্কুলের প্রাতঃবিভাগে একটি প্রাথমিক স্কুলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। ওই স্কুলটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানও বটে। তাই ব্যোমকেশ দাস ও সোমনাথ দত্ত নামের ওই দুই শিক্ষককে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’’ ব্যোমকেশবাবু শিক্ষক পদের প্রভাব ব্যবহার করে একটি পুস্তক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও তা মানতে চাননি ওই দুই শিক্ষক। এবিটিএ-র জেলা কমিটির সহ-সম্পাদক ব্যোমকেশবাবুর দাবি, “স্কুলের ফিনান্স কমিটির সদস্য হিসেবে একটি সিঁড়ি তৈরির খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওই বিলে সই করিনি। তাতেই কর্তৃপক্ষের রোষানলে পড়েছি। সে জন্য অসত্য অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হচ্ছে।” মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির রাজ্য কমিটির সদস্য সোমনাথ দত্ত বলেন, “আমরা স্কুলের প্রাতঃবিভাগের অবৈতনিক ভাবে রয়েছি। অন্তরের টান থেকে নিঃস্বার্থ ভাবে আমরা এই কাজ করি। তা ছাড়া এখন ওই বিধিও নেই।”

এদিন পড়ুয়ারাও ক্লাস করেনি। কিছু পড়ুয়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের চেম্বারের সামনে বারান্দায় বসে পড়ে। পড়ুয়াদের কয়েকজন জানায়, স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষ সঠিক আচরণ করে না বলে প্রতিবাদ জানাতে তারা ক্লাস করেনি। যদিও উত্তমবাবুর দাবি, ওই দুই শিক্ষককে ৯০ দিন সাসপেন্ড করা হয়েছে। এ দিকে ওই দুই শিক্ষকের দাবি, সাসপেন্ড করার আগে তাঁদের নিয়ম অনুযায়ী শো-কজ করা হয়নি। যদিও উত্তমবাবুর দাবি, সব নিয়ম মেনে হয়েছে। নির্মাণ কাজ নিয়ে তোলা অভিযোগও মিথ্যা।

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রাধারানি মুখোপাধ্যায় বলেন, “এ নিয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক হিসেবে আমার করণীয় কিছু নেই। এটা শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির নিজস্ব ব্যাপার। তবে স্কুলের পরিচালন সমিতির কাছে জানতে চাইব কোন পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE